৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
বুধবার | সন্ধ্যা ৭:৫১
‘শিক্ষার প্রতীক ব্ল্যাকবোর্ড ভাই, ২নং ওয়ার্ডে দর্পণ ভাইয়ের জন্য ভোট চাই’
খবরটি শেয়ার করুন:

পৌর প্রতিনিধি: তফসিল ঘোষিত মুন্সিগঞ্জের ২ পৌরসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহনের বাকি ৬দিন। শেষমুহুর্তে প্রার্থী-কর্তা-গণমাধ্যম কর্মী সকলের দৃষ্টি এক বিন্দুতে।

মুন্সিগঞ্জ শহর পৌরসভায় ওয়ার্ড ৯টি। ২নং ওয়ার্ডে প্রার্থী ৭জন। ভোটারের সংখ্যা ৬হাজারেরও বেশি। এই ওয়ার্ডে শিক্ষার হার অন্যান্য ওয়ার্ডের তুলনায় ভালো। তবে বাল্যবিবাহ ও মাদকের প্রভাব অাছে এখানে।

২নং ওয়ার্ডে ফিরোজ অাহম্মেদ লড়ছেন ব্রীজ প্রতীক নিয়ে, অাব্দুল মান্নান দর্পণ লড়ছেন ব্ল্যাকবোর্ড প্রতীক নিয়ে, এ এস এম মশিউর রহমান ববি লড়ছেন পাঞ্জাবী প্রতীক নিয়ে, নাসির উদ্দিন লড়ছেন পানির বোতল প্রতীক নিয়ে, কালূ মিয়া লড়ছেন টেবিল ল্যাম্প প্রতীক নিয়ে, মোহাম্মদ অালী লড়ছেন উটপাখি প্রতীক নিয়ে।

এখানে প্রচারণায় প্রার্থীদের অাকর্ষন করতে কৌশলী সবাই। তবে ভোটাররাও কম কৌশলী নয়!

‘বুক ফাটে তো মুখ ফোটে না’ প্রবাদ বাক্যের সত্যতা পাওয়া গেল এখানেও। প্রথম তথ্য নেয়া গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে অার দ্বিতীয়বার ছদ্মবেশে।

গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে পাওয়া তথ্যের সংক্ষেপ হচ্ছে, ‘ অামার ভোট অামি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব’

অার ছদ্মবেশে পাওয়া তথ্য হচ্ছে, এই ওয়ার্ডের খালইষ্টের প্রায় ১০০জন, বাগমামুদালী’র প্রায় ৬০জন, জগধাত্রীপাড়ার ৪০-৫০জন ব্যাক্তি বলেছেন, যাদের ঘড়ে অাবার গড় হিসেবে ২-৩জন করে ভোটার অাছেন। তারা ভোট দিবেন ব্ল্যাকবোর্ড মার্কায়। অার এই পছন্দের পিছনে তাদের যুক্তিও পরিষ্কার। দর্পণ যিনি ব্ল্যাকবোর্ড মার্কায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনি ব্যাক্তি হিসেবেই স্বনামধন্য। সামাজিক উন্নয়নে তার ভূৃমিকা, শিক্ষাক্ষেত্রে তার অবদান, মাদক নির্মুলে তার কৃতিত্ব। সব মিলিয়ে এখানে ভোটারদের পছন্দের প্রার্থী তিনিই।

এখানে অন্য প্রার্থীদের সাথে তার তফাৎটা হচ্ছে, অন্যরা বলছেন নির্বাচিত হলে করবো, অার তিনি নির্বাচনে না গিয়েও পূর্বেই এসব করে দেখিয়েছেন। সামাজিক উন্নয়নে স্ব-উদ্যোগে জড়িয়েছেন নিজেকে।

হলফনামায় উল্লেখিত তথ্যে দেখা যায়, খালইষ্টের H- ২৪৬ এ মো: অাব্দুল মান্নান এর স্থায়ী অাবাস। তার পিতার নাম মৃত অাব্দুল মালেক ও মাতার নাম মৃত মনোয়ারা বেগম। শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে তিনি এসএসসি পাশ উল্লেখ করেছেন। তার বিরুদ্ধে বর্তমান ও অতীতে কোন ফৌজদারী মামলা নেই। পেশা হিসেবে তিনি নিজের মালিকানাধীন পুনম এন্টারপ্রাইজ নামক একটি ঠিকাদারী ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করেছেন। তার বাৎসরিক অায় তিনি উল্লেখ করেছেন-বাড়িভাড়া বাবদ বছরে ২লক্ষ ৪০হাজার টাকা ও ব্যবসা থেকে ২লক্ষ টাকা। সম্পদের মধ্যে তার নিজের নগদ ২লক্ষ টাকা, ব্যাংকে জমা অারও ৫লক্ষ টাকা এবং তার স্ত্রী’র ৫ভরি স্বর্ণ রয়েছে। এছাড়া ১টি রঙ্গিন টিভি, ১টি ফ্রিজ, ১টি অাই.পি.এস, খাট-৩টি, ওয়্যারড্রব-২টি, ড্রেসিং টেবিল-২টি, সোকেস-১টি, ১টি সোফা সেট ও ১টি ডাইনিং টেবিল রয়েছে। তার ৪.৫০ শতাংশ অকৃষি জমি ও ৪.৫০শতাংশ অাবাসিক জমি রয়েছে। কোন অার্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে কোনরকমের ঋণের সুবিধা তিনি নেননি।

