১৩ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
বৃহস্পতিবার | রাত ১০:০৭
মুন্সিগঞ্জে খাল থেকে নারীর দেহবিহীন মাথা উদ্ধারের ঘটনায় একজনের যাবজ্জীবন
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)

মুন্সিগঞ্জে খাল থেকে এক নারীর দেহবিহীন মাথা উদ্ধারে গ্রেপ্তারকৃত আসামি সোহেলকে (৩৫) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

ঘটনার ৫ বছর পর গতকাল রোববার বেলা ১১টার দিকে মুন্সিগঞ্জ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কাজী আবদুল হান্নান এ রায় দেন৷ একই মামলায় অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় আসামি রিতা আক্তারকে অভিযোগ থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।

মুন্সিগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক জামাল উদ্দিন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত সোহেল লক্ষীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার উত্তর চরপাতা গ্রামের মৃত আয়াতুল্লাহর ছেলে।

আদালত ও মামলা সূত্রে জানা যায়, বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জ থানার উত্তর সুতালড়ি গ্রামের বাসিন্দা পলি আক্তার রিতা ঢাকায় ভাড়াটিয়া বাসায় বসবাস করতেন। ২০১৮ সালের ১৫ মার্চ বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন তিনি। এসময় তার সাথে দণ্ডপ্রাপ্ত সোহেলের পরিচয় হয়। ঘটনাক্রমে সোহেল রিতাকে হত্যা করে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের রতনপুর এলাকার একটি ডোবায় নিয়ে ফেলে দেয়। সেখান থেকে সাতদিন পর ২২ মার্চ দেহবিহীন একটি মাথা উদ্ধার করে পুলিশ। পরে রিতার স্বামী নাকফুল, চুল ও মুখমন্ডল দেখে তাকে সনাক্ত করেন।

এ ঘটনায় নিহত রিতার ভাই মনির হোসেন এজাজ (৩৫) বাদী হয়ে মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ সন্দেহজনক হিসেবে দণ্ডপ্রাপ্ত সোহেল ও অপর নারী রিতা আক্তার ববিতাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করলে সোহেল দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

৮ জন সাক্ষীকে জেরা ও আসামির জবানবন্দির ওপর ভিত্তি করে রোববার আদালত আসামি সোহেলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেন।

সরকার পক্ষের আইনজীবি আব্দুল মতিন জানান, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সোহেলের বিরুদ্ধে নির্মমভাবে ভিকটিম পলি আক্তার রিতাকে হত্যা করে লাশ বিচ্ছিন্নভাবে গুমের চেষ্টার অভিযোগ আদালতে প্রমাণিত হয়েছে। আদালত আসামিকে পেনাল কোডের ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন। একই মামলায় লাশ গুমের অপরাধে ৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং দশ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেয়া হয়। মামলায় অপর আসামি রিতা আক্তার ববিতার বিরুদ্ধে ঘটনায় জড়িতের বিষয়ে কোন প্রমাণ না পাওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।

মুন্সিগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক জামাল উদ্দিন জানান, রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

error: দুঃখিত!