মুন্সিগঞ্জ, ৬ জানুয়ারি ২০২৪, শিহাব আহমেদ (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জ ২ আসনে জয়ের পথে এগিয়ে আছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি। টংগিবাড়ী ও লৌহজং উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনটি থেকে এবার সংসদ সদস্য প্রার্থী হয়েছিলেন ৯ জন। তবে ভোটের মাঠে প্রচার-প্রচারণায় মূল প্রতিদ্বন্দীতায় রয়েছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সোহানা তাহমিনা।
কাল রোববার ১৩০টি ভোটকেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিতে পারবেন ভোটাররা।
ভোটের মাঠে আসনটিতে সোহানা তাহমিনা তার সর্বোচ্চ চেষ্টাই করেছেন। জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় তার সাথে স্থানীয় কিছু আওয়ামী লীগ নেতাকেও দেখা গেছে। তিনি গেল কয়েক বছর ধরে এই আসনটিতে দলীয় প্রার্থী হতে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন।
লৌহজং ও টংগিবাড়ী উপজেলার ২৩টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ২ আসনে ভোটারের সংখ্যা ৩ লাখ ৫২ হাজার ৪৩৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৮২ হাজার ৫১৪ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ৬৯ হাজার ৯১৯ জন। লৌহজং উপজেলায় ভোটার ১ লাখ ৬৪ হাজার ৩২৫ জন ও টংগিবাড়ী উপজেলায় ১ লাখ ৮৮ হাজার ১০৮ জন। এখানে ১৩০টি ভোটকেন্দ্রের ৭৮৪টি ভোটকক্ষে ব্যালটপেপার পদ্ধতিতে এবারের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
২০০৮ সালের প্রতিদ্বন্দীতাপূর্ণ নির্বাচনে বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী মিজানুর রহমান সিনহাকে হারিয়ে মুন্সিগঞ্জ ২ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি। এরপর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালেও শক্ত কোন প্রতীদ্বন্দী ছাড়াই আওয়ামী লীগের টিকিট পেয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হন এমিলি। টানা ৩ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকায় এলাকায় বাড়তি জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পেরেছেন এমিলি।
তাছাড়া বিএনপি বা নিজ দল থেকে শক্ত কোন প্রতিদ্বন্দীর মোকাবিলা করতে হয়নি এমিলিকে।
সবশেষ ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকে এলাকায় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ভালো অবস্থানে রয়েছেন বলে মনে হলেও শেষ পর্যন্ত এমিলিকেই বেছে নেয় আওয়ামী লীগ। ২০২০ সালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মাহবুবে আলম মারা গেলে অনেকটা নির্ভার হয়ে যান এমিলি। এলাকায় তার প্রতিদ্বন্দী একেবারেই শূণ্য হয়ে পড়ে। বর্তমানেও নিজ দল, বিএনপি বা অনান্য দল থেকে শক্ত প্রতিদ্বন্দী নেই এমিলির।
এমিলি প্রথম ১৯৯৬ সালে সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য মনোনীত হয়েছিলেন। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃতীয়বারের মত আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে বিএনপির প্রার্থী মিজানুর রহমান সিনহার সাথে ৭০.৩৯% শতাংশ বেশি ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি। ২০০৮ সালে মোট ভোটের ৫৩ শতাংশ ভোট পেয়ে বিএনপির প্রার্থী মিজানুর রহমান সিনহাকে হারিয়ে আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এমিলি। ২০১৪ সালে বিএনপি ভোট বর্জন করলে স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহবুব উদ্দিন আহমেদকে হারিয়ে প্রায় ৯৪ শতাংশ ভোট পেয়ে আওয়ামী লীগ থেকে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি।
এর আগে ১৯৯১, ১৯৯৬ ফেব্রুয়ারি (ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন), ১৯৯৬ জুন (সপ্তম) জাতীয় সংসদ নির্বাচন) ও ২০০১ সালে আসনটি বিএনপির দখলে ছিলো।