শিহাব আহমেদঃ মুন্সীগঞ্জ জেলা ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা, যুবলীগ নেতা-আবু বকর সিদ্দীক মিথুন আজ ৭সেপ্টেম্বর সোমবার বিকেলে তার বিরুদ্ধে মুন্সীগঞ্জ সদর থানার তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যাবসায়ী অঙ্কন এর যোগসাজশে তারই পিতা সিরাজুল ইসলাম এর গত বছরের সেপ্টেম্বরে দায়ের করা একটি মামলা’য় জামিন পেয়ে জেল খেকে ছাড়া পেয়েছেন।
এর আগে এই মামলা’য় গত ৩০অগাষ্ট তিনি স্বশরীরে আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে তা নাকচ করে দেন মুন্সীগঞ্জ আমলি আদালত-১ এর বিচারক চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বদরুল আলম। ঐদিনই তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। মিথুন গত ৩সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার পুনরায় আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করলে আবারও জামিন নাকচ করেন বিজ্ঞ বিচারক। এরপর আজ ৭সেপ্টেম্বর সোমবার আদালত তার জামিন মন্জুর করেন।
অঙ্কন এর পিতা সিরাজুল ইসলাম এর দাবি, তার ছেলেকে আবু বকর সিদ্দীক মিথুন হত্যা’র চেষ্টা করেছে। অপরদিকে অংকন নিজেই গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় সন্দেহের জেরে আরেক তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ও অঙ্কন এর দীর্ঘদীনের সহচঁর শাহজালাল কে প্রকাশ্যে গুলি করে গুরুতর জখম করে। অঙ্কন ও শাহজালাল উভয়েই জেলা আওয়ামীলীগ এর সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ এর অনুসারী। মূলত মহিউদ্দিন আহমেদ এর যে কোন অনুষ্ঠানে তারা জনবল সরবরাহ করে তার নজরে থাকেন। শাহজালাল কে গুলি করার ঘটনায় শাহজালালের স্ত্রী বাদী হয়ে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় ২০১৫ সালের মে মাসে একটি মামলা দায়ের করলেও ঘটনার প্রায় ৪মাস পেরিয়ে গেলেও পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি অঙ্কন কে। পুলিশের দাবি, ‘অঙ্কন পলাতক’ অথচ ঐ সময় সহকারী পুলিশ সুপার (সদর) এমদাদ হোসাইন বলেছিলেন, ‘অস্ত্রধারী ও কোন সন্ত্রাসীকে ছাড় দেয়া হবে না’
এদিকে, জেলা কারাগার থেকে মিথুনের মুক্তি’র খবর পেয়ে সহস্রাধিক মুন্সীগঞ্জ জেলা’র ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামীলীগের অন্যান্য সহ-অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ফুলের মালা নিয়ে তার জন্য জেলা কারাগারের সামনে অপেক্ষা করতে থাকেন। বিকেল ৫টা’র দিকে জেলগেট থেকে মিথুন বের হলে তার গলায় ফুলের মালা পড়িয়ে দেন নেতাকর্মীরা। এরপর তারা আবু বকর সিদ্দীক মিথুন কে নিয়ে জেলা পরিষদ সড়ক হয়ে সুপারমার্কেট পর্যন্ত শোডাউন দেন। শোডাউনে বিভিন্ন ধরনের উত্তপ্ত স্লোগান দেন নেতাকর্মীরা। শোডাউন শেষে সুপারমার্কেট ‘মুক্তিযোদ্ধা চত্বর’ এর সামনে আগত সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সামনে সংক্ষিপ্ত শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন আবু বকর সিদ্দীক মিথুন।
বক্তব্য শেষে এক প্রশ্নের জবাবে আবু বকর সিদ্দীক মিথুন এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমি বরাবরাই অভিযোগ করে এসেছি-আমার বিরুদ্ধে একটি বিশেষ মহলের দায়ের করা মামলাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এই মামলা যে বানোয়াট তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ আজকের জামিন। অথাৎ আমার বিরুদ্ধে মামলটি পুরোপুরি ‘সাজানো’। আর একজন বিচারক অবশ্যই সত্যের পক্ষেই বলবেন। তবে আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই-আমি পূর্বেও যেমন আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলাম, এখনো আছি।’
মিথুন এর আগে ২০০৭সালে তৎকালীন রাজনৈতিক বিরোধীজোটের দায়ের করা একটি মামলা’য় জেল ঘেটেছেন। তবে ঐ মামলায়ও তিনি আদালত থেকে জামিন পেয়েছিলেন।