মুন্সিগঞ্জ, ৯ নভেম্বর, ২০২২, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জ-গজারিয়া রুটে পুনরায় ফেরি সার্ভিস চালু করেছে বিআইডব্লিউটিসি। এই ফেরি সার্ভিসটি চালু থাকলে সড়কপথে গজারিয়ার সাথে মুন্সিগঞ্জ সদরের দুরত্ব কমে আসবে। অন্যদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক হয়ে যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহন মুন্সিগঞ্জ-শ্রীনগর হয়ে সরাসরি পদ্মা সেতুতে উঠতে পারবে।
তবে স্থানীয়দের দাবি, ফেরি নয়। মেঘনা নদীর উপর সেতু নির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের দুর্ভোগ কমবে না।
আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টা’র দিকে এই রুটে ফেরি সার্ভিস উদ্বোধন করেন মুন্সিগঞ্জ ৩ আসনের সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাস। পরে যাত্রী ও ৪টি যানবাহন নিয়ে ফেরি ‘স্বর্ণচাঁপা’ গজারিয়ার কাজীপুরা ঘাট থেকে মুন্সিগঞ্জ প্রান্তের চরকিশোরগঞ্জ ফেরিঘাটে ২০ মিনিট সময় ব্যায় করে পৌঁছায়।
এসময় মেঘনা নদীতে অবাধে বাল্কহেড চলাচলের কারনে ফেরি চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। ফেরি সংশ্লিষ্টরাও ফেরি চলাচলে মেঘনা নদীতে অবাধে বাল্কহেড চলাচলকে প্রধান প্রতিবন্ধক বলে মনে করেন। বর্তমানে ‘কর্ণফুলী’, ‘স্বর্ণচাপা’ ও ‘সন্ধ্যা মালতি’ নামে ৩টি ফেরি এই রুটে চালানো হবে।
গজারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিআইডব্লিউটিসির পরিচালক (কারিগরি ও প্রশাসন) রাশেদুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ।
বিআইডব্লিউটিসির পরিচালক (কারিগরি ও প্রশাসন) রাশেদুল ইসলাম বলেন, ২৪ ঘন্টা ফেরি থাকবে। যানবাহনের চাপের উপর নির্ভর করে ফেরি বাড়ানো হতে পারে। ভাড়া নিয়ে কিছু আপত্তি আছে স্থানীয়দের। উর্ধ্বতনদের সাথে আলোচনা করে সেসব সমাধান করা হবে।
কোন গাড়িতে কত ভাড়া?
মুন্সিগঞ্জ গজারিয়া ফেরি রুটে ৪ কিলোমিটার পথ পারি দিতে বড় বাসকে দিতে হবে ১২০০ টাকা, মিনিবাসকে ৮১০ টাকা, ট্রাককে দিতে হবে ৮৪০ টাকা, মাঝারি ট্রাককে ৭০০টাকা, মিনি ট্রাককে ৪৯০টাকা, প্রাইভেট কারকে ৩৫০টাকা, মাইক্রোবাসকে ৪২০টাকা, জিপকে ৪০০ টাকা, মোটরসাইকেলকে ৬০ টাকা জনসাধারণকে পারাপারের জন্য ১৫ টাকা দিতে হবে।
স্থানীয় সংরক্ষিত আসনের ইউপি সদস্য সুমি আক্তার বলেন, এর আগেও এখানে ফেরি চালু করা হয়েছিলো তবে সেটি বেশি দিন থাকেনি। আমরা ফেরি চাই এবং একইসাথে যাতে মেঘনা নদীর উপর সেতু নির্মাণকাজ আরও দ্রুত এগিয়ে যায় সেই দাবিও করি।
স্থানীয় হাশেম মোল্লা বলেন, ফেরি চালু করলে হবে না। ফেরি কয়দিন চলবে তার ঠিক নাই। আমরা সেতু চাই। নেতাদের আশ্বাস আর শুনতে চাই না।
উল্লেখ্য, মুন্সিগঞ্জ-গজারিয়া রুটে মেঘনা নদীতে ২০১৮ সালের জুনে ফেরি সার্ভিস চালু করেন প্রধানমন্ত্রী। এর ফলে মুন্সিগঞ্জ জেলা সদর থেকে গজারিয়া উপজেলায় যাতায়াতের ক্ষেত্রে দূরত্ব কমে আসে। কিন্তু সংকীর্ণ, ভাঙাচোরা সড়ক ও নানা কারনে ৫ মাস পরেই ফেরি সার্ভিসটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ৮০ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ব্যায়ে মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার উত্তর ইসলামপুর এলাকা থেকে নারায়ণগঞ্জের চরকিশোরগঞ্জ ঘাট পর্যন্ত এবং গজারিয়ার কাজীপুরা ফেরিঘাট থেকে রসুলপুর খেয়াঘাট পর্যন্ত এবং রসুলপুর খেয়াঘাটের অপর প্রান্ত থেকে ভবেরচর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ভবেরচর-গজারিয়া-মুন্সিগঞ্জ মহাসড়কের সংস্কার ও প্রশস্তকরণ নামে ১২.৬০ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করে সরকার।