২রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সোমবার | দুপুর ১:০৩
Search
Close this search box.
Search
Close this search box.
মুন্সিগঞ্জে ছাত্রলীগ নেতা ও কিশোর গ্যাং লিডার কুপিয়ে মারলেন যুবককে
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ১০ জুন, ২০২১, সদর প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)

মুন্সিগঞ্জ সদরে পূর্ব বিরোধের জের ধরে স্ত্রী, মা ও বোনের সামনেই নয়ন মিজি (৩৩) নামের এক যুবককে মারধর ও কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় একজন ছাত্রলীগ নেতা ও এক কিশোর গ্যাং লিডারের বিরুদ্ধে।

গতকাল বুধবার (৯ জুন) বিকালে সদর উপজেলার রামপাল ইউনিয়নের কাজী কসবা এলাকায় এ মারধরের ঘটনা ঘটে। আজ বৃহস্পতিবার (১০ জুন) সকাল ১১টার দিকে রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নয়নের মৃত্যু হয়।

নিহত নয়ন স্থানীয় রামপাল ইউনিয়নের উত্তর কাজী কসবা এলাকার মৃত বাতেন মিজির ছেলে।

নিহতের স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি নয়ন কাজী কসবা এলাকায় হাঁস-মুরগির একটি খামার তৈরি করলে রামপাল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত শেখ ও স্থানীয় কিশোর গ্যাং লিডার ও কথিত ছাত্রলীগ নেতা শোভন তালুকদার তার কাছে চাঁদা চায়। নয়ন চাঁদা না দেয়ায় এ নিয়ে নয়নের সাথে বিরোধ তৈরি হয়।

এ ঘটনার জেরে গতকাল বুধবার বিকালে কাজী কসবা এলাকায় একটি পেপার মিলের সামনে নয়নকে পেয়ে ছাত্রলীগ নেতা প্রান্ত শেখ, কিশোর গ্যাং লিডার শোভন, চঞ্চল, রনি, কাঞ্চন সহ ৭-৮ জন ধরে রড ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মারধর করতে থাকে। খবর পেয়ে নয়নের মা রাশিদা বেগম, নয়নের বোন ও স্ত্রী ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে তাদের সামনেই চাপাতি দিয়ে নয়নকে কুপিয়ে গুরুতর জখম ও আহত করে।

এসময় নয়নকে বাঁচাতে চিৎকার করলে তার স্ত্রীকেও মারধর করে প্রান্ত-শোভন। ঘটনার সময় হাতিমাড়া ফাড়ির দুইজন পুলিশ সদস্য দাড়িয়ে থাকলেও তারা নিরব ভূমিকা পালন করে। নয়নের বোন চিৎকার তাদের সাহায্য চাইলেও অজ্ঞাত কারনে তারা নিরব থাকেন।

পরে মারধরকারীরা নয়নকে মোটরসাইকেলে বেঁধে টেনে হেঁচড়ে নিয়ে রাস্তার অদূরে ফেলে যায়। সেখান থেকে মূমুর্ষ আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় পরে ঢাকা মেডিকেলে প্রেরণ করা হয়। বুধবার রাতে তাকে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বৃহস্পতিবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিনহাজ আবেদিন বলেন, এ ঘটনায় প্রথমে মারামারির অভিযোগ ও পরে হত্যা মামলা হয়েছে। এজহারনামীয় ৯ জন আসামীর মধ্যে ২ জনকে ধরতে আমার সক্ষম হয়েছি। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

এদিকে এ হত্যাকান্ডের বিচারের দাবিতে দুপুর দেড়টার দিকে মুক্তারপুর-টংগিবাড়ী সড়কের সিপাহীপাড়া চৌরাস্তায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। এতে কিছু সময়ের জন্য এ সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

ঘাতক প্রান্ত-শোভন গংদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, যৌন হয়রানি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও এই এলাকায় কিশোর গ্যাং নিয়ন্তণ সহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগ রয়েছে থানায়। তবে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে দৃশ্যত ব্যবস্থা নেয়নি। মুন্সিগঞ্জ শহরের এক শীর্ষ রাজনৈতিক নেতার ছত্রছায়ায় তারা দীর্ঘদিন যাবৎ এসব অপকর্ম করছিলো বলে জানান স্থানীয়রা।

error: দুঃখিত!