১৭ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
শুক্রবার | রাত ২:৫৭
মুন্সিগঞ্জে স্বামী-শাশুড়ির অপমান সইতে না পেরে গায়ে আগুন দিয়ে গৃহবধূর প্রাণ বিসর্জন
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ১৫ জুলাই ২০২৩,  নিজস্ব প্রতিবেদক (আমার বিক্রমপুর)

মুন্সিগঞ্জ সদরে স্বামী ও শাশুড়ির সাথে পারিবারিক সমস্যা নিয়ে দ্বন্দ-বিরোধের জেরে গায়ে কেরোসিন ছিটিয়ে আগুন লাগানোর ৫দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ওই গৃহবধূর শরীরের ৮০ শতাংশ আগুনে পুড়ে গিয়েছিল। নিহত রিতু আক্তার (৩০) সদর উপজেলার আধারা ইউনিয়নের ভাসানচর মাঝিকান্দির আব্দুর রহিমের মেয়ে। ৬ বছর আগে পারিবারিকভাবে পাশ্ববর্তী আধারা গ্রামের কুয়েত প্রবাসী হেলাল সরকারের (৪০) সাথে তার বিয়ে হয়।

এই দম্পতির ৪ বছর বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। গায়ে আগুন দেয়ার পর গৃহবধূর পিতা আব্দুর রহিম মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।

দায়েরকৃত এজাহারে অভিযোগ করা হয়, গেল ১১ জুলাই (মঙ্গলবার) দিনগত রাত ৩ টার দিকে স্বামী ও শাশুড়ীর অপমান-নির্যাতন সইতে না পেরে গায়ে আগুন দেন গৃহবধূ রিতু।

রিতুর বাবা আব্দুর রহিম অভিযোগ করে বলেন, অভিযুক্ত হেলাল আগেও একটি বিয়ে করেছিলো। আমার মেয়েকে বিয়ের পর থেকেই হেলাল ও তার মা আলো বেগম বিভিন্ন কারণে-অকারনে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের পাশাপাশি কথায় কথায় তুই মরতে পারিস না বলে আমার মেয়েকে উসকানি দিতো। বিষয়টি সে আমাকে জানালে আমি মেয়ে জামাইকে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাই। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সে আমাকে হুমকি-ধমকি দেয়।

এরই ধারাবাহিকতায় গেল ১১ জুলাই রাত ৩টার দিকে রিতুর সাথে তার জামাই ও শাশুড়ির ঝগড়া হয়। এসময় রিতুর জামাই হেলাল রিতুকে বলে তুই মরতে পারিস না? তুই মরলেইতো আমি পুনরায় বিয়ে করার সুযোগ পাই। রিতু এ কথা সহ্য করতে না পেরে ঘরে থাকা কেরোসিন গায়ে ছিটিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। ঘটনাটি রিতুর জামাই মোবাইলে আমাকে জানায়। গুরুতর অগ্নিদগ্ধ রিতুকে প্রথমে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়া যাওয়া হয় এবং পরবর্তীতে শেখ হাসিনা বার্ন ইন্সটিটিউটে পাঠানো হয়। সেখানেই ৫ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে শনিবার সন্ধ্যায় মারা যান রিতু। তার শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিলো।

মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ওসি মো. তারিকুজ্জামান জানান, ঘটনার পর ভুক্তভোগীর বাবা থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ তদন্তে নামে এবং শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে গিয়ে ভুক্তভোগীর জবানবন্দি রেকর্ড করে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।

error: দুঃখিত!