মুন্সিগঞ্জ, ১৩ নভেম্বর, ২০২০, বিশেষ প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
৩৬তম স্প্যান বসানোর ৬দিনের মাথায় গতকাল পদ্মা সেতুতে বসানো হয়েছে ৩৭তম স্প্যান ‘২-সি’।
সেতুর মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে বৃহস্পতিবার বেলায় ২টা ৪৫ মিনিটে ৯ ও ১০ নং পিয়ারে স্প্যানটি বসানো হয়। এতে দৃশ্যমান হলো সেতুর ৫হাজার ৫শ ৫০মিটার অংশ। অর্থাৎ সাড়ে ৫কিলোমিটারের কিছুটা বেশি অংশ। সেতুতে আর বাকি রইলো মাত্র ৪টি স্প্যান বসানোর কাজ।
পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান আব্দুল কাদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, সকাল ৯টায় স্প্যানটি বসানোর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বেলা ১০টা ৪০মিনিটে কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ভাসমান ক্রেণ তিয়াইন-ই ১৫০মিটার দৈর্ঘ্যের ৩৭তম স্প্যানটি নিয়ে নির্ধারিত পিয়ারে উদ্যেশ্যে রওনা হয়। বেলা ১১টা ২০ মিনিটের দিকে পিয়ারের কাছে পৌছে। এরপর পজিশন অনুযায়ী নোঙর করে ধীরে ধীরে স্প্যানটি পিয়ারের উপর ভূমিকম্প সহনশীল বিয়াড়িং এর উপর বসানো হয়। পুরো কাজ শেষ করতে সময় লাগে আরো সাড়ে ৩ঘন্টার অধিক সময়। বেলা ২টা ৪৫মিনিটে স্প্যানটি বসানো সম্পূর্ন হয়।
প্রকৌশলী সূত্রে জানা গেছে, ৩৭তম স্প্যানটির পর আগামী ১৬ নভেম্বর ১ ও ২নং পিয়ারে ৩৮তম স্প্যান ‘১-এ’, ২৩শে নভেম্বর ১০ ও ১১নং পিয়ারে ৩৯তম স্প্যান ‘২-ডি’, ২ ডিসেম্বর ১১ ও ১২ নং পিয়ারে ৪০তম স্প্যান ‘২-ই’ ও ১০ ডিসেম্বর ১২ ও ১৩ নম্বর পিয়ারে ৪১তম স্প্যান স্প্যান ‘২-এফ’ বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হলো ৩৬টি স্প্যান। এতে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর ৫হাজার ৪শ মিটার অংশ। ৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে সব কটি পিয়ার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে।
মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর আগামী ২০২১ সালেই খুলে দেয়া হবে।