মুন্সিগঞ্জ, ১৯ নভেম্বর, ২০২২, নাজির হোসেন (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জ সদরের দক্ষিণ চরমুশুরা গ্রামের কিশোরী আঁখি আক্তারের (১৫) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে প্রতিবেশী কিশোর আসিফ মাদবরের (১৬)।
তাদের প্রেমের সম্পর্ক জানাজানি হলে মা-বাবার গালমন্দ আর বঞ্চনার কবলে পড়েন কিশোরী। গত ৪ মাস আগে বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হয় আঁখি। এতে তার পরিবার প্রথমে থানায় প্রেমিক আসিফ ও পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
এরপর স্থানীয় ভাবে একাধিকবার বিচার সালিশি ও দেনদরবার বসে। তাতে বরবারই কিশোরীর নিরুদ্দেশের সঙ্গে জড়িত না থাকার কথাই সাফ জানিয়ে আসে প্রেমিক আসিফ ও তার পরিবার। এভাবেই পেরোয় ৪ মাস।
এরপর প্রেমিক আসিফসহ পরিবারের ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অপহরণ মামলা দায়ের করেন প্রেমিকা আঁখির বাবা আলী আহমদ। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি হয়। এতে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলো পরিবারটি। এমনই রুদ্ধশ্বাস ঘটনার অবসান ঘটিয়ে স্বামীসহ কিশোরী আঁখি আক্তারকে (১৫) উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গেল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২ টার দিকে জেলার শ্রীনগর উপজেলার পাটাভোগ গ্রামের স্বামীর বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করে সদর থানা পুলিশ।
পরে জানা গেছে, কিশোরীকে তার প্রেমিক অপহরণ করেনি, সে নিজেই মা-বাবার বকুনি খেয়ে স্বেচ্ছায় নিরুদ্দেশ হয় কিশোরী। এরপর প্রেমিক নয় অন্যের সঙ্গে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে শুরু করে সংসার।
জানা গেছে, সদরের চরমুশুরা গ্রামের প্রতিবেশী আনজিল মাদবরের ছেলে আসিফ মাদবরের সঙ্গে আলী আহমদের মেয়ে আঁখির প্রেম চলে আসছিলো। তাদের সম্পর্ক জানাজানি হলে কিশোরী মেয়ে আঁখিকে গালমন্দ শুরু করে মা-বাবা। এতে প্রায় ৪ মাস আগে ওই কিশোরী বাড়ি থেকে হয়ে সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের পেট্রোল পাম্প এলাকায় চলে যায়। সেখানে সড়কে হাটাহাটি করার সময় বখাটেদের খপ্পড়ে পড়ে। এ সময় কিশোরীকে বখাটেদের হাত থেকে রক্ষা করে সেখানকার একটি কারখানার সুপারভাইজার রোমান দেওয়ান।
পরে তিনি, কিশোরীকে জেলার শ্রীনগর উপজেলার বেঁজগাঁও গ্রামের ভাড়া বাসায় নিয়ে যান। সেখানে তার স্ত্রী মিতু বেগমের সঙ্গে বসবাস করতে থাকে কিশোরী। গেলো ২৬ অক্টোবর শ্রীনগরের পাটাভোগ গ্রামের মজনু শেখের ছেলে বিদ্যুৎ শেখ (২৭) এর সঙ্গে কিশোরী আঁখির বিয়ে দেন রোমান ও মিতু দম্পতি।
আঁখি তার স্বামীর সঙ্গে সুখ স্বাচ্ছন্দ্যে সংসার করতে থাকেন। এর মধ্যে দু’দিন আগে কিশোরী তার ফুপুর কাছে মোবাইল ফোনে কল করে কথা বলে। পরে ওই মোবাইল ফোন নাম্বারের সূত্র ধরে গেল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে কিশোরীকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
সদর থানার ওসি মো. তারিকুজ্জামান জানান, গেল ১ নভেম্বর কিশোরী আঁখিকে অপহরণের অভিযোগে প্রেমিক আসিফসহ তার পরিবারের ৫ জনের বিরুদ্ধে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন বাবা আলী আহমদ। পরে ওই মামলায় প্রেমিক ও তার পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। বৃহস্পতিবার স্বামীসহ কিশোরীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।