মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের নতুন ভবন উদ্বোধন করা হলে ২৫০ শয্যায় উন্নীত হবে হাসপাতালটি। ১২ বছর আগে ৫০ শয্যার এ হাসপাতালটি ১০০ শয্যায় উন্নীত হলেও জনবল সেই ৫০ শয্যারই রয়ে গেছে। তাই নতুন ভবনের জন্য কোনো জনবল না থাকায় সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শহরের মানিকপুর এলাকার ১০০ শয্যার মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে সামান্য সেবা দেওয়া হচ্ছে রোগীদের। মাত্র ২০-২২ জন চিকিৎসক রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এমনকি জেলার সবচেয়ে বড় এ হাসপাতালে নেই কোনো নিরাপত্তা রক্ষী। তাই হাসপাতালের রোগী ও নির্মাণ ভবনের যন্ত্রাংশের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে প্রায় ৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে ভবনটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়। ২০১৬ সালের জুলাই মাসে হস্তান্তরের কথা থাকলেও তা করা হয়নি। পরে গত বছরের জানুয়ারি মাসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে এটি হস্তান্তর করার কথা থাকলে তাও করা হয়নি।
মুন্সিগঞ্জের গণপূর্ত অফিস সূত্র জানায়, লিথুরিয়াস নামে একটি গ্যাস যা তুরস্ক থেকে আমদানি করতে হয়। এ গ্যাসের কাজের জন্যই ভবনটির উদ্বোধন বার বার পেছানো হয়েছে। গ্যাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে, কাজ শেষ হতে দুই মাস লাগতে পারে।
হাসপাতালের বিভিন্ন রোগী ও স্বজনরা বাংলানিউজকে বলেন, অতিরিক্ত চাপে প্রায় সময়ই রোগীদের মেঝেতে বিছানা করে থাকতে হয়। এছাড়া প্রয়োজনীয় সময় দিতে পারেন না চিকিৎসকরা। চিকিৎসক সংকটের কারণে চেম্বারে রোগী রেখেই ভিজিটে চলে যেতে হয় চিকিৎসককে। জনবল না থাকায় বেশিরভাগ রোগীকেই ঢাকায় পাঠানো হয়। ফলে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় অনেক রোগীর। নতুন ভবনটি চালু করে জনবল বাড়িয়ে চিকিৎসা সেবা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন বলে জানান তারা।
সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, পুরাতন ভবনে ১০০ শয্যা হলেও আসলে ৫০ শয্যার জনবল নিয়েই কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে। নাক, কান, গলা, মেডিসিন ও চোখসহ চারটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে আমাদের কনসালটেন্ট নেই অনেকদিন ধরেই। বিভিন্ন উপজেলা কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসক এনে রোগীদের সেবা দেওয়া হচ্ছে। গ্যাসের কাজসহ আইসিইউ ও সিসিইউ এর কাজ চলমান। এ সব কাজ শেষ হলেই জুন মাস নাগাদ ভবন উদ্বোধন করা হবে। নতুন ভবন উদ্বোধন হলেও এর জনবল নিয়োগের ব্যাপারে আমরা এখনও কিছুই জানি না। এসব সমস্যাগুলো একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এই হাসপাতালে নাক, কান, গলা, মেডিসিন ও চোখের সিনিয়র কনসালটেন্ট ও মেডিসিনের সিনিয়র কনসালটেন্ট বিভাগে নেই কেউ। একজন কার্ডিওলজিস্ট গজারিয়া উপজেলা থেকে এখানে এসে সেবা দিচ্ছেন।