মুন্সিগঞ্জ, ২৬ জানুয়ারি, ২০২১, বিশেষ প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া শুরু করতে যাচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। এ লক্ষ্যে সকল ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছেন তারা।
মুন্সিগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ আবুল কালাম আজাদ করোনাভাইরাসের টিকা প্রসঙ্গে ‘আমার বিক্রমপুর’ তে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, অগ্রাধিকার পাওয়া মানুষের তালিকা তৈরি করতে উপজেলা, জেলা ও সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
সিভিল সার্জন জানান, ‘মুন্সিগঞ্জের জন্য প্রথম পর্যায়ে ৪৮০০ টি টিকা বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রতিটি টিকার ভায়াল থেকে ১০ জনকে টিকা দেয়া যাবে। সেই হিসাবে প্রথম পর্যায়ে মুন্সিগঞ্জের ৪৮ হাজার মানুষকে করোনাভাইরাসের টিকা আমরা দিতে পারবো।’
‘আমরা ইতিমধ্যে একটি কমিটিও করেছি। যাদের সমন্বয়ে টিকা প্রদান কার্যক্রম পরিচালিত হবে।’
ডাঃ আবুল কালাম আজাদ আরও জানান, আমরা যেখানে টিকাগুলো সংগ্রহ করবো সেখানে সবকিছু প্রস্তুত করা হয়ে গেছে। এবং সেখানে যাতে নিরবিচ্ছিন্ন বিদুৎ সরবরাহ রাখা যায় সেজন্যে পল্লী বিদ্যুৎয়ের কর্মকর্তারাও ব্যবস্থা নিচ্ছেন। আগামীকাল প্রধানমন্ত্রী টিকা কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন। এরপর ১ সপ্তাহ পর্যবেক্ষণ করা হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে মুন্সিগঞ্জে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ফেব্রুয়ারি মাসের ৭/৮ তারিখ টিকা দেয়া শুরু হবে।
তিনি জানান, টিকাদানের জন্য একটি করে টিম থাকবে। ২ জন স্বাস্থ্য কর্মী ও ৪ জন স্বেচ্ছাসেবক। তাদের আগেই প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। প্রথম পর্যায়ে জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সগুলোতে টিকা দেয়া হবে। টিকা নেয়ার জন্য সবাইকে ‘সুরক্ষা’ নামক অ্যাপসের মাধ্যমে রেজিষ্ট্রেশন করতে হবে। যে কোন ব্যাক্তি সেখানে রেজিষ্ট্রেশন করতে পারবেন। রেজিষ্ট্রেশন এর পর টিকা দেয়ার স্থান, তারিখ, সময় জানিয়ে দেয়া হবে। প্রত্যেক কে দুই ডোজ করে টিকা নিতে হবে। প্রথম ডোজ নেয়ার ৮ সপ্তাহ পরে দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে। ডোজ সম্পন্ন হলে একটি সার্টিফিকেট দেয়া হবে।
প্রথমেই করোনাভাইরাসের টিকা যারা দিবে তাদের এরপর চিকিৎসার সাথে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মী, সাংবাদিক, প্রশাসনের লোক, মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষা কর্মী সবাইকেই ধাপে ধাপে টিকা দেয়া হবে। সাধারণ মানুষও ধাপে ধাপে টিকা পাবে।
সিভিল সার্জন জানান, ১৮ বছরের নিচে, গুরুতর ডায়াবেটিকস ও উচ্চরক্তচাপ সম্পন্ন মানুষ, গর্ভবতী নারী অথবা গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি, সম্প্রতি অন্তত ৪ সপ্তাহের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এরকম কেউ টিকা নিতে পারবেন না। তারা পরে টিকা নিতে পারবেন।
আগামী ছয় মাসে তিন কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। প্রতি মাসে ২৫ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া হবে। জনপ্রতি দুটি করে মাসে ৫০ লাখ ডোজ টিকার প্রয়োজন হবে।
ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা এরই মধ্যে দেশে এসেছে। ২১ জানুয়ারি ভারত ২০ লাখ ডোজ টিকা উপহার হিসেবে পাঠিয়েছে। আর ২৫ জানুয়ারি সোমবার, ভারত থেকে কেনা ৫০ লাখ ডোজ দেশে এসেছে।
২৭ জানুয়ারি থেকে টিকা দেওয়া শুরু হবে। ওই দিন বেলা সাড়ে তিনটায় টিকাদান কর্মসূচি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।