মুন্সিগঞ্জ, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শিহাব আহমেদ (আমার বিক্রমপুর)
৫০ একর জমির উপর নির্মিত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক মানের প্রিমিয়াম ওয়াটার পার্ক মানা বে।
এশিয়ার মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম এই পার্ক নির্মাণে সময় লেগেছে প্রায় দশ বছর।
ঢাকার গুলিস্তান থেকে এই মানা বে ওয়াটার পার্কের দূরত্ব মাত্র ৩৯ কিলোমিটার। সড়কপথে আসতে এক ঘন্টার বেশি সময় লাগার কথা নয়।
মানা অর্থ প্রকৃতির আধ্যাত্মিক শক্তি ও বে অর্থ সৌন্দর্য এবং প্রশান্তি। মানা শব্দটি নিউজিল্যান্ডের পলিনেশিয়ান অঞ্চলের। আর বেই শব্দটি ইংরেজদের মধ্যে ব্যবহার হয়ে আসছে ১৪০০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে।
মানা বে পার্কটির উদ্যোক্তাদের মধ্যে রয়েছেন ওভাইস আকবানি, সাশিন হাসান ও মাসুদ দাউদ আকবানি।
প্রকৃতি ও সংস্কৃতির সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে আন্তর্জাতিক মানের আকর্ষণীয় মানা বে প্রিমিয়াম ওয়াটার পার্ক।
অনন্য স্থাপত্য, নকশা, সঙ্গীত, নৃত্য ও শিল্প দর্শকদেরকে দ্বীপ অঞ্চল পলিনেশিয়ার বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতিতে মোহিত করবে। যা দেবে সমুদ্র বিলাসের এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা।
পার্কটিতে রয়েছে স্পা, ব্লিসফুল বে অ্যান্ড এক্টিভিটি পুল, হাইড্রো গ্রুভ ওয়েট ডিস্কো, একাধিক রেস্তোরা ও ফুড ট্রাক।
এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম এই ওয়াটার পার্কটিতে এই মুহুর্তে ১৭ টি রাইড রয়েছে। যা উপভোগ করতে প্রতিজনকে গুনতে হবে ৬ হাজার টাকা। এর বাইরে পার্কের নিজস্ব রেষ্টুরেন্ট বা ক্যাফে থেকে খাবার নিতে হবে নিজেদের টাকায়।
৩ ফিটের নিচে শিশুদের জন্য পার্কটিতে বিনামুল্যে প্রবেশের সুযোগ রয়েছে। ৪ ফুটের নিচে হলে গুনতে হবে অর্ধেক অর্থাৎ ৩ হাজার টাকা। এক টিকেটে সকাল দশটা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত পার্কটিতে সময় কাটানো যাবে।
ওয়াটার রাইডের পর জামাকাপড় পরিবর্তন বা খানিক বিশ্রামের জন্য নিরিবিলি বসতে চাইলে তাবু দিয়ে বানানো স্ট্যান্ডার্ড কাবানা নামের অস্থায়ী কটেজ। গুনতে হবে ১২ হাজার টাকা। আর টয়লেটসহ ভিআইপি কাবানার জন্য গুনতে হবে ১৫ হাজার। এই মুহুর্তে পার্কটিতে রাতে থাকার সুযোগ নেই। তবে খুব শীঘ্রই কটেজ চালু করা হতে পারে।
ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বাউশিয়াতে অবস্থিত মানা বে পার্কটিতে রয়েছে একসাথে ৯ শতাধিক গাড়ি পার্কিংয়ের সুবিধা।
একসাথে একইসময়ে ৩৫০০ দর্শনার্থী পার্কটিতে সময় কাটাতে পারবে। গেষ্টদের জন্য রাখা হয়েছে ৮০৪টি লকার। খাবারের জন্য রয়েছে ১০টি রেষ্টুরেন্ট ও ৪টি ফুড ট্রাক। রয়েছে ১৮টি কাবান এর মধ্যে ৫টি প্রিমিয়াম। নারীদের জন্য রয়েছে প্রাইভেট স্পা।
গেল শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) দিনব্যাপী ধুমধাম আয়োজনে পার্কটি উদ্বোধন হয়। পলিনেশিয়ান সংস্কৃতির আদলে ওপেনিং প্যারেড, ওয়ারিয়র ড্যান্স, হাক্কা ড্যান্স ও স্টিল ওয়াকিং পারফরম্যান্সে অংশ নেয় দেশ-বিদেশের শিল্পীরা। প্রাণবন্ত এই উৎসব উপভোগ করেন আমন্ত্রিত অতিথি ও আগত দর্শনার্থীরা।
এসিএস টেক্সটাইলের মালিকানায় ব্রিটিশ বিনিয়োগে নির্মিত হয়েছে মানা বেই প্রিমিয়াম ওয়াটার পার্ক। বাস্তবায়নে সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে রাইড সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হোয়াইট ওয়াটার।
পার্কটিতে রয়েছে, ওয়াটার স্লাইড ট্যুর, ওয়েভ পুল ও ফ্লোরাইডার ডাবল। এর পাশাপাশি বাচ্চাদের জন্য রয়েছে ছোট স্লাইড, স্প্ল্যাশ প্যাড ও রেইন ফোট্রেস ফাইভ জোন। পার্কটির সৌন্দর্য্য বাড়াতে বানানো হয়েছে কৃত্রিম নদী।