মুন্সিগঞ্জ, ৬ জুলাই, ২০২১, শিহাব আহমেদ (আমার বিক্রমপুর)
দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় নেই। তাই জনগণের তাদের প্রতি আকাঙ্খা নেই-এমন অযুহাতে মুন্সিগঞ্জে ত্রাণ কার্যক্রমে নেই বিএনপি।
অথচ মুন্সিগঞ্জের সন্তান বিএনপির কেন্দ্রীয় ও জেলার শীর্ষ অনেক এমন নেতার রয়েছে ত্রাণ দেয়ার মত ‘অঢেল ব্যক্তিগত সম্পদ’।
আরও পড়তে পারেন: মুন্সিগঞ্জ: ‘ব্যক্তিগত উদ্যোগে’ ত্রাণ বিতরণে আগ্রহ নেই আ. লীগ নেতাদের
অনেকের বিরুদ্ধে আয় বহির্ভুত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ব্যবস্থাও নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কিন্তু ক্ষমতায় নেই বলে ত্রাণ দেয়ায় আগ্রহ নেই তাদের।
করোনার কারনে বিপর্যস্ত মানুষের পাশে তারা কেন নেই সাধারণ মানুষের মাঝে এই অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
বাংলাদেশের একজন শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতি মুন্সিগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক কোষাধ্যক্ষ মিজানুর রহমান সিনহা একসময় তার নির্বাচনী এলাকায় দানবির ও পরোপকারী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। রাজনীতিতে তার ব্যক্তিগত বিপুল অর্থের বিনিয়োগ ছিলো। তবে দল ক্ষমতার বাইরে যাওয়ার পর গত কয়েকবছর ধরে তিনি এলাকায় কোন রাজনীতিতে নেই। করোনাকালে বা অন্য কোন পরিস্থিতিতে ত্রাণ কার্যক্রমেও দেখা যায়নি তাকে।
ব্যবসায়ী মনির উদ্দিন এর ছেলে মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি ও জেলা বিএনপির সহ সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ যিনি এলাকায় প্রভাবশালী কারেন্ট জাল ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। এছাড়া তারও রয়েছে ‘অঢেল ব্যক্তিগত সম্পদ’। তার ভাই জেলা বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য। এতকিছুর পরও করোনাকালে তিনি নেই ত্রাণ কার্যক্রমে।
মুন্সিগঞ্জ সদরের রামপাল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান, বিএনপি নেতা ও দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতি মোশাররফ হোসেন পুস্তি দল ক্ষমতায় থাকাকালে এলাকার রাজনীতিতে সক্রিয় থাকলেও এখন দল ক্ষমতায় না থাকায় তিনিও এলাকায় আসেন না। করোনার কারনে দেশব্যাপী চলমান লকডাউনে ত্রাণ কার্যক্রমে দেখা যায়নি তাকে।
এছাড়া বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী শাহ্ মোয়াজ্জেম হোসেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, জেলা বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি শেখ মো. আবদুল্লাহ, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, মিরকাদিম পৌর বিএনপির সভাপতি জসিম উদ্দিন (সদ্য মিরকাদিম পৌর নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী) নির্বাচন আসলে এলাকায় বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমে তাদের দেখা গেলেও করোনার এই সময়ে মানুষের পাশে নেই তারা। দেখা যায়নি তাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে কোন ত্রাণ কার্যক্রমে অংশ নিতে।
মুন্সিগঞ্জে বিএনপিতে ১৭১ সদস্যের কমিটিতে শিল্পপতি ও ব্যবসায়ী নেতা রয়েছে অনেক। এছাড়া উপজেলা ও ইউনিয়ন কমিটিতেও রয়েছেন। কিন্তু তারা মাঠের রাজনীতিতে নেই। করোনার সময়ও জনগণের পাশে নেই।
এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল হাই ‘আমার বিক্রমপুর’ কে বলেন, আমি আমার সকল উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাদের বলেছি করোনায় বিপর্যস্ত মানুষের পাশে দাড়াতে, ব্যক্তিগত উদ্যোগে তাদের ত্রাণ দিতে। আমার ছোট ভাইও চেষ্টা করছে। আজকে সকালেই সে একটি পরিবারকে ত্রাণ দিয়েছে। এছাড়া ঈদের আগে আমরা জেলা বিএনপি’র পক্ষ থেকে বড় পরিসরে ত্রাণ দেয়ার পরিকল্পনা করেছি।’
জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের ত্রাণ কার্যক্রমে নিস্ক্রিয়তা নিয়ে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।