১৪ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
শুক্রবার | রাত ৮:১৫
শিমুলিয়া ফেরিঘাট আপডেট: দিনভর অব্যবস্থাপনায় দুর্ভোগ মানুষের!
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ১০ মে, ২০২১, প্রধান প্রতিবেদক (আমার বিক্রমপুর)

দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার খ্যাত মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে আজ সারাদিন কতৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা ও সমন্বয়হীনতা চোখে পড়েছে। সবমিলিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে ঘরমুখো সাধারণ মানুষের।

ঘাটে যাত্রী সমাগম ঠেকাতে গতকাল রাতে বিজিবি মোতায়েনের সিদ্ধান্ত আসলেও আজ রোববার (৯ মে) সকালে দেখা গেছে বিজিবি দায়িত্ব পালন করছে ঘাট থেকে ১ কিলোমিটার দূরে। এই সুযোগে অন্তত ৩ টি ভিন্ন রাস্তা দিয়ে প্রশাসনের সকল তোড়জোড়ের চোখ ফাকি দিয়ে ঘাটে পৌঁছে কয়েক হাজার মানুষ।

সকাল ৯টা ৩০ মিনিটের দিকে ঘাটে পল্টুনের সাথে ভিড়ে ফেরি শাহপরাণ। এসময় প্রায় ৩ হাজার যাত্রী ফেরিটিতে উঠে। ফেরিটি ছেড়ে যায় ৯টা ৫৫ মিনিটে। ছবি: আমার বিক্রমপুর।
মানুষের চাপে বাধ্য হয়ে সকাল ৭ টা ৪০ মিনিটের দিকে প্রায় পনেরো শো যাত্রী ও ৭টি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ফেরি ফরিদপুর শিমুলিয়া ঘাট ছাড়ে। এরপর সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে ছেড়ে যায় ফেরি শাহপরাণ। ফেরি শাহপরাণ ছেড়ে যাওয়ার পর ঘাট এলাকায় যাত্রীদের চাপ কিছুটা কমে যায়।
ফেরি শাহপরাণ ছেড়ে যাওয়ার পরে যাত্রী চাপ কমে যায় শিমুলিয়া ঘাটে। তবে প্রায় অর্ধঘন্টা পরই ঘাটে আসতে থাকে দক্ষিণবঙ্গের ঘরমুখো মানুষ। ছবি: আমার বিক্রমপুর।
এর প্রায় ২-৩ ঘন্টা পরই পুনরায় ঘাট এলাকায় জড়ো হয় কয়েক হাজার মানুষ। এসময় ঘাট এলাকায় বারবার মাইকিং করে ঘাট ছেড়ে চলে যেতে ও ফেরি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এমন বার্তা প্রচার করা হলেও তাতে যাত্রীরা কর্ণপাত করেনি।
দুপুরে মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসক মনিরুজ্জামান তালুকদার ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) সাফায়েত আহমেদ জানান, দুপুর থেকে ফেরি চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যেসব পণ্যবাহী যানবাহন পারের অপেক্ষায় আছে এসব রাতে পার করা হবে। ঘাটে যারা জড়ো হয়েছেন তাদের ফেরত যেতেও বলা হয়।
ঘাটমুখি মানুষকে আটকাতে কৌশলের অংশ হিসেবে ঘাটের প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে বিজিবির চেকপোষ্টে রোগী সহ অ্যাম্বুলেন্স আটকে রাকে প্রশাসন। ছবি: সংগৃহীত।
পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হয়ে একপর্যায়ে অ্যাম্বুলেন্স ও লাশবাহী যানবাহন আটকে রাখে প্রশাসন। দুপুর আড়াইটার দিকে অল্প সময়ের জন্য বৈরি আবহাওয়া দেখা দিলেও অর্ধ ঘন্টা পরই আবহাওয়া আগের রুপে ফিরে আসে। এরপর আবারও ঘাটে জড়ো হয় যাত্রীরা।
দুপুর ২ টা’র দিকে আবহাওয়া কিছুটা খারাপ হতে শুরু করে। সেসময়ও ঘাটে ফেরির জন্য অপেক্ষমান মানুষ। ছবি: আমার বিক্রমপুর।
সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত শিমুলিয়া ঘাটে ঘরমুখো মানুষের ঢল নামে। এসব যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে দেখা যায়। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত আর কোন ফেরি ছাড়েনি। সন্ধ্যার পরপর ঘাট এলাকায় বিনা বাঁধায় প্রবেশ করতে থাকে পণ্যবাহী বিভিন্ন যানবাহন ও ব্যক্তিগত গাড়ি।
সন্ধ্যা ৬ টা’র দিকে শিমুলিয়া ৩ নং ফেরিঘাটে ফেরির অপেক্ষায় কয়েক হাজার মানুষ। ছবি: আমার বিক্রমপুর।

এদিকে দুপুরে ফেরি চলাচল পুরোপুরি বন্ধ ঘোষণা করলেও রাত পৌনে দশটার দিকে শিমুলিয়া ঘাট থেকে ফেরি কুমিল্লা, ফেরি ক্যামেলিয়া ও ফেরি কুঞ্জলতা পণ্যবাহী ট্রাক, অ্যাম্বুলেন্স, ব্যক্তিগত গাড়ি ও যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যায়। এই ফেরিগুলোতেও পদ্মা পার হয় প্রায় ৫ হাজার ঘরমুখো মানুষ। এর আগে গতকালও দফায় দফায় ফেরি বন্ধ করা হয়। আবার হঠাৎ করে ফেরি চালু করা হয়।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) সাফায়েত আহমেদ ও ফেরি ছাড়ার তথ্য নিশ্চিত করেন।

error: দুঃখিত!