আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ মোগল সম্রাট শাহজাহান তার প্রিয় স্ত্রী মুমতাজ মহলের স্মৃতি অমর করে রাখতে আগ্রায় যমুনা নদীর তীরে অপূর্ব সৌধ তাজমহল নির্মাণ করেছিলেন। সপ্তদশ শতাব্দীর সেই অমর কীর্তি এখন পর্যন্ত প্রেমিক মনে দোলা দেয়।
তবে সবার তো আর শাহজাহানের মতো সামর্থ্য নেই তাই সাধারণ মানুষ তাদের প্রিয়তমকে ঠাই দেন মনের তাজমহলে। তবে এবার আর মনের তাজমহল নয় প্রয়াত বেগমের স্মৃতিকে অমর করে রাখতে তাজমহলের আদলে সমাধি সৌধ নির্মাণ করেছেন ভারতের উত্তর প্রদেশের এক অবসরপ্রাপ্ত পোস্ট মাস্টার।
প্রয়াত স্ত্রীর জন্য তাজমহলের রেপ্লিকা নির্মাণ করতে ৮০ বছর বয়সী ফাইজুল হাসান কাদরি তার এক খণ্ড কৃষি জমি বিক্রি করেছেন। শুধু তাই নয় স্ত্রীর গয়না ও সারাজীবনের সঞ্চয় ব্যয় করেছেন স্ত্রী তাজাম্মুলি বেগমের স্মৃতির জন্য।
১৯৫৩ সালে বিয়ে করেছিলেন এই দুজন। এর পর পাঁচ দশকেরও বেশি সময় একসাথে ঘর করার পর ২০১১ সালে স্ত্রী গলার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। প্রথমে স্ত্রীর লাশ একখণ্ড কৃষি জমিতে সমাহিত করেন তিনি। এর পর সমাধিকে ঘিরে ফাইজুল হাসান তার ভালোবাসাকে মূর্ত করতে মিনি তাজমহল নির্মাণ করতে শুরু করেন।
এর জন্য সারা জীবনের অর্জিত সম্পদ ব্যয় করেছেন তিনি। তবে কাজ শুরু করার তিন বছর পর অর্থাভাবে নির্মাণ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন। এখন পর্যন্ত প্রায় ১১ লাখ রুপি ব্যয় হয়েছে তার এই তাজমহল নির্মাণ করতে। তবে মার্বেল পাথরের দাম অত্যধিক বেশি হওয়ায় কাজ আর এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি।
তাজমহল নির্মাণে তাকে অনেকেই সহযোগিতার প্রস্তাব দিলেও তিনি সবিনয়ে তা প্রত্যাখ্যান করে এসেছেন। কারণ তিনি মনে করেন স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা দেখাতে চাইলে অন্যের সহযোগিতা নেয়া উচিৎ হবে না।
সম্প্রতি অবসরপ্রাপ্ত এই পোস্ট মাস্টারের সাথে দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব। স্থানীয় একজন সরকারি কর্মকর্তা জানান, তাজমহল নির্মাণে কিছু অর্থ সহযোগিতা করতে ফাইজুল হাসানকে লক্ষনৌতে ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকেও অর্থ না নেয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন ফাইজুল হাসান। তথ্যসূত্র:- হিন্দুস্তান টাইমস