মুন্সিগঞ্জ, ৫ এপ্রিল, ২০২২, সিরাজদিখান প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে হাসপাতাল চত্ত্বরে জোর করে গাড়ি পার্কিং করে ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় প্রভাবশালী বেশ কয়েকজন গাড়ীর মালিকের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় ও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ নিয়মিত হাসপাতাল চত্ত্বরে গাড়ি পার্কিং রেখে ভাড়া দেওয়া হচ্ছে মর্মে অভিযোগ হাসপাতাল সংশ্লিষ্টদের। এতে করে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স সেবা ব্যহত হওয়ার পাশাপাশি প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষসহ সেবা নিতে আসা রোগীরাও।
হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্তৃক হাসপাতাল চত্ত্বরে ব্যক্তি মালিকানাধীন গাড়ি পার্কিংয়ে নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও গাড়ীর মালিকরা তা মানছেন না।
এমনকি খোদ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা একাধিকবার গাড়ির মালিকদের নিষেধ করেও পার্কিং ঠেকাতে পারেন নি। গাড়ির মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ার কারণে প্রভাব খাটিয়ে অনেকটা জোর করেই হাসপাতাল চত্ত্বরে তাদের গাড়ি পার্কিং রেখে নিয়মিত ভাড়ায় দিচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্ত্বরে সর্বমোট ১১টি গাড়ি পার্কিং রাখা হয়। এর মধ্যে গাড়ির মালিক ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির বহিস্কৃত সাবেক সহ সম্পাদক রনি চৌধুরীর নোহা ১ টি, আবু তাহেরের নোহা ১ টি, দেলোয়ারের মারসিটিস ১ টি, আফজাল ২ টি, নূর নবীর ১ টি, সোহেল ১ টি, সিরাজ ১ টি ও ওয়াহিদের ১ টি গাড়ি নিয়মিত পার্কিং রাখা হচ্ছে। এদিকে ব্যক্তি মালিকানাধীন গাড়ি সমূহ হাসপাতাল চত্ত্বরে পার্কিং রাখার নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরও কোন সুরাহা না হওয়ায় অনেকটাই নির্বিকার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে বেশ কয়েকজন গাড়ির মালিকের সাথে যোগাযোগ করে জোরপূর্বক গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যপারে জানতে চাইলে তারা বিভিন্ন ভাবে কথা এড়িয়ে গেলেও বিসমিল্লাহ রেন্ট-এ-কারের মালিক আবজাল হোসেন দেওয়ান বলেন, আগে গাড়ী ভিতরে রাখতাম কিন্তু এখনতো রাখি না। আমি ছাড়াওতো অনেকে ভিতরে গাড়ি রাখে তাদেরকে ধরেন। আর আমরাতো হাসপাতালের রোগীদের উপকার করি।
হাসপাতাল চত্ত্বরে পার্কিংয়ের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও জোরপূর্বক গাড়ি পার্কিংয়ের বিষয় প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি।
অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগের বহিস্কৃত নেতা রনি চৌধুরী বলেন, আমি মাঝেমাঝে আমার ব্যক্তিগত গাড়ি সেখানে পার্কিং করি। তবে সেটা ব্যবসার জন্য না। তিনি আরও জানান, স্থানীয় রেন্ট-এ কার ব্যবসায়ীরা হাসপাতালের ভেতর গাড়ি রাখে, কারণ হচ্ছে হাসপাতালে একটি অ্যাম্বুলেন্স। যা দিয়ে সব রোগীদের সেবা দেওয়া যায়না।
অভিযোগের বিষয়ে বাকি গাড়ির মালিকদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আনজুমান আরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এ বিষয়ে বহুবার তাদেরকে বলা হয়েছে কিন্তু তারা শোনেনি। ইউএনও মহোদয় ও ওসি সাহেবকে জানানো হয়েছে। থানা থেকে পুলিশও পাঠানো হয়েছে। এখন তারা যদি আমাদের কথা না শোনে তাহলে কি বা করতে পারি? তবুও আমরা আমাদের মত চেষ্টা চালাচ্ছি।