মুন্সিগঞ্জ, ৩০ এপ্রিল, ২০২২, বিশেষ প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
ঈদকে সামনে রেখে শিমুলিয়াঘাটে সারাদিন পারের অপেক্ষায় থাকা মোটরসাইকেল ও ব্যক্তিগত গাড়ি পার করেছেন জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন দেব।
গতকাল শুক্রবার বেলা ১২ টা থেকে তিনটি ফেরিঘাটে জেলা পুলিশের সদস্যদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। ৩ নম্বর রো রো ফেরি ফেরিঘাট এলাকায় পুলিশ কর্মকর্তাদের সারাদিন উপস্থিতি ছিল। এ ফেরিঘাট দিয়ে বড় ফেরিগুলো নোঙর করে থাকে। তীব্র গরমে ঘাট এলাকায় শতাধিক পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। ঐ সময় ঘাটে প্রায় ৩ শতাধিক প্রাইভেটকার ও হাজারো মোটরসাইকেল পারের অপেক্ষায় ছিল। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানবাহনের চাপ কমে যায়। রাত সাড়ে ৭টায় ঘাটে পারের অপেক্ষায় কোন ব্যক্তিগত গাড়ি ছিলনা।
এদিকে, ঘাটে আসা গাড়িগুলোকে সিরিয়াল মেনে ফেরিতে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। ভোররাত থেকে মোটরসাইকেল ও ব্যক্তিগত গাড়ির আলাদা কোন লাইন ছিলনা। কিন্তু পুলিশ সদস্যরা এসে ঘাটে পৃথক লাইন তৈরি করে। এরপর পারের জন্য ফেরিতে গাড়ি প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। ঘাটে এসব কাজ করার জন্য ঘাট কর্তৃপক্ষের কোন জনবল নেই। তারজন্য ঈদ মৌসুমে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। মাইক হাতে নিয়ে গাড়ি পার করতে ছুটাছুটি করতে দেখা যায় পুলিশ কর্মকর্তাদের।
বিআইডব্লিউটিসি’র শিমুলিয়া ঘাট সূত্রে জানা যায়, সকালে মোটরসাইকেল পার করতে গিয়ে ব্যক্তিগত গাড়ি পার করা যায়নি। ফেরির প্রবেশমুখে অসংখ্য বাইক থাকার কারণে লোড আনলোড করতেও অসুবিধা হয়। তবে দুপুরের পর থেকে মোটরসাইকেল ও ব্যক্তিগত গাড়ি সমানতালে পার হয়। ভোর থেকে ফেরিঘাটে মোটরসাইকেলের বাড়তি চাপ ছিল। দুপুর পর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার মোটরসাইকেল ফেরির মাধ্যমে পার হয়েছে। এ নৌপথে ১০ টি ফেরি চলাচল করে থাকে। শিমুলিয়া, মাঝিকান্দি ও বাংলাবাজার নৌপথে ৮ মাসের বেশি সময় ধরে শুধু ব্যক্তিগত গাড়ি, পিকআপসহ হালকা যানবাহন পারাপার হিয়ে আসছে। পদ্মাসেতুর পিলারে ফেরি ধাক্কার পর এ নৌপথে বাস,ট্রাকশ ভারী যানবাহন পারাপার বন্ধ।
মোটরসাইকেল যাত্রী আওলাদ হোসেন জানান, ঘাটে আসার পর কোন সিরিয়াল না মেনেই মোটরসাইকেল ফেরিঘাটের সামনে গিয়ে জমতে থাকে। কোন লাইন ছিলনা। পুলিশ সদস্যরা এসে আলাদা লাইন করেছে। তারপর মাইক দিয়ে ১০-১২ টি করে ডেকে ডেকে ফেরিতে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়।
ঢাকার উত্তরা থেকে আসা মোটরসাইকেল চালক মো. জালাল উদ্দিন জানান, পুলিশের এসপি এসে ঘাটে যানবাহ পারাপারে যে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছিল সেটি ঠিক করেছেন। যারজন্য ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষার যে চিত্র সেটি পাল্টে গিয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন জানান, ঈদে ঘরমুখো মানুষের নির্বিঘ্ন ঈদযাত্রা নিশ্চিত করতে পুলিশ দায়িত্ব পালন করেছে। সিরিয়াল মেনে গাড়িগুলোকে ফেরির মাধ্যমে দ্রুত সময়ের মধ্যে পার করা হয়। বিকালের পর থেকে ঘাট এলাকায় ব্যক্তিগত গাড়িকে আর অপেক্ষায় থাকতে হয়নি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন দেব জানান, ভোগান্তি ছাড়া যাত্রীদের ঈদযাত্রা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ঘাট এলাকায় অবস্থান নেয় পুলিশ সদস্যরা। বিকালে ঘাটে যানবাহনের চাপ বাড়ার আশংকা ছিল। কিন্তু পুলিশ আটকে থাকা গাড়ির জটলা দুপুরের মধ্যে সিরিয়াল মেনে পার করে দেয়।