মুন্সিগঞ্জ, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, গজারিয়া প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় এক নির্মাণ শ্রমিকের হৃদয় বিদারক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) গজারিয়া উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের নাঘেরচর গ্রামে ইঞ্জিনিয়ার মোস্তফা মিয়ার বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, নিয়োজিত শ্রমিকদেরকে বাড়িওয়ালা মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মোস্তফা এবং নির্মাণ ঠিকাদার শহীদুল্লাহ মিয়ার মিথ্যা আশ্বাসে কাজ শুরু করার ১০ থেকে ২০ মিনিট সময়ের পরে এই ঘটনা ঘটে।
আহত শ্রমিক তারেক জানান, নির্মাণ ঠিকাদার শহীদুল্লাহ এবং বাড়ি মালিক ইঞ্জিনিয়ার মোস্তফা আমাদেরকে জানান নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ ছুয়ে যাওয়া বিদ্যুৎ লাইনে ,এখন বিদ্যুৎ বন্ধ করা হয়েছে। অফিস থেকে আমাদেরকে জানিয়েছেন আপনারা কাজ শুরু করুন। মালিকের এই কথা শুনে আমরা ১৮ থেকে ১৯ জন ছাদ ঢালাই কাজে নিয়োজিত শ্রমিক কাজ শুরু করার প্রস্তুতি নিয়ে মিক্সার নিয়ে ছাদের ওপরে উঠার ১০ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যেই আমার সহকর্মী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নিচে পড়ে। আমিও অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাই।
তিনি আরো জানান সহকর্মীদের মধ্যে জাহাঙ্গীর, আশরাফ, শিপন সহ আট থেকে দশজন সহকর্মী মৃত মাঈনুদ্দীনসহ আমাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন।
মৃত মাইনুদ্দিন ভোলা জেলার নিবাসী, তিনি মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুর এলাকায় ভাড়া থাকেন ।
আহত শ্রমিকের সহকর্মীদের মধ্যে জাহাঙ্গীর, আশরাফ, শিপন সহ ৫ থেকে ৭ জন জানান, আমাদের শ্রমিক সরদার তারেক ভাইয়ের উপস্থিতিতে নির্মাণ ঠিকাদার শহীদুল্লাহর পিতা আমির হোসেন ও বাড়ি মালিক মোস্তফা বলেছেন বিদ্যুৎ লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা হয়েছে। অফিসকে জানানো হয়েছে আপনারা কাজ শুরু করুন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্বরত ডাক্তার খন্দকার আরশাদ কবির জানান, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু রোগী হাসপাতালে পৌঁছার আগেই নিহত হয়েছে।
নিহত ও আহত শ্রমিকদের সহকর্মীরা জানান, ঘটনার পর বাড়ি মালিক বা ঠিকাদার পক্ষ থেকে তাদের চিকিৎসা ও সহযোগিতায় কেউই এগিয়ে আসেননি। সাত থেকে আটজন সহকর্মী মিলে মাইনুদ্দিন ও আহত তারেক মিয়া কে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার পর দায়িত্বরত ডাক্তার মাঈনুদ্দীনকে মৃত ঘোষণা করেন।
গজারিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম জহিরুল করিম জানান, বিদ্যুৎ লাইনের নিচে ভবন ঢালাই হচ্ছে বিষয়টি অফিসকে জানানো হয়নি। দুর্ঘটনার পর একাধিক মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এই সংবাদটি জানতে পেরেছি। বিদ্যুৎ লাইন না সরিয়ে অনুমতি ছাড়া ভবনের নির্মাণ কাজ করা অবৈধ। বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রইছ উদ্দিন জানান, আহত ও নিহতদের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।