মুন্সিগঞ্জ, ১২ নভেম্বর, ২০২২, শিহাব আহমেদ (আমার বিক্রমপুর)
পেটের দায়ে মিশুক নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন অদম্য নারী সাহিদা (৩৮)। মুন্সিগঞ্জের পথে-প্রান্তরে যাত্রীসেবায় ছুটে চলেছেন তিনি।
সমস্ত প্রতিকুলতা আর সমাজের প্রচলিত ধারনার মুখে যেন কালী দিয়েছেন সাহিদা। স্বামী ছেড়ে চলে গেছে ২০ বছর আগে। এরপর মেয়েকেও বিয়ে দিয়েছেন। তবে সেখানেই থেমে থাকেননি। সকল লজ্জা, অপমান আর প্রচলিত ধারণা ৩ চাকার নিচে ফেলে জীবনযুদ্ধে লড়ে যাচ্ছেন সাহিদা।
ভিডিও:
সমাজের প্রচলিত সব ধারণার মুখে কালী মেড়েছেন। এভাবেই ‘বয়েই গেছে’ ভাব নিয়ে সমাজের চাপিয়ে দেওয়া ধারণাকে পায়ে দলে সাহিদা হয়ে উঠেছেন নারীশক্তির আঁধার।
সাহিদা বেগম ‘আমার বিক্রমপুর’ কে বলেন, ৭-৮দিন ধরে মিশুক চালাই। এর আগে বিভিন্ন কাজ করেছি। আবার ছেড়েও দিয়েছি। সর্বশেষ ভাইয়ের কাছ থেকে শিখে মিশুক চালাচ্ছি। তবে মিশুকটি নিজের নয়। ভাড়ায় নেয়া। দৈনিক যা আয় হয় তার বেশিরভাগই চলে যায় মহাজনের কাছে।
সাহিদার কদর এখন সব শ্রেণী-পেশার মানুষের কাছে। জীবন ও জীবিকার তাগিদে ব্যস্ততম মুন্সিগঞ্জ সদরের পথে-প্রান্তরে ব্যাটারিচালিত মিশুক চালক সাহিদা এখন দৃষ্টান্ত। তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন, নারীরাও পিছিয়ে নেই।
সাহিদার এমন আত্মনির্ভরশীলতা মুগ্ধ করেছে প্রতিবেশীদেরও। নিজের পায়ে দাড়িয়ে স্বাবলম্বী হয়ে উঠায় সাহিদার প্রশংসা করছেন তারা।
সাহিদার মা রানু বেগম জানালেন মেয়ের জীবন সংগ্রামের কথা। মুন্সিগঞ্জ সদরের বর্জযোগিনী ইউনিয়নের গুহপাড়া এলাকায় ভাঙাচোরা টিনের ঘরেই মাকে নিয়ে বসবাস সাহিদার।
গাড়ি চালাতে চালাতে অনেক সময় হাপিয়ে যান সাহিদা, তাতে কি, খানিক বিশ্রাম নিয়ে ফের ছুটে চলেন বীরদর্পে।
সাহিদা বেগম বলেন, আমার পেশাকে বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন চোখে দেখে। কেউ প্রশংসা করে আবার কেউ বিদ্রুপ করে। তবে আমি আমার কাজকে সম্মান করি। কাজকে ছোট করে দেখি না। এখন হয়তো আমি নতুন, তাই আয় কম হয়। এক সময় আমার পরিচিতি বাড়বে। আয় বেশি হবে।