১৪ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সোমবার | রাত ১:১০
Search
Close this search box.
Search
Close this search box.
৮ বছর পর ঈদ জামাত হচ্ছে রিকাবিবাজারে
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ১২ এপ্রিল, ২০২২, সাইফুল ইসলাম শিথিল (আমার বিক্রমপুর)

দীর্ঘ ৮ বছর পর ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মুন্সিগঞ্জের মিরকাদিম পৌরসভার রিকাবিবাজার ঈদগাহ মাঠে।

সম্প্রতি ঈদগাহ এলাকায় সরজমিনে দেখা যায়, ঈদগাহটি আগের অবস্থায় নেই। মাঠটি সংস্কারের মাধ্যমে ঈদের জামাত আয়োজনের জন্য শেষ ধাপের প্রস্তুতি চলছে। ঈদগাহের ভেতরে বিভিন্ন জায়গায় ময়লা-আবর্জনা সহ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাঠের পুরাতন দরজা ও অন্যান্য মালামাল ব্যবসায়ীরা নিজ দায়িত্বে সরিয়ে নিয়েছেন। ঈদগাহের জায়গাটি পরিষ্কার করে ঈদুল ফিতরের নামাজের উপযোগী করে তোলা হচ্ছে।

জানা যায়, ৮ বছর ধরে রিকাবীবাজার ঈদগাহ মাঠে ঈদের জামাত আদায় বন্ধ থাকলেও সম্প্রতি এই মাঠে ঈদের জামাত আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া হয়।

গত ১৪ মার্চ এ নিয়ে সভা হয় মিরকাদিম পৌরসভা কার্যালয়ে। সভায় মিরকাদিম পৌরসভার মেয়র আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে ৬ মহল্লার পঞ্চায়েত কমিটি থেকে ৫ জনকে ঈদগাহ ময়দান পরিচালনা কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়াও সভায় ২, ৩, ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের কমিটির সদস্য হিসেবে মনোনীত করা হয়।

কমিটিতে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে মুন্সিগঞ্জ ৩ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এছাড়াও সাবেক সংসদ সদস্য এম. ইদ্রিস আলী ও নুর মোহাম্মদ কে কমিটিতে উপদেষ্টা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

সভার অন্য উপদেষ্টারা হলেন, বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মাহবুব হোসেন, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব রহমত উল্লাহ মোহাম্মদ দস্তগীর জাকির, বাংলাদেশ পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক মিজানুর রহমান ইরান, মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মনসুর আহমেদ কালাম, পূর্ব পাড়া এলাকার হাবিবুর রহমান, এনায়েত নগর এলাকার ওয়াহিদুজ্জামান বাসু, উত্তর রামগোপালপুর এলাকার শাহিনুর করিম পল্টু, নুরপুর এলাকার শেখ আব্দুল রাকিব বুলবুল।

উপদেষ্টা কমিটি ছাড়াও কার্যকরী কমিটির সভাপতি হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে মিরকাদিম পৌরসভার মেয়র আব্দুস সালাম কে।

কার্যকরী কমিটির অন্যরা হলেন, সহ সভাপতি পদে পূর্ব পাড়া এলাকার জালাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক পদে টেঙ্গর এলাকার গোলাম মোস্তফা, সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে নুরপুর এলাকার মনিরুজ্জামান শরীফ, কোষাধ্যক্ষ পদে উত্তর রামগোপালপুর এলাকার আক্তার হোসেন মুন্সি। উপদেষ্টা কমিটিতে সর্বমোট ১১ জন ও কার্যকরী কমিটিতে সর্বমোট ২৫ জনকে মনোনীত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিরকাদিম পৌরসভার মেয়র আব্দুস সালাম ‘আমার বিক্রমপুর’ কে বলেন, আগের মেয়রের অবহেলার কারণে দীর্ঘ ৭ বছর যাবৎ এই ঈদগাহে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি। এবছর আমরা উদ্যোগ নিয়েছি এবং একটি কমিটিও করেছি। সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পুর্ন। ঈদগাহের সাজসজ্জা, ডেকোরেটর, সাউন্ড সিষ্টেম সবকিছু ঠিক করা হয়ে গেছে। শুধু ঈদের দিনের জন্য অপেক্ষা করছে সবাই।