খালইষ্টের বাসিন্দা সরকারী চাকুরীজীবী সোহানা বেগম বলেন, ‘অামার বাসার পাশে মোড়টিতে একটি সোলার প্যানেলের জন্য দীর্ঘদিন যাবৎ এখানকার নির্বাচিত কাউন্সিলরের কাছে অনুরোধ করেও কোন কাজ হয়নি। পরে দর্পণ ভাই শুনে তিনি নিজে উদ্যোগী হয়ে সোলার প্যানেলের ব্যাবস্থা করে দিয়েছেন।

জগধাত্রীপাড়ার এভিজেএম বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত এক কিশোরী বলেন, অামার এক সহপাঠী কে তার পরিবার জোর করে বিয়ে দিচ্ছিলো। সরকারী বিধি অনুযায়ী সে অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিলো। মেয়েটি নিজেও বিয়ের বিরুদ্ধে ছিলো। অামরা শত চেষ্টা করেও বিয়ে থামাতে পারিনি। পরে দর্পণ চাচ্চু কে বিষয়টি জানালে তিনি ইউএনও ম্যাডামকে নিয়ে বিয়ে বন্ধ করে মেয়েটির লেখাপড়া চালিয়ে যেতে সহায়তা করেন। এবছর মেয়েটি এসএসসি পরীক্ষা দিবে।

বাগমামুদালী’র বাসিন্দা স্বপ্না রানী দাস বলেন, অামার মেয়ের বিয়ের টাকা জোগাড় করতে অামি মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুড়েছি। এক পর্যায়ে এভাবেই পরিচয় হয় দর্পণ ভাইয়ের সাথে। উনি সব শুনে নিজে নগদ টাকা সহায়তা করেন। এবং অামাকে পৌরসভায়, উপজেলায়, মহিলা অধিদপ্তর, সমাজকল্যাণ অধিদপ্তর সহ অারও অনেক বিত্তবান ব্যাক্তি ও স্থানীয় সাংসদের কাছে নিয়ে যান। অামার মেয়ের বিয়ের খরচের অর্ধেকেরও বেশি টাকা উঠে এভাবে। দর্পণ ভাই নির্বাচনে নেমেছেন শোনার পর থেকেই অামি নিজে উনার জন্য ভোট চাইতে নেমেছি।

বাগমামুদালীপাড়ার একজন বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যাক্তি নাম প্রকাশ না করে বলেন, ২নং ওয়ার্ডের পূ্র্বের কাউন্সিলরদের কর্মকান্ড সন্তোষজনক নয়। এর অাগে যারা নির্বাচিত হয়েছিলেন তাদের গোচরেই বিভিন্ন অনৈতিক কার্যকলাপ ঘটেছে। অামাদের পাড়ার একটি জরাজীর্ণ পুরোতন বিল্ডিং দখল করে নিজেরা ভোগ করার ঘটনাও ঘটেছে। পরে পৌরসভা তাদের চিঠি দিয়েও প্রত্যুত্তর পায়নি। তাই এ মহল্লার সকলেই চায় প্রার্থী হিসেবে সৎ, যোগ্য ও নতুন কোন ব্যাক্তিকে ভোট দিতে। তবে অামার অনুরোধ তারা যেন দর্পণ ভাইকে ‘ব্ল্যাকবোর্ড’ মার্কায় ভোট টা দেন। তিনি পরীক্ষিত ব্যাক্তি।

জানতে চাইলে অাব্দুল মান্নান দর্পণ ‘অামার বিক্রমপুর’ কে বলেন, ‘জনগণ সিদ্ধান্ত নিয়ে অামাকে নির্বাচনে দাড় করিয়েছে। তাদের সেবায় অামি অাগেও নিজেকে উজার করে দিয়েছি অার নির্বাচিত হলেও তাদের সেবায় সর্বোচ্চ ত্যাগ করতে প্রস্তুত অাছি। ওয়ার্ডবাসীর প্রতি অামার একটাই অনুরোধ তারা যেন ভোট গ্রহনের দিন অামাকে ‘ব্ল্যাকবোর্ড’ মার্কায় ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে।

error: দুঃখিত!