মুন্সিগঞ্জ, ১ ডিসেম্বর ২০২৪, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
গত ৪ আগস্ট মুন্সিগঞ্জ শহরের সুপারমার্কেটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বাম পায়ের হাটুর নিচে গুলিবিদ্ধ হন উত্তর ইসলামপুরের বাসিন্দা যুবদল নেতা মো. মাসুদ রানা (৪৮)। ঘটনার ৪ মাস পার হলেও এখনো মাসুদের দিন কাটে আতঙ্কে।
এ ঘটনায় কোন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়নি এখনো। তবে, সম্প্রতি গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় সদর থানায় একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়েরের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন শহর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান আহবায়ক কমিটির ১ নং সদস্য মাসুদ রানা।
তিনি জানান, ৪ আগস্ট সকালে শহরের সুপারমার্কেট এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে অংশ নেয়া ছাত্র-জনতার সাথে তিনিও যোগ দেন। দুপুর আড়াইটার দিকে পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের (নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন) নেতাকর্মীরা এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়তে থাকলে মাঝখানে পড়ে যান মাসুদ। হঠাৎ করে বাম পায়ে গুলি লেগে যায় তার।
গুলি লাগার পরে রক্ত বের হতে থাকে। সাথে থাকা লোকজন ধরাধরি করে উত্তর ইসলামপুরের ভেতর দিকে নিয়ে যায় মাসুদকে। এসময় তার পরিহিত শার্ট ও প্যান্ট কেটে ব্যান্ডেজ করে দেন কয়েকজন।
মাসুদ রানা বলেন, ‘পরিস্থিতি এরকম ছিলো যে, গুলি নিয়ে সদর হাসপাতালে যাওয়ার উপায় ছিলো না। ওই এলাকায় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়ে আহতদের চিকিৎসা নিতে বাঁধা দেয়। অনেক আহতকে তারা পুনরায় মারধর করে আরও আহত করে। আমার পরিবার এ খবর পেয়ে আমাকে মুন্সিগঞ্জ লঞ্চঘাট এলাকা থেকে ট্রলারে করে নারায়ণগঞ্জের চাষাড়ায় নিয়ে যায়। সেখানে পলী ক্লিনিক নামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে অপারেশন করে আমার গুলি বের করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘সেদিনের স্মৃতি ভোলার মত না। গুলিবিদ্ধ হয়েও চিকিৎসা নিতে না পারাটা বিভৎস। এখনো আতঙ্কে থাকি। পরদিন সরকার পতন না হলে আমার বাড়িঘর, গরুর ফার্ম পুড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছিলো আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।’
‘আমি এখন ন্যায়বিচার চাই। একটি মামলার প্রস্তুতিও নিয়েছি। যারা জড়িত তাদের সঠিক বিচার চাই।’- যোগ করেন মাসুদ।
মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি সজিব দে বলেন, ‘ছাত্র-আন্দোলনের ঘটনায় অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’