তিনি আরও জানান, রিকাবিবাজারের ঐতিহ্যবাহী এই ঈদগাহে প্রতিবছর ৫ হাজার মানুষ একসাথে ঈদের জামাত আদায় করে। আমি মেয়র হওয়ার পর এই ঈদগাহ মাঠের সংস্কার কাজের উদ্যোগ নিয়েছি। এ বছর ঈদুল ফিতরের দিন সকাল ৮ টায় রিকাবিবাজার ঈদগাহ মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

রিকাবিবাজার ঈদগাহ ময়দান পরিচালনা কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান শরীফ জানান, মিরকাদিম পৌরসভার সাবেক মেয়র শহিদুল ইসলাম শাহিন এই ঈদগাহ ময়দান পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্বপালনকালে অজ্ঞাত কারনে এই ঈদগাহে ঈদের জামাত আদায় কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। সে সভাপতি থাকাকালে কমিটির টাকায় কিছু সংস্কার কাজ করা হয়েছিল। কমিটির বাকি দুই লাখ নব্বই হাজার টাকা শাহিনের কাছেই গচ্ছিত রয়েছে।

তিনি জানান, দীর্ঘ বছর পর রিকাবিবাজার ঈদগাহ মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এই খবরে স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মধ্যে আনন্দের জোয়ার বইছে। তারা অপেক্ষা করছেন কখন এখানে তারা ঈদের জামাত আদায় করবেন।

স্থানীয় ব্যবসায়ী নয়ন বলেন, ‘প্রায় ৭-৮ বছর পর এই ঈদগাহে এত মানুষ একসাথে নামাজ পরবেন এটা চিন্তা করেই মনে এক অন্যরকম আনন্দ উচ্ছ্বাস কাজ করছে। আমি অনেক খুশি যে এত বছর পর আবার এই ঈদগাহে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে।’।

নুরপুর এলাকার বাসিন্দা আওলাদ হোসেন বলেন, ‘এই ঈদগাহে আমরা ৮ গ্রামের মানুষ একত্রিত হয়ে সবাই সৌহাদ্যপূর্ণ ভাবে ঈদের নামাজ আদায় করতাম। কি কারণে এতদিন পর্যন্ত এই ঈদগাহ বন্ধ ছিলো এই ব্যাপারে আমরা অবগত নই, কিন্তু এটা জেনে খুবই আনন্দিত যে দীর্ঘ ৮ বছর পর আমরা আবার একত্রে ঈদের নামাজ আদায় করতে পারবো।’

স্থানীয় শামসুল হক বলেন, ঈদ মানেই আনন্দ। আর আমরা এতদিন পর আবার ঈদের নামাজ একত্রে আদায় করতে পারবো, একটা অন্যরকম আনন্দ লাগছে এটাই তো সবথেকে বড় পাওয়া ঈদের জামাত যত বড় হবে তত সওয়াব বেশি, তত আনন্দ লাগে, সমস্ত এলাকা থেকে মানুষ আসে কোলাকুলি করতে পারি, নিজেদের মধ্যে সৌহার্দ্য বাড়ে। আনন্দ লাগে।

স্থানীয় ইসমাইল হোসেন বলেন, এই ঈদগাহ যতদিন বন্ধ ছিলো ততদিন সবার ঈদের নামাজ পড়তে সমস্যা হয়েছে। ঈদের জামাত পড়তে পারেনি, এখন আবার ঈদগাহে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে সবাই আনন্দিত মিরকাদিম পৌরসভার নতুন মেয়র আব্দুস সালাম সংস্কার কাজ করেছেন এখন আমরা ঈদের নামাজ পড়তে পারবো আমরা খুশি এটাইতো অনুভূতি।

error: দুঃখিত!