মুন্সিগঞ্জ, ৪ জানুয়ারি, ২০২৩, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জ সদরে দশম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। নিহত স্কুলছাত্রীর পরিবারের দাবি, নিছক মৃত্যু নয় তাদের মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টা’র দিকে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার মধ্য কোর্টগাও এলাকার সৌদি আরব প্রবাসী সেলিম মাহমুদের মেয়ে আলবার্ট ভিক্টোরিয়া যতীন্দ্র মোহন গভ. গার্লস হাই স্কুলের (এভিজেএম) দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী জেসি মাহমুদ (১৭) কে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে স্বজনরা।
মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. শৈবাল বসাক জানান, সন্ধ্যা ৬টা’র দিকে অচেতন অবস্থায় মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসে তার ভাই পরিচয় দেয়া আরেক যুবক। তিনি আমাদের বলেন মেয়েটি ৫তলা ছাদ থেকে পড়ে গেছে। তবে তার শরীরে এরকম কোন লক্ষণ দেখা যায়নি। ঐ যুবক তার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারটিও রেজিস্ট্রার খাতায় লিপিবদ্ধ করেন। এবং নাম লেখেন আরিফ। পরে মেয়ের শারিরীক অবস্থার অবনতি দেখা দিলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
নিহতের বড় ভাই জিদান অভিযোগ করে বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা’র দিকে প্রতিবেশী আরিফুর রহমানের ছেলে বিজয় ফোন দিয়ে জানায় আমার বোন হাসপাতালে আছে। সে তাদের বাসার ছাদ থেকে পড়ে গেছে। এরপর আমি দ্রুত হাসপাতালে এসে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে বোনকে নিয়ে ঢাকায় রওনা হই। পথিমধ্যে মুক্তারপুর সেতু পার হতেই দেখি তার শ্বাস-নিঃশ্বাস কাজ করছে না। এরপর আর তাকে ঢাকা না নিয়ে হাসপাতালে ফেরৎ আসি। হাসপাতালে আসার পর চিকিৎসক জানান সে মারা গেছে।
তিনি বলেন, আমার বোন কিভাবে তাদের বাসার ছাদে গেল জানিনা। ওরা আমার বোনকে পরিকল্পিতভাবে বাসার ছাদে নিয়ে মারধর করে মেরে ফেলেছে। নিহতের মা রিনা বেগমও একই দাবি করেন।
অভিযোগের বিষয়ে শহর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য আরিফুর রহমান বলেন, আমার বাসার ছাদ খোলা থাকে। মেয়েটি কিভাবে আমার বাসার ছাদে উঠেছে আমরা বুঝতে পারছি না। আমার বাসার ছাদ থেকে লাফ দিয়েছে বলে আমি শুনেছি। আমরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেছি। হাসপাতাল থেকে ঢাকায় রেফার্ড করে। এরপর শুনেছি সে মারা গেছে। আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য নয়।
সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থান্দার খায়রুল হাসান বলেন, ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে রয়েছে। পরিবারের হত্যার অভিযোগ এবং প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত তথ্য দুটি সূত্র ধরেই আমরা কাজ করছি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে চূড়ান্তভাবে বলা যাবে ঘটনাটি হত্যা না নিছক আত্মহত্যা। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।