মুন্সিগঞ্জ, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২, শ্রীনগর প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর-আলমপুর খালের ষোলঘর কালীবাড়ির পুরাতন লঞ্চঘাট এলাকায় অবৈধ ড্রেজারের ছড়াছড়ি। এলাকার একটি প্রভাবশালী বালু সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যরা এসব ড্রেজার নিয়ন্ত্রণ করছে।
সরকারের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সিন্ডিকেটটি এ অঞ্চলের বির্স্তীণ ফসলী জমি ভরাট কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য করছে।
ছাড়পত্রবিহীন হাউজিং প্রপার্টিজ ব্যবসায়ীদের সাথে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে চুক্তিতে বালু বাণিজ্য করছে সিন্ডিকেটটি। ড্রেজার সিন্ডিকেট চক্রের অন্যতম সদস্য মো. রবিন মিয়া ও আসিফের নেতৃত্বে ষোলঘরের কালীবাড়ি এলাকায় খালে বিশালাকার ৫/৬টি ড্রেজারের সাব-স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ খালে যত্রতত্রভাবে বালুবাহী বাল্কহেড নোঙ্গর করে ঘন্টার পর ঘন্টা এসব ড্রেজারের বালু আনলোড করা হচ্ছে। ফলে খালে নৌ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বাড়ছে দুর্ঘটনার শঙ্কা। প্রভাবশালী ড্রেজার সিন্ডিকেটের কাছে স্থানীয় প্রশাসনও নিরুপায়।
এর আগে উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় বেপরোয়া অবৈধ ড্রেজারের বিষয়ে জোরালোভাবে আলোচনা করতে দেখা গেছে। সংশ্লিষ্ট প্রসাশন মাঝে মধ্যে অভিযান চালিয়ে ড্রেজার উচ্ছেদ করলেও ক’দনি বাদেই এসব ড্রেজার ফের চালু করা হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ খালটির ষোলঘর পুরাতন লঞ্চঘাট কাঠের পুলের পূর্ব ও পশ্চিম দিকে ভাসমান ড্রেজারের ছড়াছড়ি। খালের বিভিন্ন স্থানে যত্রতত্রভাবে বাল্কহেড় রেখে বালু আনলোড করা হচ্ছে। দীর্ঘ পাইপলাইন মাধ্যমে এসব বালু দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে ফসলী জমি ও জলাশয়। অপরদিকে বাল্কহেডের ধাক্কায় খালের বিভিন্ন কালভার্ট ও সেতুর ক্ষতিসাধন হচ্ছে।
ষোলঘর কালীবাড়ি সংলগ্ন বাজারের দোকানীরা জানায়, কিছুদিন আগে বাল্কহেডের ধাক্কায় পুলের কয়েকটি খুঁটি ভেঙ্গে যায়। এতে হাজার হাজার মানুষ পুল পারাপারে দুর্ভোগে পড়েন। পরে জোড়াতালি দিয়ে কোনরকম পুলটি মেরামত করা হয়।
স্থানীয়রা জানায়, ড্রেজারের ইঞ্জিনের বিকট শব্দে খালপাড়ের বাড়িগুলোতে ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া ও রাতে ঘুমের বেঘাত ঘটছে। রবিন মিয়া, আসিফসহ একটি সক্রিয় ড্রেজার সিন্ডিকেট বালু বাণিজ্য করেছে। প্রভাব খাটিয়ে মানুষের বসতবাড়ি ও চলাচলের রাস্তার ওপর দিয়ে ড্রেজারের দীর্ঘ পাইপলাইন টেনে নেওয়ার ফলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।
সচেতন মহল বলছেন, প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ীদের ভয়ে সাধারণ মানুষ কিছু বলতে সাহস পাচ্ছে না। সরকারের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সিন্ডিকেটটি অবাধে কৃষিজমি ও বিভিন্ন জলাশয় ভরাট করে যাচ্ছে। এলাকার বালু সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চুক্তিতে পুষ্পধারাসহ অন্যান্য হাউজিং প্রপার্টিজ ব্যবসায়ীরা অসংখ্য ফসলী জমি ভরাট করে নিচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে ড্রেজার ব্যবসায়ী আসিফের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি।
ষোলঘরের ইয়াসমিন দেলোয়ার জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ও বালু ব্যবসায়ী মো. রবিন মিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে একটি ড্রেজার আমার নিয়ন্ত্রণে চলছে। বাকী ড্রেজারের বিষয়ে আমার জানা নেই।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ষোলঘর ভূমি অফিসের তহশিলদার দিদার মাহমুদ শাহিন মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবু বকর সিদ্দিক জানান, খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।