মুন্সিগঞ্জ, ১১ জুন, ২০২১, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জ জেলা সদরের হাটবাজারগুলোতে খাসি এবং গরুর মাংস বিক্রিতে ক্রেতাদের সাথে অভিনব প্রতারণা চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গরুর মাংস পানিতে চুবিয়ে এবং মাপে কম দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি বকরির মাংসকে খাসি বলে বিক্রি করেও ভোক্তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। এছাড়াও মাংস বিক্রির সময় মাপঝোপ করার সময়েও কসাইরা এদিকে, ওদিক থেকে তেল চর্বি এটা সেটা দিয়ে ক্রেতাদের ঠকাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেছেন একাধিক ভুক্তভোগী।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মিরকাদিম বাজার, মুন্সিরহাট এবং মুন্সিগঞ্জ শহর বাজারসহ অধিকাংশ স্থানের মাংসের দোকানগুলোতে গরুর মাংসের দোকানগুলোতে মাংস বিক্রির পর ক্রেতাদের অভিনব কৌশলে মাপে কম দেয়ার পাশাপাশি তেল চর্বি দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। খাসির মাংসের দোকানে জবাই করা আস্ত খাসি ঝুঁলিয়ে রাখা আছে। পাশাপাশি বেশীরভাগ বকরি ঝুঁলানো। সেখানে ছাগল বা বকরি ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে বিশেষ কায়দায়। খুব গভীরভাবে না দেখলে সবগুলোকে খাসি বলেই বিশ্বাস করবেন সাধারণ ক্রেতারা।
এদিকে একেক দোকানে বিক্রেতাদের মাপার ডিজিটাল মেশিনে মাংসের ওজনের কিছুটা হেরফের পাওয়া যায়। ফলে মাংস কিনে প্রতিনিয়ত ঠকছেন ক্রেতারা। তারা এক কেজি মাংস কিনে অন্য দোকানে মাপলে দেখছেন ৮৫০ অথবা ৯০০ গ্রাম। বাজার নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের উদাসিনতায় প্রকাশ্যে এমন প্রতারণা চলছে। দেখা যায় প্রতি ১শ’ গ্রাম গরুর মাংসের দাম পড়ে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। ক্রেতাদের কোনভাবে ১শ’ গ্রাম মাংস কমিয়ে দিতে পারলেই বিক্রেতার পকেটে ঢুকছে প্রায় ৬০ টাকা। অন্যদিকে প্রতি ১শ’ গ্রাম খাসির দাম পড়ছে ৯০ টাকা। ক্রেতাদেরকে কোনভাবে ১শ’ গ্রাম মাংস কম দিলে সেখানেও বিক্রেতার পকেটে ঢুকছে ৯০ টাকা। তাছাড়া খাসির মাংস বলে বকরি বা ছাগলের মাংস দিয়ে দিলে ক্রেতারা ঠকছেন প্রতি কেজি মাংসে দেড়শ’ থেকে ২শ’ টাকা। মাপে কম দেয়ার বিষয়টি তো রয়েছেই।
একাধিক মাংস বিক্রেতা জানান, ক্রেতাদের সাথে প্রতারণা করা হচ্ছে না। গরুর আমদানিতে পরিবহন খরচ বৃদ্ধির কারণে প্রতি কেজি গরুতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা দাম বেশী নিতে হচ্ছে।
তবে একাধিক মাংস বিক্রেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বর্তমান বাজারে মানুষ প্রতারিত হচ্ছে খাসির মাংস কিনে। খাসির মাংস বিক্রেতাদের মধ্যে অনেকেই আগেরদিন বিক্রি হওয়া খাসির যৌনাঙ্গ দিনশেষে বাড়ীতে নিয়ে ফ্রিজে রেখে দেন। পরদিন নতুন করে খাসি এবং ছাগল জবাই করার পর খাসির সেই যৌনাঙ্গে রক্ত মিশিয়ে আলপিন দিয়ে ছাগলের গোপনাঙ্গের স্থানে আটকে দেন। তখন তারা ছাগলকে খাসি বলে প্রতি কেজি মাংস বিক্রি করে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেন।