মুন্সিগঞ্জ, ২৯ এপ্রিল ২০২৩, শিহাব আহমেদ (আমার বিক্রমপুর)
ছোটবেলায় বাসার ক্যালেন্ডার ও পরে ইউটিউব দেখে পেনসিল ও রঙ তুলির ব্যবহারে অবিকল মানুষের ছবি আঁকা শিখেছেন মুন্সীগঞ্জ শহরের গোয়ালপাড়া এলাকার শমীকা রানী শীল। বর্তমানে এই আঁকাআঁকিকে বাণিজ্যিক রুপ দিয়েছেন তিনি। ফেসবুকে Black pencil নামে একটি পেজ রয়েছে তার। সেখানে ছবি বিক্রি করে আয়ও হয় ভালো।
শমীকা জানালেন, অনলাইনে সারাদেশ থেকেই ক্রেতাদের সাড়া পাচ্ছেন। পাশাপাশি মুন্সিগঞ্জেও ব্যাপক চাহিদা রয়েছে হাতে আঁকা ছবির। মানুষজন নিজের বিশেষ বিশেষ মুুহুর্তের স্মৃতি ধরে রাখতে ছবি আঁকিয়ে নিচ্ছেন আবার কেউ কেউ প্রিয়জনকে হাতে আঁকা ছবি উপহার হিসেবেও দিচ্ছেন। জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকীতে এর আলাদা কদর রয়েছে।
নিজের চিত্রকর্ম নিয়ে সম্প্রতি কথা হলে চিত্রশিল্পী শমীকা রানী শীল জানান, নারায়ণগঞ্জের মরগান স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকেই ছবি আঁকেন তিনি। মাঝখানে নানা কারণে এই চর্চা হয়নি। তবে ২০১৯ সাল থেকে আবারও ছবি আঁকা শুরু করেন শমীকা। ছোটবেলায় বাসার ক্যালেন্ডার দেখে ছবি আঁকতেন পড়ে এই চর্চার আরও প্রসার ঘটান ইউটিউব দেখে। সাথে সহযোগিতা করেন বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের চারুকলা শিক্ষক সজল সূত্রধর।
শমীকা বলছেন, ‘ছবি আঁকতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। আমার মনে হয় ছবি আঁকার মধ্য দিয়ে নিজের চিন্তাগুলোকে কাগজ আর পেন্সিলের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা যায়। আঁকাআঁকি নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে এমন অনেক কাজ থেকে বিরত থাকি যা করতে গিয়ে সময় নষ্ট হতো বা অযথাই সময় পার হতো। কিন্তু আঁকাআঁকি মাথায় ঢুকে যাওয়াতে সেসময়টা আঁকি। তাতে মনও ভালো থাকে। ভালো চিন্তা করি- খারাপ চিন্তুাগুলো দূরে থাকে। আঁকতে আঁকতে একটা সময় প্রকৃতির সাথে মিশে যাই। প্রকৃতির কাছ থেকে মানবিকতা, মানুষের প্রতি সহমর্মিতা শিখি।’
শমীকা রানী শীল ছবি আঁকার পাশাপাশি বর্তমানে ২০ জন শিক্ষার্থীকে ছবি আঁকা শিখাচ্ছেন। পাশাপাশি তার পেজ Black pencil থেকে ছবি আঁকার অর্ডার নিয়ে থাকেন। A4 সাইজের সাদাকালো একটি ছবি আকতে তিনি ১২০০ টাকা নেন। রঙিন হলে যোগ হয় দুইশো টাকা। এছাড়া রঙিন কাপল ছবির জন্য নেন ২৪০০ টাকা। অনলাইনের মাধ্যমে অর্ডার নিয়ে ছবি ডেলিভারি দিয়ে থাকেন সারাদেশে।
এখন পর্যন্ত শমীকা সবচেয়ে বেশি প্রশংসা পেয়েছেন তার বাবার কাছ থেকে। তাছাড়া বন্ধুবান্ধব বা প্রতিবেশীরাও বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবেই নিয়েছেন। তারাও প্রতিনিয়ত সমর্থন-সাহস জুগিয়ে চলেছেন।