২৮শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রবিবার | বিকাল ৩:২৯
এক তরুণীর হাইজেনিক হোমমেড খাবারের উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, জুয়েল রানা (আমার বিক্রমপুর)

ছোটবেলা থেকেই রান্নার প্রতি ছিলো গভীর ভালোবাসা। মায়ের হাতেখড়ি থেকে শুরু করে নানা আইটেম রান্নার প্রতি ধীরে ধীরে আগ্রহী হয়ে উঠেছিলেন শাহনাজ আক্তার। তবে আজ তিনি পরিচিত ত্রিশা ইসলাম নামে। প্রিয়জনদের কাছে যেমন, তেমনি তার গ্রাহকদের কাছেও।

২০২০ সালে করোনাকালে গৃহবন্দি অবস্থায় একঘেয়েমি কাটাতে রান্নার প্রতি আরও মনোযোগী হয়ে ওঠেন শাহনাজ। ধীরে ধীরে রান্নার প্রতি শখ পরিণত হয় ব্যবসায়িক চিন্তায়। তখন তিনি মাধ্যমিক শেষ করে উচ্চ মাধ্যমিকের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অন্য উদ্যোক্তাদের প্রচারণা দেখে তিনিও সিদ্ধান্ত নেন রান্নার দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে অনলাইন ব্যবসা শুরু করবেন। পরিবারের কাছে বিষয়টি শেয়ার করলে তার মা প্রথম থেকেই শতভাগ সমর্থন দেন। সেই অনুপ্রেরণাই তাকে উদ্যোক্তা হওয়ার পথে সাহস যুগিয়েছে।

২০২২ সালে তিনি একটি ফেসবুক পেজের মাধ্যমে হোমমেইড হাইজেনিক ফুড ব্যবসা শুরু করেন। দেশীয় খাবারের মধ্যে ভর্তা, ভাত, মাংস-সবজি, হালিম থেকে শুরু করে কাটলেট, কাবাব, চাইনিজ প্ল্যাটারসহ নানা ফ্রোজেন ফুড আইটেম তিনি প্রতিনিয়ত প্রস্তুত ও সরবরাহ করছেন। বর্তমানে তার পেজে প্রায় চার হাজার ফলোয়ার যুক্ত আছেন এবং ক্রেতাদের কাছ থেকে তিনি পাচ্ছেন ইতিবাচক রিভিউ ও ভালোবাসা।

ত্রিশা ইসলামের ফেসবুক পেজ: Trisha’s food 

ত্রিশা ইসলাম বিশ্বাস করেন—সততা, বিশ্বাসযোগ্যতা এবং হাইজেনিক খাবার সরবরাহই তার ব্যবসার সাফল্যের মূল ভিত্তি। যদিও উদ্যোক্তা হওয়ার পথে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা আসছিলো, তবুও মায়ের অনুপ্রেরণা, নিজস্ব মনোবল ও মানুষের ভালোবাসা তাকে সব বাঁধা জয় করতে সাহায্য করেছে।

আসল নাম শাহনাজ আক্তার হলেও, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যক্তিগত পরিচয় গোপন রাখতে তিনি ‘ত্রিশা ইসলাম’ নাম ব্যবহার করেছিলেন। পরবর্তীতে উদ্যোক্তা হিসেবে যখন মানুষের ভালোবাসা পেতে শুরু করেন, তখন থেকেই এই নামেই সকলের কাছে পরিচিত হয়ে যান। এমনকি পরিবারও এখন তাকে এই নামেই ডাকেন।

নিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নতুন উদ্যেক্তাদের উদ্দেশ্যে ত্রিশা ইসলাম বলেন, সততার সাথে ব্যবসা করে আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভাল আছি। আপনারাও ধৈর্য ও সততার সাথে ব্যবসা পরিচালনা করুন। যত প্রতিবন্ধকতাই আসুন মনোবল শক্ত রাখুন, ইনশাআল্লাহ সফলতা আসবেই।

আজ শাহনাজ আক্তার থেকে হয়ে ওঠা ত্রিশা ইসলাম প্রমাণ করেছেন, সৎ মনোভাব, পরিবারের সমর্থন এবং মানুষের ভালোবাসাই একজন তরুণীকে এগিয়ে নিতে পারে অনেক দূর।