১৩ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
শুক্রবার | ভোর ৫:০০
Search
Close this search box.
Search
Close this search box.
মুন্সিগঞ্জে অটো ছিনতাইয়ের পর গলা কে.টে হত্যার দায়ে মামা-ভাগ্নের ফাঁ.সি
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)

৪ বছর আগে মুন্সিগঞ্জের টংগিবাড়ীতে তালের শাঁস নেয়ার কথা বলে চালককে বাগানে নিয়ে অটো ছিনতাইয়ের পর গলাকেটে হত্যার দায়ে মামা ও ভাগ্নের ফাঁসি ও অর্থদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত।

আজ বুধবার দুপুর ১ টার দিকে মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক বেগম খালেদা ইয়াসমিন উর্মি এই রায় দেন।

মুন্সিগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক জামাল উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, টংগিবাড়ী উপজেলার নেত্রাবর্তী গ্রামের মৃত সায়েদ সেখের পুত্র ইলিয়াস শেখ (৩২) ও তার ভাগ্নে লৌহজং উপজেলার ছত্রিশ গ্রামের মীর হোসেন মুন্সীর পুত্র রাকিবুল ইসলাম রাকিব (২৩)।

নিহত অটোচালক সাহাবুদ্দিন শেখ (২২) টংগিবাড়ী উপজেলার চাষিরী গ্রামের আবুল শেখের পুত্র। রায় ঘোষণার সময় তারা আদালতেই উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদের কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

মামলার অভিযোগ বিবরণী থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের ২৪ মে নিহত শাহাবুদ্দিন প্রতিদিনের মতো সকালে অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। যথারিতি সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে আসার কথা থাকলেও বাড়ি না ফেরায় অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পাওয়ায় নিহতের পিতা আবুল শেখ পরদিন ২৫ মে টংগিবাড়ী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।

পরবর্তীতে ২৭ মে নিহতের পিতার কাছে খবর আসে একই উপজেলার আড়িয়ল ইউনিয়নের কুড়মিরা গ্রামের একটি জঙ্গলে সাহাবুদ্দিনের মৃতদেহ পড়ে আছে। পরে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে এই ঘটনায় সাথে জড়িত সন্দেহে চারজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ঘটনার তদন্তে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) জানতে পারে, ঘটনার দিন সকাল ৯ টার দিকে টংগিবাড়ী উপজেলার সানেবান্দা এলাকা হতে নিহত শাহাবুদ্দিনকে ভাড়া করে টংগিবাড়ী উপজেলার কুরমিরা হতে বালিগাঁও বাজারে তালের শাঁস নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ভাড়া করে কুড়মিড়া গ্রামে নিয়ে যায়। পরে নির্জন বাগানে নিয়ে আসামি ইলিয়াস প্রথমে গলায় গামছা পেচিয়ে চাপ দিয়ে ধরে এবং রাকিব নিহতের হাত পা ধরে রাখে। পরে তাকে বাগানের পাশের নিচু জমিতে মৃত ভেবে ফেলে দিলে আসামিরা দেখে সাহাবুদ্দিন নাড়াচারা করছে। পরে ইলিয়াস নিহতের গলায় দুটি দা দিয়ে কোপ দিয়ে তার শ্বাসনালী কেটে হত্যা নিশ্চিত করে তার অটোরিকশা ও পকেটে থাকা মোবাইল  নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে ইলিয়াস মোবাইলটি নিয়ে তার পরিচিত সালাম নামের এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেয়। পরে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে সালামকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলে সে এই মোবাইলটি আসামি ইলিয়াসের কাছ থেকে কিনেছে বলে জানালে পুলিশ ইলিয়াসকে গ্রেপ্তার করলে মামলার রহস্য উদঘাটন হয়

নিহতের অটো কেনাবেচায় জড়িত থাকায় নিহতের বাবা আবুল সেখের মামলায় আরো ২ জনকে আসামি করে পুলিশ। তারা হলো সদর উপজেলার ডিঙ্গাভাঙ্গা গ্রামের হাজী ইব্রাহিম মাদবরের ছেলে রাকিব মাদবর (৩২) ও টংগিবাড়ী উপজেলার চাপ গ্রামের মৃত মতিন শেখের ছেলে কবির হোসেন। এই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস প্রদান করে আদালত।

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় মামলার বাদী নিহতের বাবা সাহাবুদ্দিন সেখ বলেন, আমি রিকশা চালিয়ে সংসার চালাই। আমার ৪ ছেলে-মেয়ের মধ্যে সাহাবুদ্দিন তৃতীয়। এই ছেলেটাই আমাকে আয় রোজগার করে দিতো। আমার সেই ছেলেটারে ওরা মেরে ফেললো। আদালত যে রায় দিয়েছে আমি তাতে সন্তুষ্ট। রায় দ্রুত কার্যকর দেখতে চাই।

error: দুঃখিত!