মুন্সিগঞ্জ, ৩০ আগস্ট, ২০২২, শেখ রাসেল ফখরুদ্দিন (আমার বিক্রমপুর)
সম্প্রতি পুরানো পত্রিকাদি ঘাটতে গিয়ে একটি সচিত্র প্রতিবেদন চোঁখে পড়ে। বিচিত্রা পত্রিকার নবম বর্ষ ১৩৪২-১৩৪৩ (বাংলা) দ্বিতীয় খন্ডের ৭১১-৭১২ পৃষ্ঠায় “বাঙ্গালী ভূপর্য্যটক” শিরোনামে সচিত্র প্রতিবেদনটি পড়ে অবাক হয়ে যাই।
পাঠকদের সুবিধার্থে প্রতিবেদনটির পুরো অংশ হুবুহু তুলে ধরা হলো-
গত ১৯৩৩ সালে ঢাকা জিলার অন্তর্গত আড়িয়াল গ্রাম নিবাসী শ্রীযুক্ত ক্ষিতীশচন্দ্র বন্দোপাধ্যায় আসামের তিনসুকিয়া হতে একাকী পদব্রজে ভূপর্য্যটনে নির্গত হন। সমগ্র উত্তর ও মধ্যভারত ভ্রমণ করে আকিয়ার আকিয়ার বেসিন পাহাড়ের পথে রেঙ্গুনে উপনিত হন।
রেঙ্গুন হতে সাইকেল যোগে বক্ষদেশ, চিন, মাকুরিয়া, কোরিয়া, জাপান, ফিলিপাইন, দ্বীপপুঞ্জ, বর্নিও ,সেলিবিস্, বলি, জাডা, সুমাত্রা, মালয়, ষ্টেটস্ ও ষ্টেটস্ সেটেলমেন্ট অতিক্রম করে গত ৭ই মার্চ মাদ্রাজে পৌছেন।
তাঁর ভ্রমণ কালের মধ্য তিনি দেশ বিদেশে সব্বশুদ্ধ এগার বার ডাকাতের হাতে নিঃস্ব হন এবং আরণ্যর মধ্য বন্যজন্তু কর্তৃক কয়েকবার আন্ত্রান্ত হয়েছিলেন।
পিকিং হতে বহিমঙ্গোলীয়ার পথে অগ্রসর হওয়ার সময় কালসানের নিকট তিনি একবার চীনা সাম্যবাদী সৈন্যগণ কর্তৃক ধৃত ও ভীষণভাবে নিপীড়িত হন।
বিদেশে ভ্রমনকালে চীন ও জাপানে তিনি পররাষ্ট্র-সচিবগণ কতৃক সম্মার্জিত হয়েছিলেন। ভারতবর্ষেও তিনি পাতিয়ালার মহারাজা প্রভৃতি কর্তৃক নিমন্ত্রিত হয়েছিলেন।
মহাত্মাজী বাবু রাজেন্দ্র প্রসাদ পন্ডিত মালবীয় প্রভৃতি নেতৃবৃন্দ তাঁর সফলতা কাম্য করে তাঁকে পত্র লিখেছিলেন।
মান্দ্রাজে অবস্থান কালে ক্ষিতীশচন্দ্র ইংরাজীতে একখানি ভ্রমণ কাহিনী বই রচিত করেন। তথায় মুদ্রণের অসুবিধা হেতু তিনি কলিকাতায় এসেছেন। উক্ত বইখানি প্রকাশের পর আগামী সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে তিনি জাহাজ যোগে আফ্রিকা যাত্রা শুরু করবেন। এযাবৎ তিনি পদব্রজে দশ হাজার মাইল, সাইকেলে তের হাজার মাইল এবং জাহাজে সাত হাজার মাইল ভ্রমণ করেছেন। আমরা তাঁর ভূপর্য্যটন ব্রতে সফলতা কামনা করি।
মূলত এই ছিলো পত্রিকার প্রতিবেদন। পরবর্তিতে অনেক চেষ্টা করেও বিক্রমপুরের এই গুণী সন্তানের বিস্তারিত জীবনী আর জানতে পারিনি ।