ডিএমপি’র গোয়েন্দা ও অপরাধতথ্য বিভাগ বুধবার রাতে রাজধানীর মেরুল বাড্ডা এলাকা থেকে একজন ফেসবুক হ্যাকারকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নাম মাহমুদুল হাসান (২০)। এ সময় তার হেফাজত হতে ০১ (এক) টি পার্সোনাল কম্পিউটার ও ০১ টি মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত জানায়, সে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ সেমিস্টারের ছাত্র। নিজেকে তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ে অভিজ্ঞ বলে দাবী করে সে। সে ফিশিং, কী-লগার প্রোগ্রাম এবং সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পদ্ধতির মাধ্যমে বিভিন্ন ফেসবুক একাউন্ট হ্যাক করে থাকে। সে একটি একাউন্ট হ্যাক করে তার ফ্রেন্ড লিস্টে থাকা ভুক্তভোগীর User Name বাছাই করে তার ফেসবুক একাউন্ট হ্যাক করে এবং ভূক্তভোগীর ব্যক্তিগত সকল তথ্য ও ছবি হস্তগত করে। পরে ভূক্তভোগীর নতুন ফেসবুক একাউন্ট-এর সাথে মাহামুদুল হাসানের পূর্বে হ্যাকডকৃত “কামাল আহম্মেদ” নামে আর একটি একাউন্ট হতে চ্যাট করে।
ফেসবুক চ্যাটের মাধ্যমে সে ভূক্তভোগীর একান্ত ব্যক্তিগত কিছু ছবি ভূক্তভোগীকে পাঠিয়ে তার সাথে অশালীন সম্পর্ক করার প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবে রাজি না হলে ঐ ছবিগুলো ফেসবুকসহ সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করার হুমকি দেয় এবং স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করে এবং উক্ত ফেসবুকের নিয়ন্ত্রণ তার হাতে নিয়ে নেয়। সে একটি একাউন্ট হ্যাক করে ঐ একাউন্টের ফ্রেন্ড লিস্টে থাকা মেয়েদের একাউন্ট হ্যাক করে থাকে। এক্ষেত্রে সে বিবাহিত এবং যার স্বামী বিদেশে থাকে এমন মেয়েদের একাউন্টই টার্গেট হিসাবে বেছে নেয়।
সে আরও জানায় যে, এ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক ব্যবহারকারীর ফেসবুক পাসওয়ার্ড হ্যাক করেছে। সকল তথ্যই তার ব্যক্তিগত কম্পিউটারে সংরক্ষিত আছে।
উল্লেখ্য গত ২৯/০৫/২০১৫ তারিখ জনৈক ভূক্তভোগীর একটি ফেসবুক একাউন্ট হ্যাকড হলে ভূক্তভোগী তার একাউন্ট ব্যবহার করতে পারছিল না। ফলে ভূক্তভোগী নতুন আর একটি ফেসবুক একাউন্ট খোলেন। গত ২৯ জুন Kamal Ahamad নামের একটি একাউন্ট থেকে ভূক্তভোগীর নতুন একাউন্টে যৌন-নিপিড়নমূলক মেসেজ ও ছবি আসে। পরবর্তীতে ভূক্তভোগীর একান্ত ব্যক্তিগত তথ্য হ্যাককারীর দখলে রয়েছে জানিয়ে ভূক্তভোগীকে তার সাথে অশালীন সম্পর্ক করার প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবে রাজি না হলে তার একান্ত ব্যক্তিগত তথ্য ও ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করার হুমকি দেয়। এতে ভূক্তভোগীর স্বামী গত ০১/০৭/১৫ তারিখ যাত্রাবাড়ী থানায় তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি (সংশোধণী) আইনে একটি মামলা রুজু করেন। পরবর্তীতে ডিবি-পুলিশ মামলাটির তদন্ত শুরু করলে প্রযুক্তির সহায়তায় এক পর্যায়ে মাহমুদুল হাসানকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
ডিসি ডিবি(পূর্ব) মোঃ মাহবুব আলম এর নির্দেশনায় এডিসি এএইচএম আব্দুর রকিব এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার মাঈনুল ইসলাম এর নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।