মুন্সিগঞ্জ, ২০ জানুয়ারি, ২০২২, বিশেষ প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
২০১৯ সালের জানুয়ারিতে ‘ডিবি পুলিশ’ পরিচয়ে ৯০ ভরি সোনা লুটের অভিযোগে তৎকালীন মুন্সিগঞ্জ জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক এস এম সাকিব কে দুই সহযোগী সহ গ্রেপ্তার করে ঢাকার কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
ঘটনাটি সারা দেশে ব্যাপক আলোচিত হয়। ঘটনার ১ বছর পর সোনা লুটে অভিযুক্ত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা সাকিব উল্টো মামলা করেছেন সেই কোতোয়ালি থানার এক এসআই সহ ভুয়া পুলিশ পরিচয়দানকারী আরেক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
গতকাল বুধবার (১৯ জানুয়ারি) মুন্সিগঞ্জ জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সাবেক সহকারি পরিচালক এস এম সাকিব হোসেন অন্যায়ভাবে আটকে রেখে মারধর, মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগে রাজধানীর কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রুবেল মল্লিকসহ দুইজনের বিরুদ্ধে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলামের আদালতে এই মামলা দায়ের করেন।
অপর আসামি হলেন- ভুয়া ডিবি পুলিশ খসরু রোমান।
আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আগামী ২৯ মার্চ আসামিদের আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন।
মামলার আর্জি থেকে জানা যায়, গত বছর ১৮ জানুয়ারি বাদী সাকিব হোসেন মালিবাগ সিআইডি পুলিশের ট্রেনিং সেন্টার থেকে বিকেলে ভাটারা নূরের চালায় বোনের বাসায় যান। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে অ্যামেরিকান অ্যাম্বাসির অপর পাশে দাঁড়ান। তখন পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যান থেকে দুজন লোক নামেন। খসরু রোমান নিজেকে ডিবি এসি এবং রুবেল মল্লিক এসআই পরিচয় দেন। তখন তারা সাকিব হোসেনকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যেতে চান। সাকিব হোসেন অপরাগতা প্রকাশ করলে হাতে হ্যান্ডকাফ লাগিয়ে চোখ বেঁধে তাকে জোর করে গাড়িতে তোলেন। তারা ভিকটিমকে নিয়ে গাড়িতে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরেন।
এরপর ভিকটিমের কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন খসরু। এসআই রুবেল খসরুকে বলেন- সরকারি অফিসার টাকা নিয়ে ছেড়ে দিলে আমরা ফেঁসে যাবো। তার বিরুদ্ধে মাদক মামলা দে। একজন বলেন, ওকে বাসায় নিয়ে যা। বাসায় স্বর্ণের বার আছে তা দিয়ে ডাকাতি মামলায় আটক দেখিয়ে চালান দেই।
এসআই রুবেল বলেন- ১১ জানুয়ারির একটি অজ্ঞাত মামলা আছে ওকে জড়িয়ে দেই। এরপর আসামিরা বাসার ঠিকানা জেনে সাকিবকে তার বোনের বাসায় নিয়ে আসে।
আরও জানা যায়, আসামিরা সাকিবের বোনের বাসায় ঢুকে। তারপর খসরু সাকিবের ব্যাগের মধ্যে স্বর্ণের বার রেখে আসেন। পরবর্তীতে আসামিরা ভিকটিমকে মিথ্যা অভিযোগে অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়ে আদালতে প্রেরণ করার সময় তাকে মারপিট করে জখম করেন এবং ভয়-ভীতি প্রদান করেন। ১৯ জানুয়ারি আসামিরা ভিকটিমের বোনের বাসায় জোরপূর্বক প্রবেশ করে নগদ তিন লাখ টাকা, মোবাইল ফোন ও অন্যান্য মালামাল নিয়ে যায়।
মামলার বাদী মুন্সিগঞ্জ জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সাবেক সহকারি পরিচালক এস এম সাকিব হোসেন বলেন, পুরো ঘটনাটি সাজানো, মিথ্যা ও পরিকল্পিত। আমার সাথে অন্যায় হয়েছে। আমি সামাজিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। আমি ন্যায়বিচার চাই। তাই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।