মুন্সিগঞ্জ, ২১ জানুয়ারি, ২০২১, বিশেষ প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
২০২০ সালের ২৯ জুন দিনটি ছিলো মুন্সিগঞ্জবাসীর জন্য শোকাবহ একটি দিন। এদিন মুন্সিগঞ্জ সদরের মিরকাদিম, রামপাল ও পঞ্চসারের আকাশ ভারী হয়ে উঠেছিলো শোকার্ত মানুষের কান্নায়।
সেদিন সকালে বুড়িগঙ্গা নদীতে মুন্সিগঞ্জ থেকে ঢাকার সদরঘাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা মর্নিং বার্ড লঞ্চকে এমভি ময়ূর-২ ধাক্কা দিলে লঞ্চটি আড়াআড়ি হয়ে যায়। এরপর লঞ্চটির ওপর ময়ূর-২ উঠে যায়। এতে মর্নিং বার্ডের ৩৪ যাত্রী ডুবে মারা যান।
এ ঘটনায় সদরঘাট নৌ থানা-পুলিশের এসআই মো. শামসুল আলম বাদী হয়ে ময়ূর-২ লঞ্চের মালিকসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা করেন।
লঞ্চ ডুবে ৩৪ জনের মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলার তদন্ত শেষ হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যেই ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হবে।
ঢাকা জেলা নৌ পুলিশ প্রধান পুলিশ সুপার (এসপি) খন্দকার ফরিদুল ইসলাম এই তথ্য জানান।
লঞ্চ দুর্ঘটনাটির জন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার, মামলার প্রয়োজনীয় আলামত জব্দ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের জবানবন্দিও নেওয়া হয়েছে।
সেদিনের ঘটনায় সদরঘাট নৌ থানা-পুলিশের এসআই মো. শামসুল আলম বাদী হয়ে ময়ূর-২ লঞ্চের মালিকসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা করেন।
পরে ময়ূর-২-এর মালিক মোসাদ্দেক হানিফসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করে সদরঘাট নৌ থানার পুলিশ। তাঁদের পাঁচজন জামিনে রয়েছেন। এই পাঁচজন হলেন মোসাদ্দেক হানিফ, লঞ্চটির কর্মচারী দেলোয়ার হোসেন, আবু সাঈদ, সেলিম হোসেন ও আবদুস সালাম। কারাগারে আছেন, লঞ্চের ইঞ্জিনচালক শিপন হাওলাদার ও শাকিল হোসেন, লঞ্চের মাস্টার জাকির হোসেন ও আবুল বাশার মোল্লা, সুকানি নাসির মৃধা এবং কর্মচারী মো. হৃদয়।
নৌ থানার পুলিশ এক প্রতিবেদনে আদালতকে জানায়, মাস্টারের পরিবর্তে ময়ূর-২ লঞ্চটি চালাচ্ছিলেন সুকানি নাসির উদ্দিন মৃধা। বেপরোয়াভাবে লঞ্চ চালিয়ে ছোট আকৃতির লঞ্চ মর্নিং বার্ডকে ধাক্কা দিয়ে তিনি সেটি ডুবিয়ে দেন। মাস্টার আবুল বাশারের নির্দেশনায় লঞ্চ চালাচ্ছিলেন নাসির। বাশারসহ লঞ্চের অন্য কর্মচারীরা এ সময় দায়িত্বে অবহেলা করেন।