মুন্সিগঞ্জ, ২৭ অক্টোবর, ২০২২, শিহাব আহমেদ (আমার বিক্রমপুর)
সামান্য বৃষ্টিতেই পানিতে তলিয়ে যায় বাড়ির উঠান, রান্না ঘর, টিউবওয়েল, টয়লেট। পানিবন্দি হয়ে ঘড় থেকে বের হতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় স্থানীয়দের। ময়লা-আবর্জনা যুক্ত এই পানিতেই বাধ্য হয়ে বেড় হয়ে পরে অবুঝ শিশুও। শিক্ষাঙ্গণে যেতে বেগ পেতে হয় শিক্ষার্থীদের। আর হঠাৎ করে যদি কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েন তার অবস্থা হয় নিদারুণ।
মুন্সিগঞ্জ জেলার মিরকাদিম পৌরসভার কয়েকটি এলাকা ও জেলার সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন পঞ্চসারের ৫নং ওয়ার্ডের বড় একটি অংশের দীর্ঘদিনের নিত্যনিয়মিত চিত্র এটি। সর্বশেষ ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সোমবারের টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে এখানকার ২০০ পরিবারের অন্তত ৫ হাজার মানুষ। পরদিন থেকে রোদ উঠলেও এখনো নামেনি পানি।
স্থানীয় জোলেখা বেগম বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই পানিতে বাড়ির উঠান তলিয়ে যায়। স্থানীয় ইউপি সদস্যকে বিষয়টি বারবার জানালেও তিনি কোন ব্যবস্থা নিতে পারেননি।
স্কুল শিক্ষার্থী রমজান বলেন, গত ১ সপ্তাহ ধরে স্কুলে যেতে পারি না। পানি পারিয়ে স্কুলে যেতে ইচ্ছা করে না। আমরা এর স্থায়ী সমাধান চাই।
মুন্সিগঞ্জ সদরের মিরকাদিম পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের গোয়ালঘুর্ণি চৌধুরীবাড়ী, গোলাপবাগ, দক্ষিণ রামগোপালপুর, ৩ নং ওয়ার্ডের উত্তর রামগোপালপুরের সৈয়ালবাড়ী, হাজীবাড়ী ও পঞ্চসার ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বিনোদপুর এলাকার ডাক্তার বাড়ি, দেওয়ান বাড়ি ফরাজি বাড়ির ২০০ পরিবার এখন পানিবন্দি। বিভিন্ন পানিবাহিত রোগের ঝুঁকিতে রয়েছেন তারা।
জেলা শহর থেকে সামান্য কাছে হলেও সংশ্লিষ্টরা কোন ব্যবস্থাই নিচ্ছেন না। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বারবার জানানো হলেও এ নিয়ে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেননি তারা। পাশ্ববর্তী নয়নের খাল দখল হয়ে স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জমে থাকা পানি সরছেনা বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
স্থানীয় বাসিন্দা জিএম হাসান বলেন, এই এলাকার পানি নামার একমাত্র পথ নয়নের খাল। কিন্তু খালটি স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাসহ বিভিন্ন লোকজন দখল করে স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে।
বিনোদপুর এলাকার পানিবন্দি এলাকায় দ্রুত সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে পঞ্চসার ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা জানান, শীঘ্রই দখল হয়ে যাওয়া খালগুলো উদ্ধারে ভেকু কেনা হবে। এছাড়া যারা যেখানে খালের অংশ দখল করে নিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মিরকাদিম পৌরসভার মেয়র আব্দুস সালাম বলেন, এখন আর এ নিয়ে কথা বলতে চাই না। এক সপ্তাহের মধ্যে ড্রেন নির্মাণ কাজ শুরু করবো। পানিবন্দিদের বিষয়ে কোন মন্তব্য করেননি তিনি।
মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মো. আল জুনায়েদ বলেন, সরকারি খাল হয়ে থাকলে সেটি উদ্ধারে উদ্যোগ নেয়া হবে। পানিবন্দিদের বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নিবেন কি না জানতে চাইলে তিনি উত্তর দেননি।
এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল কে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি ধরেননি।