মুন্সিগঞ্জ, ১৯ এপ্রিল, ২০২১, বিশেষ প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জে রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া এক ব্যক্তির ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা ৬ দিন পর তাকে বুঝিয়ে দিয়েছেন মুন্সিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক সৌরভ আহম্মেদ।
জানা যায়, গত সোমবার (১২ এপ্রিল) মুন্সিগঞ্জ সদরের বজ্রযোগিনী ইউনিয়নের মদিনাবাজার এলাকায় বিদেশে থাকে ছেলেকে পাঠাতে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা শ্যালকের কাছ থেকে ধার নিয়ে মিশুকে করে টংগিবাড়ী উপজেলার আনন্দবাজার এলাকায় যাচ্ছিলেন জামাল শেখ ও তার স্ত্রী। এসময় জামাল শেখের স্ত্রী’র কাছে থাকা টাকার ব্যাগটি মদিনা বাজার এলাকায় অসাবধানতাবশত পরে যায়। টংগিবাড়ীর আলদিবাজার এলাকায় যাওয়ার পর তারা বিষয়টি টের পান। এরপর থেকে তারা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। কিন্তু টাকার ব্যাগের হদিস আর পাননি।
ছাত্রলীগ নেতা সৌরভ আহম্মেদ জানান, সোমবার সন্ধ্যা ৭ টা’র দিকে মদিনাবাজার রাস্তার পাশে তিনি একটি কসমেটিকস এর দোকানের ব্যাগ দেখতে পান। এরপর ব্যাগটি খুলতেই ভেতরে ১ হাজার টাকার ১০০ টি নোট সম্বলিত বান্ডেল ও আরেকটি ৫০০ টাকার বান্ডেল দেখতে পান। পরে টাকা গুনে সেখানে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা নিশ্চিত হন। এরপরপরই সে রাতে তার ফেইসবুক আইডি থেকে একটি স্ট্যাটাস দেন।
ফেইসবুক স্ট্যাটাসের সূত্র ধরে জামাল শেখের এলাকার জনৈক আরিফের সহায়তায় গতকাল রোববার (১৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় পুরোপুরি নিশ্চিত হয়ে সেই টাকা তাদের বুঝিয়ে দেন ছাত্রলীগ নেতা সৌরভ আহম্মেদ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জামাল শেখ বলেন, প্রতিটি মানুষের ভালো এবং খারাপ দিক দুটোই আছে। ছাত্রলীগের নামে অনেক বদনাম শুনেছি। তবে আজ মনে হলো ছাত্রলীগের কর্মীরা আসলেই খুব ভালো ও পরোপকারী। আমি এই পবিত্র রমজান মাসে তার জন্য মন থেকে আল্লাহ্’র কাছে দোয়া করি। টাকাগুলি না পেলে বিদেশে আমার ছেলে কষ্টে থাকতো। তার কাগজপত্র ঠিক করার জন্য সে আমাদের কাছে টাকা চেয়েছিলো। আমার শ্যালকের কাছ থেকে ঋণ করে টাকাগুলি এনেছি। টাকা না পেলে সেও সমস্যাও পড়তো আর আমাদেরও ঋণ টানতে হতো।
মুন্সিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক সৌরভ আহম্মেদ বলেন, অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে ভালো মানুষ হওয়া যায় না। আমি নিজেও বিভিন্ন কাজ করে বাবা-মা কে নিয়ে কষ্ট করে সৎভাবে সংসার চালাই। আজকে এমন কঠিন পরিস্থিতিতে আমিও পড়তে পারতাম। তাই সবাইকে বলবো সবার আগে একজন ভালো মানুষ হতে হবে। লোভ-লালসার উর্ধ্বে উঠে আমরা সবাই মিলেমিশে ভালো কাজ করলে দেশ ও আমাদের সমাজ থেকে সকল প্রকার অন্যায় ও অপকর্ম দূর হয়ে যাবে। সবাই ভালো কাজে উৎসাহ পাবে। ছাত্রলীগের হারানো ঐত্যিহ্য ফিরে পাবে।