মুন্সিগঞ্জ, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন- ‘খতমে নবুওয়তের আকিদা প্রত্যেক মুমিন, মুসলমানের ঈমানের অপরিহার্য অংশ। এ আকিদার ব্যাপারে সামান্যতম ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বিন্দুমাত্র সন্দেহ পোষণ করারও অবকাশ নেই। করলে তার ঈমান থাকবে না। পূর্বাপর সকল মত-পথ, মাযহাবের ইমামগণ এ ব্যাপারে একমত। ইসলাম এবং আইনের দৃষ্টিতে কাদিয়ানী সম্প্রদায় অমুসলিম এবং কাফের। তাই অনতিবিলম্বে কাদিয়ানীদের সরকারিভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে।’
আজ বুধবার মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার কুচিয়ামোড়া কলেজ মাঠ প্রাঙ্গনে তাহাফ্ফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশ— আয়োজিত মহাসম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের যে আঞ্চলিক মানবাধিকার অফিস বাংলাদেশে করবার পায়তারা করছেন আর এ জন্য যে বয়ান তৈরি করছেন- দেশের মুসলমান আর এদেশের আলেম সমাজকে যদি এতো বোকা ভাবেন, তাহলে আমি মনে করি আপনারা বোকার স্বর্গে বসবাস করছেন।’
এ সময় তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনাদের কাজ দেশের আভ্যন্তরীণ সংস্কার করা। সংস্কার করে দ্রুত জাতীয় নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতা বাংলাদেশের জনগণের কাছে হস্তান্তর করুন।
মামুনুল হক বলেন, ‘কাদিয়ানী সম্প্রদায় অমুসলিম হয়েও ‘আহমদিয়া মুসলিম জামাত’ নাম ধারণ করে বাংলাদেশের সরল-সহজ মুসলমানদের ঈমান ধ্বংস করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এদেশের উলামায়ে কেরাম ও ইসলাম প্রিয় তাওহীদি জনতা বহু আগ থেকেই কাদিয়ানীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণার দাবি জানিয়ে আসছেন। ন্যায় সংগত এ দাবি মেনে বিশ্বের প্রায় ৪২টি দেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদেরকে অমুসলিম ঘোষণা করা হয়েছে। আজ থেকে প্রায় চার দশক পূর্বে ইরাকে অনুষ্ঠিত ওয়াইসি’র সম্মেলন থেকেও সম্মিলিতভাবে কাদিয়ানী সম্প্রদায়কে অমুসলিম ঘোষণা করা হয়েছিল। বাংলাদেশ রাষ্ট্র-ও সেই ঘোষণা পত্রে স্বাক্ষর করেছিল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য বাংলাদেশে গত চার দশকে ক্ষমতার নানা পালাবদল হলেও কোনো সরকারই কাদিয়ানীদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণার বিধান বাস্তবায়ন করেনি। এখনও বাংলাদেশের মতো মুসলিম রাষ্ট্রে তাদের কার্যক্রম প্রকাশ্যে চলছে। যা কখনোই বরদাস্ত করা যায় না।’
এসময় সরকারের কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি ২০২৪ সালের নতুন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে বলতে চাই, অতিসত্বর আহমাদিয়া মুসলিম নামধারী কাদিয়ানী সম্প্রদায়কে অমুসলিম ঘোষণা করুন। তাদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করা না হলে দেশব্যাপী তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’
খতমে নবুওয়াত সংরক্ষণ কমিটি বাংলাদেশের আমির আল্লামা আব্দুল হামিদের সভাপতিত্বে প্রধান মেহমান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক আল্লামা খলিল আহমদ কাসেমী আল- কুরাইশী।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বেফাক মহাসচিব মুফতি মাহফুজুল হক, পীর সাহেব মুফতি জাফর আহমদ, মুফতি নূর হোসেন নূরানী, মাওলানা নাজমুল হাসান, মুফতি মুহিউদ্দিন মাসুম, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপুসহ দেশ বরেণ্য আলেমগন।
সকাল ৯ টা থেকে শুরু হয়ে বিকাল সাড়ে ৪ টা পর্যন্ত চলে অনুষ্ঠান।