মুন্সিগঞ্জ, ৫ এপ্রিল ২০২৩, বিশেষ প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জের সদরের মিরকাদিমে স্কুলছাত্র সিফাত মিয়া (১৬) হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় হওয়া মামলার এক কিশোর আসামি (১৬) হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে মুন্সিগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক জশিতা ইসলামের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয় সে।
এর আগে গত সোমবার রাত আটটার দিকে নিহত সিফাতকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ওই আসামি। এ ঘটনায় সোমবার দিবাগত রাতে ওই আসামির বিরুদ্ধে মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় মামলা করে সিয়ামের বাবা মো. দেলোয়ার হোসেন। রাতেই ওই আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গতকাল দুপুরে তাকে মুন্সিগঞ্জ আদালতে তোলা হয়।
মুন্সিগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গজারিয়া-সদর সার্কেল) থান্দার খাইরুল হাসান জানান, মঙ্গলবার দুপুরে মামলার ওই আসামিকে আদালতে তোলা হয়। আদালতের বিচারকের সামনে আসামি হত্যার দায় স্বীকার করেছে। সে সময় হত্যার কারণও বর্ণনা করেছে সে। পরে আদালত তাকে মুন্সিগঞ্জ জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরবর্তী সময়ে তাকে কিশোর অপরাধী হিসেবে গাজীপুরে স্থানান্তর করা হবে।
নিহত সিফাত মিরকাদিমের তিলারদিচর এলাকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে। সে রিকাবীবাজার উচ্চবিদ্যালয়ের ব্যবসায় শাখার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। তাকে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার ওই আসামি পেশায় কাঠমিস্ত্রি।
পুলিশ নিহত কিশোরের স্বজন ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নিহত সিফাত, ওই আসামিসহ কয়েকজন সোমবার তারাবিহর নামাজ পড়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। তারা মসজিদে যাওয়ার আগে চোর-পুলিশ খেলছিল। খেলার সময় ওই আসামি সেখানকার একটি বাঁশের সাঁকো পার হচ্ছিল। সিফাত সাঁকোটি নাড়া দেয়। এতে ওই আসামি ক্ষিপ্ত হয়ে সিফাতের গলা চেপে ধরে। সেখানে অসুস্থ হয়ে যায় সিফাত। পরে পরিবার ও স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মামলার বাদী দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমার এক ছেলে, এক মেয়ের মধ্যে সিফাত ছোট ছিল। দিনমজুরের কাজ করে ছেলে-মেয়েটাকে নিয়ে বেঁচে ছিলাম। কত স্বপ্ন দেখেছিলাম, এই ছেলে বড় হবে। আমার অভাবের সংসারের হাল ধরবে। আমার ছেলে শিক্ষিত হয়ে আমার নাম উজ্জ্বল করবে আমার ছেলে আমার গর্বের কারণ হবে। আমার সেই ছেলেটাকে নির্মমভাবে মেরে ফেলল। আমার সব শেষ করে দিল। ওই আসামি এমনভাবে সিফাতের গলা চেপে ধরেছিল, কেউ তাকে ছাড়াতে পারেনি। আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।’
মুন্সিগঞ্জ সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনছার উজ্জামান বলেন, সিফাত হত্যার ঘটনায় রাত ১২টার পরে সিফাতের বাবা দেলোয়ার বাদী হয়ে মামলা করেন।