২০শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
বৃহস্পতিবার | দুপুর ২:০১
শ্রীনগর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে মানহীন চিকিৎসা সেবা ও অনিয়ম
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ ৩০ অক্টোবর, ২০১৯, শ্রীনগর প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)

মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার ভাগ্যকুল উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চলছে মানহীন চিকিৎসা সেবা ও ব্যাপক অনিয়ম। কেন্দ্রটির জরাজীর্ণ টিনশেট ভবন। ভবন চত্বরে ময়লা আবর্জনা মূল ফটকে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের টং দোকান। নিয়মিত ডাক্তার না বসা ও জনবল না থাকার কারণে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি এখন বেহাল অবস্থা। ৫টি পদের মধ্যে ৪টি পদই শূন্য। মাত্র একজন উপ- সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার দৈনিক কমপক্ষে ৫০ থেকে ৬০ জন রোগীর চিকিৎসা সেবা দিতে হিমসিম খাচ্ছে।

অন্যদিকে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানীর রিপ্রেজেনটেটিভদের উপস্থিতি অনেকাংশে রোগীর উপস্থিতির চেয়েও বেশী লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়াও উপজেলায় আরো দুইটি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে। হাঁসাড়া উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও শ্রীনগর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ব্যস্ততম ভাগ্যকুল বাজারের পাশে ভাগ্যকুল উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির মূলফটকে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আনাচে কানাচে ঝোঁপ জঙ্গলে ভরে গেছে। স্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রাঙ্গণে যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ও বাজারের ব্যবসায়ীরা তেলের ড্রাম, আসবাবপত্রসহ ইত্যাদি যেখানে সেখানে ফেলে রেখেছেন। এ সময় লক্ষ্য করা যায়, সরকারি প্রতিষ্ঠানটির প্রবেশ দ্বারে বেশ কয়েজন রিপ্রেজেনটেটিভ দাঁড়িয়ে আড্ডা মারছেন কেউ কেউ রোগীর ব্যবস্থাপত্র দেখছেন।

এ সময় চিকিৎসা সেবা নিতে আসা কয়েকজন রোগীর সাথে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সার্বিক সেবার বিষয়ে জানতে চাইলে অনেকেই বলেন, মানহীন চিকিৎসা সেবা প্রদানসহ নীতিমালা অনুযায়ী কার্য দিবসে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ডাক্তার থাকার কথা কিন্তু তারা সকাল ১০ থেকে সাড়ে ১০ টায় আসেন আবার নিদিষ্ট সময়ের আগেই চলে যান। মাসের অনেক কার্য দিবসে ডাক্তার অনুপস্থিত থাকেন।

স্থানীয়রা বলেন, প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র ঠিকমত থাকে না। তাদের দাবি প্রায় সব ধরনের ওষুধই রোগীর বাইরে থেকে কিনতে হয়। রিপ্রেজেনটেটিভরা ব্যবস্থাপত্র দেখাসহ রোগীদের নানা প্রশ্ন করে বেড়ান। এতে মহিলা রোগীরা হয়রানীর স্বীকার হচ্ছে বলে তারা জানান।

ভাগ্যকুল উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের দায়িত্ব প্রাপ্ত উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার ডা. মো. মোশারফ হোসেনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পাঁচটি পদের মধ্যে ৪টি পদই শূন্য। আমার একার পক্ষে সবদিক দেখভাল করা সম্ভব হচ্ছে না। মেডিক্যাল অফিসার ও এমএলএসএস পদগুলো দীর্ঘদিন যাবত শূন্য রয়েছে। রিপ্রেনজেটেটিভদের আসার জন্য সময় নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। তবে তারা এসে দাড়িয়ে থাকেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সৈয়দ রেজাউল ইসলামের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে উর্ধ্বতন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে তিনি বলেন, স্যারের নির্দেশে ভাগ্যকুল উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিক্যাল অফিসারকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। ঐখানে সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার আছেন।

যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ও নোংরা পরিবেশে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির বেহাল অবস্থার সমন্ধে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জনবল না থাকার কারণে এমনটা হয়েছে।

error: দুঃখিত!