সাড়ে সাত মাস পর ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন জোটের নেতৃত্বে থাকা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
সর্বশেষ গত ২২ নভেম্বর জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে খালেদা জিয়া বৈঠক করেছিলেন। ওই বৈঠকের এক মাস পর আগাম নির্বাচনের দাবিতে নতুন করে আন্দোলনে যায় বিএনপি।
নির্বাচনের বর্ষপূর্তি ঘিরে প্রধান দুই দলের কর্মসূচিতে সে সময় নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি। বালির ট্রাক এনে খালেদা জিয়ার কার্যালয় অবরুদ্ধ করা হলে ৫ জানুয়ারি থেকে শুরু হয় টানা অবরোধ-হরতাল।
বিএনপি জোটের ওই কর্মসূচিতে সারা দেশে নাশকতা ও সহিংসতায় প্রায় দেড়শ মানুষের মৃত্যু হয়, পেট্রোল বোমায় দগ্ধ হয় বহু মানুষ।
এই পরিস্থিতিতে ব্যাপক ধরপাকড়ের মধ্যে বিএনপির অধিকাংশ শীর্ষ নেতা গ্রেপ্তার হন, অথবা অত্মগোপনে যান। এরই মধ্যে অজ্ঞাত স্থান থেকে বার্তা পাঠিয়ে ২০ দলীয় জোটের নামে আসতে থাকে হরতাল-অবরোধ অব্যাহত থাকার ঘোষণা।
অবশ্য জোটের অন্য কোনো নেতাকে এ কর্মসূচি নিয়ে সে সময় কথা বলতে দেখা যায়নি। শরিক নেতাদের কেউ কেউ পুলিশের ঘেরাওয়ের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করলেও আনুষ্ঠানিক কোনো বৈঠক সে সময় হয়নি।
তিন মাস সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের পর সিটি নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি জোট ওই কর্মসূচি থেকে সরে আসে। খালেদা বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের পক্ষে মাঠে নামলেও ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তাদের পরাজয় হয়।
বিএনপি ওই নির্বাচনে ব্যাপক জালিয়াতির অভিযোগ আনলেও নতুন করে আর বড় আন্দোলনে যায়নি।
এরই মধ্যে ২০ দলীয় জোটে সন্দেহ, অবিশ্বাস আর ভাঙনের গুঞ্জন নিয়ে সংবাদপত্রে প্রতিবেদন আসতে থাকে। আওয়ামী লীগ নেতাদেরও এ নিয়ে কথা বলতে দেখা যায়। তবে এসব খবরকে ‘কুচক্রী মহলের প্রচারণা’ বলে বিএনপির পক্ষ থেকে উড়িয়ে দেওয়া হয়।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলনে থাকা বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া গত ২৫ জুলাই এক অনুষ্ঠানে বলেন, “আমি বলব না, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। যে নামেই হোক একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আমরা দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চাই।”
ওই বক্তব্যের পর খালেদা তত্ত্বাবধায়কের দাবি থেকে সরে এসেছেন কি না- সে আলোচনা শুরু হলে ২ অগাস্ট তিনি বলেন, “কোনো কোনো পত্রিকা নানাভাবে অপব্যাখ্যা দিয়েছে। আমাদের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি।”
এই পরিস্থিতিতে ‘চিকিৎসার জন্য’ লন্ডনে যাওয়ার আগে জোট নেতাদের সঙ্গে বসছেন বিএনপি নেত্রী। তার ছেলে বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান গত সাত বছর ধরে পরিবার নিয়ে লন্ডনেই আছেন।