মুন্সিগঞ্জ, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, শিহাব আহমেদ (আমার বিক্রমপুর)
সানজিদা আল কথা। নারায়ণগঞ্জের পঞ্চবটির মেয়ে। ৬ বৎসর আগে মুন্সিগঞ্জের পঞ্চসারের ভট্টাচাযের্র-বাগ এলাকায় পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়েছে তার। স্বামী ও এক সন্তানের সংসার কথা’র। পড়ছেন বিএসসি অনার্স চতুর্থ বর্ষে।
ফেইসবুকে Dream cake by kotha নামে পেজ খুুলে শুরু করেন হোমমেইড কেক বিক্রি। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি তার। স্বামী আর সংসার নিয়ে অল্প দিনেই আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠেছেন সানজিদা আল কথা।
এ প্রসঙ্গে কথা হয় সানজিদা আল কথা’র সঙ্গে। সানজিদা আল কথা ‘আমার বিক্রমপুর’ কে জানান, ৯ মাস আগে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার এক মাস আগে তিনি সিদ্ধান্ত নেন অনলাইনে কিছু একটা করবেন।
সানজিদা বলেন, অনেকদিনের স্বপ্ন ছিলো অনলাইন প্লাটফর্মকে ব্যবহার করে কিছু একটা করবো। এরপর নিয়মিত খোঁজখবর রাখতাম। অনলাইনে প্রচুর মেয়েদের দেখতাম তারা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করছে। নিজেরা স্বাবলম্বী হয়েছে আবার তাদের অধীনে অনেকে কাজ করেও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে। এরপর আমিও সাহস করলাম। যেহেতু হোমমেইড বিভিন্ন জিনিস তৈরি করার একটা ঝোক আগে থেকেই আমার মধ্যে ছিলো। সেখান থেকেই ভাবলাম নিজস্ব ডিজাইনের কেক বানিয়ে অনলাইনে বিক্রি করবো।
কথা জানান, মাঝখানে করোনার সময় কেক শপগুলো বন্ধ থাকায় তার বিক্রি ভালো হয়েছে। তবে সেসময় তিনি ছিলেন একেবারেই নতুন। অনেক কিছুতে তার অভিজ্ঞতা ছিলো না। এতে কিছুটা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হলেও নিজে নিজে সেসব প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠেছেন তিনি। এরপর আস্তে আস্তে তার কেকের সুনাম ছড়িয়ে পড়লো। সবাই কেকের মান আর ডিজাইন নিয়ে প্রশংসা করতে শুরু করলো। তাছাড়া সচরাচর কেক শপে যেসকল গৎবাধা কেকের ডিজাইন দেখা যায় সেগুলোর চেয়ে তার নিজস্ব ডিজাইনের কারনে তার কেকগুলো ক্রেতার কাছে খুব দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে উঠেলো।
কথা জানান, বর্তমানে তিনি প্রতিমাসে ঘরে বসেই ১ লাখ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার কেক বিক্রি করেন। যা থেকে তার প্রতিমাসে আয় হয় ৫০-৬০ হাজার টাকা।
তবে তিনি দাবি করেন, ঢাকায় এইরকম কেকের দাম আরও বেশি দামে কিনতে হয় ক্রেতার। কিন্তু মুন্সিগঞ্জ যেহেতু ছোট জায়গা। ক্রেতা কম, খরচঁ বেশি সেসব বিষয় মাথায় রেখেও কেকের দাম সাধারণ ক্রেতাদের সাধ্যের মধ্যেই নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।
বর্তমানে প্রকারভেদে ১.৫ পাইন্ড ওজনের একটি কেক ৪৫০ টাকা পাউন্ড থেকে শুরু করে ১০০০ টাকা পাউন্ড পর্যন্ত দামের কেক পাওয়া যাবে তার কাছে। এছাড়া আপনি চাইলে আপনার নিজস্ব যে কোন ডিজাইনের কেক কথা’র কাছ থেকে বানিয়ে নিতে পারবেন। কথা’র হাতে বানানো কেক গুলো জন্মদিন, বিশেষ দিন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকি, হলুদের অনুষ্ঠান সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ক্রেতারা বিশ্বস্ততার সাথে নিয়ে থাকেন।
সানজিদা আল কথা বলেন, আমার পরিবার ও স্বামীর সম্পূর্ণ সমর্থন রয়েছে আমার প্রতি। তারা আমাকে সবসময় সহযোগিতা করে এ কাজে। আমি সকাল থেকে কেক বানানো শুরু করি। মাঝখানে দুপুরে পরিবারের জন্য রান্না করি। এরপর আবার কেক বানানো শুরু করি। কেক ডেলিভারিম্যানের কাছে বুঝিয়ে দিয়ে তবেই কাজ শেষ করি।
কথা’র হোমমেইড কেক নিতে হলে তার ফেইসবুক পেজে যোগাযোগ করতে হবে।
ভবিষৎয়ে ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী বড় একটি কেক শপ খোলার স্বপ্ন কথার। এখন থেকেই সেই পরিকল্পনা মাথায় রেখে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন কথা।