মাহবুব আলম জয়ঃ প্রাচীন সভ্যতার। জনপদ মুন্সিগঞ্জ তথা বিক্রমপুরের গর্ব দেশ বরেণ্য বাউল শিল্পী শাহ আলম সরকার।
দেশের বাউল সংগীত অঙ্গনের এক অনন্য নক্ষত্রদের মধ্য অন্যতম।
বিভিন্ন গ্রন্থ ও উইকিপিডিয়া সূত্রে জানা যায় তিনি ১৯৬৫ সালে ১ ফেব্রুয়ারি জন্ম গ্রহণ করেন।
তিনি মুন্সিগঞ্জ জেলাধীন লৌহজং উপজেলার কুড়িগাঁও গ্রামের এক সম্ভান্ত ও ঐতিহ্যবাহী সংগীত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি নানাবাড়ী হলদিয়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন।
প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীর পূর্বে জীবন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন পারিবারিক প্রয়োজনে।
ঢাকার সদরঘাটে ফুটপাতে গার্মেন্টস এক্সসরিজের ব্যবসা করেন তিনি।
ইষ্টবেঙ্গল স্কুলে নাইট শিফটে ভর্তি হওয়া শর্তেও জীবন যুদ্ধের অনিবার্য কারণে লেখাপড়া আর হয়ে উঠেনি। জীবন সংগ্রাম ও বিশ্ব প্রকৃতির পাঠশালা তাকে স্বশিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলেন।
জানা যায় তাঁর দাদা গোলাম আলী বেপারী দরবারি সংগীতের সাথে খ্যাতিমান হিসেবে সম্পৃক্ত ছিলেন, বড় কাকা গোলাম মহিউদ্দিন বেপারী, অসংখ্য গানের গীতিকার ও সুরকার হিসেবে প্রশংসিত।
আরেক কাকা প্রখ্যাত বাউল সাধক মরমী কবি আব্দুস সাত্তার মহন্ত যার হাতে তার সংগীত জীবনের হাতে খড়ি। ফুফাজান করিম মুন্সী ও দরবারী সংগীতের শিল্পী হিসেবে সুনামধন্য।
শাহ্ আলম সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে গানের দীক্ষা নেন বিখ্যাত পালাগান শিল্পী আবুল সরকারের কাছে।
তিনি প্রায় আড়াই হাজার গানের রচয়িতা ও সুরকার। তাঁর প্রকাশিত গানের ক্যাসেট ও সিডির সংখ্যা সাড়ে পাঁচশত এর অধিক বলে জানা যায়।
তিনি বাংলাদেশ বেতার টেলিভিশনের নিয়মিত শিল্পী। প্রায় শতাধিক চলচিত্রে তিনি গীতিকার হিসেবে কাজ করেছেন।
তার কিছু উল্লেখযোগ্য গান হচ্ছে ফাইট্টা যায় বুকটা ফাইট্টা যায়, মায়ের কান্দন যাবত জীবন, আকাশটা কাঁপছিল ক্যান, বান্ধিলাম পিরিতের ঘর,
খর কুটার এক বাসা বাঁধলাম, হায়াতের তেল নিয়ে এসেছি এই দুনিয়াই, ইত্যাদি।
তাঁর ‘আকাশটা কাঁপছিল ক্যান’ গানটি ভারত বাংলাদেশ যৌথ প্রযোজনায় গৌতম ঘোষের ‘মনের মানুষ’ ছবিতে অন্তর্ভুক্ত হয়ে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করে।
বিক্রমপুরের এই কৃতি সন্তান পৈত্রিক ভূমিতে একটি বাউল একাডেমী করার স্বপ্ন দেখেন। তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সংবাদ সংস্থা অ্যাওয়ার্ড, কালচারাল অ্যাওয়ার্ড ও জেলা শিল্পকলা একাডেমী সম্মাননা সহ বেশ কিছু সংর্বধনা পেয়েছেন।
মুন্সিগঞ্জ জেলার এই কৃতি সন্তান সংগীতের ফেরিওয়ালা হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।