মুন্সিগঞ্জ, ১৭ জুন ২০২৩, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে আবারও সরকারি জমিতে মাটি ভরাট করা হচ্ছে।
শ্রীনগর-দোহার আঞ্চলিক সড়কের শ্রীনগর বাইপাস জুশুরগাঁও মিল্কভিটার পশ্চিমদিকের সড়কের দক্ষিণ পাশে সরকারি জলাধার ভরাট করা হচ্ছে।
উপজেলার পাটাভোগ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী রমিজউদ্দিন বেপারীর ছত্রছাঁয়ায় তার জামাতা যুবলীগ নেতা মো. সোহেলের নেতৃত্বে জায়গাটি ভরাটের কর্মযজ্ঞ চলছে বলে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের পাশে জেলা পরিষদের জায়গাসহ জলাশয় ভরাটে ড্রাম ট্রাক দিয়ে দূর থেকে বালু এনে ফেলা হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, বছর খানেক আগেও জায়গাটি ভরাটের জন্য সোহেল চেষ্টা করেছিল। রমিজ গং জলাধারটি ফের ভরাট কাজ শুরু করেন। এরই মধ্যে রমিজউদ্দিন বেপারী গং মিল্কভিটা সংলগ্ন সড়কের উত্তর পাশে গণপূর্তের জায়গা ভরাট করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ কাজ করছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এর আগে ভূমি সিন্ডিকেটটি বাংলাদেশ সরকার পক্ষের গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নগর উন্নয়ন অধিদপ্তরের জায়গা ভরাট করে। এ নিয়ে চলতি বছরের প্রথম সপ্তাহ জুড়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ভরাটকৃত জায়গার সচিত্র সংবাদ প্রকাশিত হলেও প্রভাবশালী মহলটিতে থামানো যায়নি।
মহলটি গণপূর্তের ওই জায়গায় এখন পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছেন। অথচ সংবাদ প্রকাশের পর গণপূর্ত বিভাগীয় পি ডব্লিউ ডি (সাব-ডিভিশন) মুন্সিগঞ্জের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নাজমুল হাসান হিরা সরেজমিনে এসে জায়গাটি পরিমাপ করে ভরাটকৃত জায়গার মাটি অপসারণের জন্য বলে যান। এতেও কোন ফল দেখা যায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুশুরীপাড়া মৌজায় ২নং খতিয়ানের আরএস ১৪টি দাগে মোট সম্পত্তির পরিমান ১২ একর ২৫ শতাংশ। রেকর্ড অনুযায়ী এসব সম্পত্তির মালিক গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নগর উন্নয়ন অধিদপ্তর।
গণপূর্ত নগর উন্নয়ন মন্ত্রণালয়। এসব জায়গার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা। ভূমি সিন্ডিকেটটি এখন মিল্কভিটার পশ্চিম পাশে জেলা পরিষদের জায়গাটি ভরাট শুরু করায় জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।
মো. সোহেলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যা কিছুই করা হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের জানিয়েই করা হচ্ছে। জায়গা ভরাটের কোন ছাড়পত্র আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন কথা না বলে এড়িয়ে যান।
পাটাভোগ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রমিজউদ্দিন বেপারীর কাছে জানতে চাইলে তিনি দাবি করেন, জেলা পরিষদ থেকে তারা লীজ এনেছেন। লীজকৃত জায়গা মাটি ভরাট করা লীজ শর্তের মধ্যে পড়ে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে এড়িয়ে যান।
মুন্সিগঞ্জ জেলা পরিষদের সার্ভেয়ার মো. ঈসমাইল হোসেন এ ব্যাপারে জানান, লীজকৃত জায়গা ভরাটের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়নি। পাকা স্থাপনা নির্মাণের তো প্রশ্নই আসেনা। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।