মুন্সিগঞ্জ, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানের বালুরচরে হাউজিং ব্যবসা নিয়ে দক্ষিণা গ্রীণ সিটির সুমন ইসলাম ও নবধারা হাউজিং প্রকল্পের আল ইসলাম পক্ষের মধ্যে পুরনো বিরোধের জের ধরে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় এক পুলিশ সদস্যসহ দুইপক্ষের অন্তত ১০ জন টেটাবিদ্ধ হয়ে ও ইটপাটকেলের আঘাতে আহত হয়েছেন। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য উভয়পক্ষের ৪জনকে আটক করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার সকাল ৯টা’র দিকে খাসকান্দি এলাকায় কয়েক শতাধিক লোকজন নিয়ে সুমন ইসলামের মালিকানাধীন দক্ষিণা গ্রীণ সিটির অফিস কার্যালয় ও তার বসতবাড়ি ভেকু দিয়ে ভেঙে ফেলে আল ইসলাম ও তার সহযোগী বাতেন পক্ষের লোকজন। এসময় ৫-৬টি বাড়িঘরও ভাঙচুর করা হয়। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে দুপুর ১২টা’র দিকে পুলিশের উপস্থিতিতেই চরপানিয়া-খাসকান্দি পদ্মা সেতু রেল সংযোগ এলাকায় টেটা নিয়ে দুই পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে দুই পক্ষের ইট-পাটকেল নিক্ষেপের মধ্যে পুলিশের ব্যবহৃত একটি পিকআপ ভ্যানের সামনের অংশের কাচ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এছাড়াও এসময় পুলিশের ব্যবহৃত ৩টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয় বলে সিরাজদিখান থানার ওসি জানান।
সিরাজদিখান থানার ওসি মিজানুল হক জানান, এ ঘটনায় পুুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। তবে, আহতরা গ্রেপ্তার এড়াতে বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা নেয়ায় তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েকজনকে আটক করেছে।
ওসি জানান, ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে ২ শতাধিক টেটা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
দক্ষিণা গ্রীণ সিটির পরিচালক সুমন ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, নবধারা হাউজিংয়ের ভাইস চেয়ারম্যান আল ইসলাম, চেয়ারম্যান শাহজাহান, বাংলা এশিয়া নিরাপদ সিটির ভাইস চেয়ারম্যান বাতেন, পরিচালক মহিউদ্দিন আহমেদ, নুর সিটির চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মিলে প্রায় ২ হাজার লোক ভাড়া করে এনে আমার বসতবাড়ি ভেকু দিয়ে ভেঙে ফেলে। পরে তারা খাসকান্দি এলাকায় পুলিশের উপস্থিতিতে ও তাদের সহযোগিতায় আমার মালিকানাধীন দক্ষিণা গ্রীণ সিটির ভবন ভেকু দিয়ে গুড়িয়ে দেয়। গেল শনিবার রাতে মোতালেব মেম্বারের বাড়িঘর ভাঙচুর করে তাকে কুপিয়ে আহত করে এরা।
সুমন ইসলামের অভিযোগ, বাতেন ও আল ইসলাম মিলে ১ বছর আগেও সন্ত্রাসী নিয়ে আমার বাড়িঘর ভাঙচুর করে। আমি আমার বাপ-চাচার জমি নিয়ে ব্যবসা করি। তাদের উদ্দেশ্য, জোবরদস্তি করে আমার সব জমি দখলে নিয়ে এরা ব্যবসা করতে চায়।
অভিযোগের বিষয়ে সিরাজদিখান উপজেলা চেয়ারম্যান ও বাংলা এশিয়া নিরাপদ সিটির পরিচালক মহিউদ্দিন বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। আমার শরীর ভালো নেই। আমি অসুস্থ।
নবধারা হাউজিং প্রকল্পের আল ইসলাম ভাঙচুর ও সংঘর্ষের ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, আমি ঢাকায় ছিলাম। সেখানে কি হয়েছে আমার জানা নেই। মোতালেব মেম্বারের বাড়িঘর ভাঙচুর ও তাকে কুপিয়ে আহত করার অভিযোগও সত্য নয়।
সিরাজদিখান থানার ওসি মিজানুল হক বলেন, পুলিশের উপস্থিতিতে বাড়িঘর ভাঙচুর বা অপরাধীদের সহযোগিতা করার প্রশ্নই আসে না। তাদের এ ধরনের অভিযোগ ভিত্তিহিন। এ ঘটনায় যারাই জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।