১১ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
মঙ্গলবার | রাত ৮:৩৭
মুন্সিগঞ্জে সেলফি তুলতে গিয়ে ভূতের দেখা পেল দুই কিশোরী! আসল ঘটনা কি?
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ৩০ আগস্ট ২০২৩, নিজস্ব প্রতিবেদক (আমার বিক্রমপুর)

বিকেলে ঘুরতে বেরিয়ে পুরানো একটি বাড়িতে নিজেদের সেলফি তুলছিলেন দুই কিশোরী। সেলফি তোলার পর হঠাৎ তারা লক্ষ্য করেন তাদের মুখের পাশে আরো একটি অদ্ভুত মুখ। ঘটনার সূত্রপাত এখানেই।

দুই কিশোরী ও স্থানীয়দের দাবি, অদ্ভুত অতিপ্রাকৃতিক রকমের মুখটি ভূতের! আর ঘটনাটিকে ঘিরে এলাকাজুড়ে তৈরি হয়েছে ভূত আতংক। হুজুর-ফকিরের বাড়িতেও ছুটছেন কেউ কেউ। এমন ঘটনা মুন্সিগঞ্জের টংগিবাড়ী উপজেলায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছবি ও বিষয়টিকে ঘিরে তৈরি হয়েছে আলোচনা। তবে অনেকে বলছেন, এটি মোবাইল অ্যাপের কারসাজি হতে পারে।

স্থানীয়রা জানান, গেল রোববার বিকেলে উপজেলার আব্দুল্লাপুর অধ্যায় নগর এলাকার একটি পুরোনো পরিত্যক্ত বাড়িতে ছবি তোলার সময় এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় কিশোরী সুজনা আক্তার তার বান্ধবীকে নিয়ে মোবাইলে ছবিটি তুলেন। এরপর ছবিটি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। যা নিয়ে আলোচনা এখন সর্বত্র।

ছবিটির বিষয়ে কিশোরী সুজনা জানান, বিকেলে ৪টার দিকে ছবিটি তোলা। প্রথমে বিষয়টি দেখতে পাইনি। পরে হঠাৎ মোবাইলে দেখি আমাদের সাথে আরেকটি মুখ। সাথে সাথে বাড়িতে চলে আসছি। ওই বাড়িতে বিভিন্ন সময় ভূতের কাণ্ডকাহিনী হয়। ওই ছবিটি তোলার পর আমরা আরো অনেক ছবি তুলেছি কিন্তু আর এমন উঠেনি। বাড়িতে এসে বলেছি। আমাদের হুজুর বলেছেন তাবিজ দিবেন।

স্থানীয় কয়েকজন যুবক বলেন, ছবিটিকে ঘিরে এলাকায় অনেক কথা হচ্ছে, কয়েকজন ফেসবুকে আপলোড করেছে বলছে ভূতের সাথে সেলফি। এখন সবার মোবাইলে মোবাইলে ছবিটা। অনেকে বলছে বাড়িটায় ভূত আছে, রাতে কান্নাকাটিও হয়। আবার অনেকে বিশ্বাস করছেনা। বলেছে মোবাইলে ইডিট করা।

স্থানীয় বাসিন্দা মাহবুব হোসাইন বলেন, মেয়ে দুইটি ছবি তোলার পর অনেক ভয় পেয়েছে। এ নিয়ে রীতিমত ধুম্রজাল তৈরি হয়েছে। কতটুকু সত্য-মিথ্যা বোঝা যাচ্ছে না। ছোট-বড় বৃদ্ধ সবায়ই আলোচনা করছে। কেউ কেউ মনে করছে সত্যি সত্যি ভূতের ছবি। আমার মনে হয় এটি মোবাইলের মিসটেক।

অ্যাপের কারসাজি!

এদিকে সুজনার কাছে বিস্তারিত জানার জন্য মোবাইলটি দেখতে চাইলে সে জানায় স্নাপচ্যাট নামের একটি অ্যাপ দিয়ে ছবিটি তোলা। অ্যাপটি ঘেটে দেখাযায় বিভিন্ন ধরনের ফিল্টার দিয়ে অ্যাপসটির মাধ্যমে ছবি তোলা যায়। ভূত দাবি করা মুখের অবয়বের মত একটি ফিল্টার রয়েছে অ্যাপটিতে। ফিল্টারটির মাধ্যমে ছবির মানুষের মুখকে অদ্ভুত আকৃতির রুপ দেয়া যায়। তবে সুজানার দাবি, ওই ফিল্টারটি মানুষের মুখকে চিহ্নিত করে চেহারা পরিবর্তন করে, কিন্তু মুখের পেছনে যেরকম আলাদা একটি ভূত আকৃতির ছবি দেখা যাচ্ছে তা সম্ভব নয়।

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় বেশ কয়েকজন ফটোগ্রাফারের সাথে। ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফার রাজীব পাল রনি বলেন, ছবিটি দেখে ভূতের বা অতিপ্রাকৃতিক মোটেও মনে হয়নি। বরং আধুনিক যুগে এটি বিশ্বাস করাটা বোকামি হবে। মোবাইলে ভূতের ছবি তোলা হবে এটি বিশ্বাসযোগ্য নয়।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফটো ইভেন্টে পুরস্কার পাওয়া ফটোগ্রাফার রায়হান আহমেদ বলেন, মেয়েটি বলেছে ছবিটি স্নাপচ্যাট অ্যাপস দিয়ে তোলা। সে অ্যাপসটিতে এমন অসংখ্য ফিল্টার আছে, যা দিয়ে অদ্ভূত চেহারা করা যায়। এজন্য মানুষের চেহারা যে মার্ক করতে হবে এমন নয়, যেকোন ছবিতেই এমন অদ্ভূত কিছু যোগ করার ফিল্টার রয়েছে। এটি নিয়ে বিব্রত হওয়ার কিছু নেই।

error: দুঃখিত!