২৪শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
শুক্রবার | রাত ৮:২১
মুন্সিগঞ্জে সিরাজদিখানে হেফাজতের সাথে সংঘর্ষ, পুলিশের ওসি ও মধুপুরের পীর গুরুতর আহত
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ২৮ মার্চ, ২০২১, সিরাজদিখান প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)

হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে পুলিশের সাথে হেফাজতের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে সিরাজদিখান থানার ওসি এস এম জালালউদ্দিন ও হেফাজতের নায়েবে আমির মধুপুর পীর আব্দুল হামিদ গুরুতর আহত হয়েছেন।

আজ রোববার (২৮ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টা’র দিকে হেফাজতের নেতাকর্মীরা সিরাজদিখানের নীমতলা এলাকায় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ বাঁধা দেয়। এসময় পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়ায় হেফাজতের নেতাকর্মীরা। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ছোড়ে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত আনুমানিক ৩০ জন আহতের খবর জানা গেছে।

সংঘর্ষচলাকালীন সময়ে হেফাজতের কর্মীরা বেশকয়েকটি দোকানপাট ভাংচুর করে এবং তিনটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়া একটি অটোরিকশা ভাঙচুর করে নেতাকর্মীরা।

জানা যায়, সংঘর্ষের সময় সিরাজদিখান থানার ওসি এস এম জালালউদ্দিন, সেকেন্ড অফিসার সেকান্দর, কনস্টেবল শাহিন, ডিএসবির মাহবুব সহ সর্বমোট ৫ পুলিশ সদস্য ও হেফাজতের নায়েবে আমির মধুপুর পীর আব্দুল হামিদ সহ হেফাজতের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন। এর মধ্যে গুরুতর আহত পুলিশের ২ সদস্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

সিরাজদিখান থানার ওসি এস এম জালালউদ্দিন গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে সিরাজদিখান থানার ওসি (তদন্ত) ‘আমার বিক্রমপুর’ কে নিশ্চিত করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী নাসির হোসেন জানান, হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালে সকাল থেকেই মধুপুর পীর সাহেবের নেতৃত্বে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থানে ছিল হেফাজতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা। সকালে হেফাজতের একাংশের কিছু নেতাকর্মী ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের নিমতলা এলাকায় অবস্থান নিয়েছিল। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি শেষে নিমতলা এলাকার নেতাকর্মীরা মধুপুর পীরসাহেব যেখানে অবস্থান করছেন সেদিকে যাচ্ছিলেন। ইউনিয়ন পরিষদের কাছাকাছি পুলিশ অবস্থান করছিল। পুলিশের সাথে লাঠিসোটাসহ ছাত্রলীগ যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও ছিল। হেফাজতের নেতাকর্মীরা যখন ইউনিয়ন পরিষদের দিকে অগ্রসর হয় ঠিক তখনই ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীরা হেফাজতকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে শুরু করে। এ সময় হেফাজতের কর্মী-সমর্থকরাও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। সেই সাথে লাঠিসোটা নিয়ে একে অপরের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রথমে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। পরবর্তীতে রাবার বুলেট এবং ফাঁকা গুলি নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এক পর্যায়ে পুলিশও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে করে পুলিশ, ছাত্রলীগ-যুবলীগ এবং হেফাজতের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়। এদের মধ্যে অনেকই রাবার বুলেট বিদ্ধ হয়েছেন। আহতরা গ্রেফতার এড়াতে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এদিকে সিরাজদিখান উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহসান উল্লাহ রয়েল জানান, হেফাজতের নেতাকর্মিরা রাস্তা অবরোধ করে রাখলে পুলিশ তাদের রাস্তা হতে সড়ে যেতে অনুরোধ করে। এ সময় তারা মোনাজাত নিয়ে চলে যাবে বললেও হেফাজতের আরেকটি গ্রুপ এসে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতা কর্মিদের উপর হামলা চালায়। এতে ২ পুলিশসহ আমাদের ৬০/৭০ জন আওয়ামী লীগের নেতা কর্মি আহত হয়েছে। এছাড়া আমাদের আওয়ামী লীগের রাজানগন ইউনিয়ন সভাপতি আলমগীর কবির, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহবায়ক আমিনুল ইসলামের বসতবাড়ি ভাঙ্গচুর এবং যুবলীগের আহবায়ক সদস্য আসাদুজ্জামান বিপ্লবের বাড়িত আগুন ধরিয়ে দিয়েছে হেফাজত।

error: দুঃখিত!