মুন্সিগঞ্জ, ২ জুন, ২০২১, সদর প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার দেওয়ানকান্দি গ্রামে এক গৃহবধূ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্নহত্যা করেছে।
ময়নাতদন্ত শেষে আজ বুধবার (২ জুন) বিকালে ওই গৃহবধূকে দেওয়ানকান্দি কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
জানা গেছে, মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার দেওয়ানকান্দি গ্রামের খোরশেদ মোল্লার মেয়ে সীমা খাতুন (৩০) এর সাথে পাশ্ববর্তী টংগিবাড়ী উপজেলার সরিষাবন গ্রামের জয়নাল হালদারের ছেলে মালয়েশিয়া প্রবাসি কাওসার হালদারের ১০ বছর আগে বিয়ে হয়। ২ বছর আগে কাওসার ধারদেনা করে মালয়েশিয়া পাড়ি জমান। কিন্তু লকডাউনের কারনে মালয়েশিয়া ঠিকমতো কাজ করতে পারেনি কাওসার। এতে ধারদেনা নিয়ে বিপাকে পরে সে। পরে কাওসার ওই ধারদেনা পরিশোধের জন্য তার স্ত্রী সীমা খাতুন এর বাবা বাড়ি হতে ২ লাখ টাকা এনে দিতে বলে। কিন্তু সে এনে দিতে পারেনি।
এ নিয়ে বিগত প্রায় ২ মাস যাবৎ সীমার শশুর জয়নাল হালদার ও শাশুড়ি আমেনা বেগম সীমাকে নির্যাতন শুরু করে। বিগত প্রায় ১৫ দিন আগে স্বামী কাওসার কথা বলা বন্ধ করে দেয়। পরে সীমা গত শুক্রবার ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে ঘরের মধ্যে অচেতন হয়ে পরে থাকে। পরে তার মা পারভিন বেগম মেয়েকে দেখতে গেলে গিয়ে দেখে তার মেয়েকে হাত-পা বেঁধে রেখেছে। পারভিন বেগম হাত পা বাধার কারন জিজ্ঞাসা করলে তার সামনেই শশুড়-শাশুড়ি সীমাকে বেধড়ক মারধর করে।
সীমার মা পারভীন বেগম জানান, আমার মেয়েকে হাত পা বেধে মারার পর আমার সামনে গলায় পারা দিয়ে দাড়িয়ে থাকে ওর শশুড়। এ সময় আমি ওর শশুড়কে বলি ওতো মারা যাবে বলে শশুড়কে ধাক্কা দিয়ে গলার উপর হতে সড়িয়ে দেই। পরে ওই গৃহবধূকে ঘরে তালা দিয়ে আটকে রাখে শশুড় জয়নাল।
এ ঘটনার দুদিন পরে গত সোমবার ওই গৃহবধুকে বাড়ি হতে তাড়িয়ে দেয় শশুড়। পরে সীমা খাতুন তার বাবার বাড়ি সদর উপজেলার দেওয়ানকান্দি গ্রামে এসে পাগলের মতো আচরন করতে থাকে৷ পরে গত মঙ্গলবার সকালে সীমা তার ছোট বোনের ইমোতে একটি এসএমএস পাঠায়। ওই এসএমএসে সীমাকে বলতে শুনা যায় তুই তর দুলাভাইরে বলিছ হের মায় ও বাবায় আমারে মারলো। বাবায় পেটে লাথি মারলো এখন আবার আমাকে বাড়ি যেতে নিষেধ করছে। আমি কি দোষ করলাম। তাহলে কি তুমি চাও পোলাপাইন লইয়া আমি চাকুরী করে খাই।
নিহত সীমার বোন লিমা আক্তার জানাই আমার দুলাভাই বোনের সাথে কথা বলতো না তাই আমার ইমুতে এসএমএস করে আমার বোন আমার দুলাভাইকে ওই কথাগুলো বলতে বলছে।
এ ব্যাপারে মুন্সিগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুবকর সিদ্দিক জানান, এ ঘটনায় এখনো কোন মামলা হয়নি। অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।