মুন্সিগঞ্জ, ৬ জুলাই, ২০২১, বিশেষ প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিববর্ষ’ উপলক্ষে মুন্সিগঞ্জে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২০০ ঘর নির্মাণে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে ওএসডি হলেন মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার সাবেক ইউএনও ও বর্তমান সহকারী কমিশনার ভূমি শেখ মেজবাহ উল সাবেরিন।
এই দুইজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাও হবে। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ও প্রকল্প পরিচালক ড. আহমদ কায়কাউস এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, এদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের প্রমাণ মেলায় গতকাল সোমবার (৫ জুলাই) এই শাস্তি দেয়া হয়।
এই উপজেলার প্রকৌশলী, সংশ্নিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে।
আরও পড়তে পারেন: মুন্সিগঞ্জে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণে অনিয়ম, তদন্ত কমিটি গঠন
তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেটাকে ইবাদত হিসেবে নিয়েছেন সেটাতে যখন আমরা ব্যর্থ হই তখন সেটা আমাদের ব্যর্থতা। এরই মধ্যে নিম্নমানের কাজ ও ঘর বরাদ্দে অনিয়ম সহ, আরো নানা অভিযোগ অভিযোগ উঠেছে ২২ টি জেলার ৩৬ উপজেলার বিরুদ্ধে।
ওএসডি হওয়া কর্মকর্তারা হলেন- বগুড়ার শেরপুর উপজেলার সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিয়াকত আলী সেখ, সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম, বরগুনা আমতলী উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান, মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবায়েত হায়াত শিপলু ও একই উপজেলার সহকারী কমিশনার ভূমি শেখ মেজবাহ উল সাবেরিন। এদের মধ্যে দুজনের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। বাকিদের বিরুদ্ধেও মামলা প্রক্রিয়াধীন।
এর আগে ঘর নির্মাণে অনিয়মের বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে মুন্সিগঞ্জের জেলা প্রশাসককে চিঠি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর পরিচালক অতিরিক্ত সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার চরাঞ্চলের আধারা ইউনিয়নের কালিরচর (ভাসানচর) এলাকায় রাস্তার পাশেই আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় ২০০ ঘর নির্মাণের কাজ চলছে। ঘর নির্মাণ কাজ পুরোপুরি শেষ না হলেও সেখানে চলমান নানা দুর্নীতি নিয়ে খবর প্রকাশ করে জাতীয় একটি গণমাধ্যম। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, যেসব ঘর ইতোমধ্যে তৈরি হয়ে গেছে, সেই ঘরে লাগানো লিংটেল, টিন, ইটের গাঁথুনি ও দরজা-জানালার স্টিল পরীক্ষা করলে কোনো কিছুই প্রাক্কলন অনুযায়ী পাওয়া যাবে না।
ছাড় পাচ্ছেন না উপজেলা পর্যায়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটিতে থাকা অন্যান্য কর্মকর্তারাও। অনিয়মে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ প্রমাণ মিললে, তাদের বিরুদ্ধেও নেয়া হবে ব্যবস্থা।
প্রকল্প পরিচালক মো. মাহবুব হোসেন বলছেন, অনিয়মের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ সুবিধাভোগীদের দেয়া হবে নতুন ঘর।