মুন্সিগঞ্জ, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
২০১০ সালে মুন্সিগঞ্জ শহরে প্রকাশ্যে গুলি করে প্রবাসী মোশারফ হত্যাকাণ্ডের আলোচিত ঘটনার রায় দিয়েছেন আদালত। মামলা সূত্রে জানা গেছে, দেবরের সাথে পরকীয়া সম্পর্কের জেরে গ্রিস প্রবাসী স্বামীকে সন্ত্রাসী ভাড়া করে হত্যা করেন নিহতের স্ত্রী রেশমা বেগম ও সৎ ভাই বেলায়েত।
রায়ে গুলি করে হত্যার পরিকল্পনাকারী ও দায়ী হিসাবে রেশমা-বেলায়েত ও ভাড়াটিয়া খুনী ফারুক মিয়া এবং নাসির উদ্দিন মিঠুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ ১ লাখ টাকা অর্থদন্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। এর আগে রেশমা-বেলায়েত ও ভাড়াটিয়া খুনি ফারুক মিয়া আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক খালেদা ইয়াসমিন ঊর্মি প্রবাসী মোশারফ হত্যাকান্ডের এই রায় ঘোষণা করেন।
দন্ডপ্রাপ্ত রেশমা বেগম মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার পাঁচঘড়িয়া কান্দি এলাকার হোসেন সরকারের মেয়ে ও নিহত প্রবাসী মোশারফের স্ত্রী, ফারুক মিয়া নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মিজমিজি চৌধুরীপাড়ার মৃত মনু মিয়ার ছেলে, নাছির উদ্দিন মিঠু কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার বন্ধনপুর এলাকার বদুরুজ্জামানের ছেলে ও আসামি বেলায়েত হোসেন ঢাকার উত্তর যাত্রাবাড়ী এলাকার মৃত আমির হোসেনের ছেলে। বর্তমানে এরা সবাই পলাতক রয়েছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, নিহত মোশারফ (৪৮) গ্রিসে ব্যবসা করতেন। সেখান থেকে তিনি মাঝেমধ্যে দেশে আসতেন। রেশমা-মোশারফ দম্পতির দুই সন্তান ছিলো। ২০১০ সালের ৯ আগস্ট মোশারফ দেশে আসলে পরদিন ১০ আগস্ট তিনি পাঁচঘড়িয়া কান্দি এলাকায় তার শশুড় বাড়িতে যান। সেখানে যাবতীয় কাজ শেষ করে বিকাল ৬টার দিকে মোশারফ ঢাকার উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য শহরের লিচুতলা এলাকায় অবস্থিত সিমান্ত পরিবহনের বাস কাউন্টারের সামনে আসেন। সেখানে হঠাৎ অজ্ঞাতনামা ৪ ব্যক্তি দুইটি মোটরসাইকেল যোগে এসে মোশারফকে লক্ষ্য করে গুলি করে পালিয়ে যান। পরে তাকে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে মোশারফকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
২০১০ সালের ১১ আগষ্ট মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় মোশারফের মা হাজেরা বেগম বাদি হয়ে পূত্রবধু রেশমা বেগমকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ প্রথমে রেশমা ও তার জবানবন্দি পেয়ে পরকীয়া প্রেমিক মোশারফের সৎ ভাই বেলায়েত হোসেন ও ভাড়াটিয়া খুনি ফারুক মিয়াকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করে। সেখানে ওই ৩ আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
পরবর্তীতে ২৫ জন সাক্ষীর জেরা ও জবানবন্দির ভিত্তিতে আদালত সর্বমোট ৪ আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করে এ রায় দেন।