মৃুুন্সিগঞ্জ, ১২জুন, ২০২২, লিটন মাহমুদ (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জের টংগিবাড়িতে ভেঙে পড়া পুরা বেইলি ব্রিজটি দুই বছরেও নির্মাণ করা হয়নি। ঢাকা টু দীঘিরপাড় যাতায়াতের প্রধান সড়কে ভেঙে পড়া পুরা সেতুটি দ্রুত নির্মাণের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
পুরা বেইলি ব্রিজটি গত ২ বছর আগে গাছের গুড়ি বোঝাই একটি ট্রাক অতিক্রম করার সময় ভেঙে পরে যায়। পরে পাশ দিয়ে একটি অস্থায়ী বেইলি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়।
প্রধান সড়কে এই ব্রিজটি দিয়ে টংগিবাড়ি উপজেলার হাজারো মানুষ প্রতিদিন চলাচল করছে। প্রধান এই সড়কের পাশ দিয়ে নির্মাণ করা এ অস্থায়ী সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন।
এর আগে গত ১৪ মে ব্রিজের গোড়ায় ব্যারিকেড না থাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রাইভেট কার খাদে পড়ে জিসান ও ফাহিম নামে দুই বন্ধু নিহত হয় এবং জাহিদ হাসান নামে এক যুবক গুরুতর আহত হয়।
এর আগেও একটি সিএনজি একই স্থানে পড়ে দিয়ে দুজন গুরুতর আহত হয়েছিলেন। ফলে দীর্ঘ ২ বছর ধরে এলাকাবাসী পাকা সেতু নির্মাণের জন্য দাবি জানিয়ে আসছেন।
স্থানীয়রা জানান, এই অস্থায়ী সেতুর ওপর দিয়ে এলাকার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। এতে আবারো যেকোনো সময় এই বেইলি ব্রিজে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। দ্রুত এই সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করার জন্য এই পথে যাতায়াতকারি ও স্থানীয়রা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছে।
সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙা সেতুটির পাশে একটি বেইলি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। ব্রিজটিতে বিভিন্ন স্থানে জোড়াতালি দেয়া রয়েছে। সেতুটিতে ঝুঁকি নিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে।
পুরা বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দা মো. রুবেল বলেন, দীর্ঘ দুই বছর আগে ব্রিজটি ভেঙে যাবার পর একে একে দুইটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে এই ব্রিজে, কিন্তু ব্রিজটি নির্মাণের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছেনা। ব্রিজটি এভাবে ভেঙে পড়ে থাকায় দুটি তাজা প্রাণ দিতে হয়েছে। যদি দ্রুত এটি নির্মাণ না করা হয় তবে আবারো বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
তিনি আরও জানান, এই ব্রিজের গোড়ায় মাটি পরীক্ষার জন্য একটি বড় গর্ত খুঁড়ে রাখা হয়েছে, গর্তটিতে বাজারের ময়লা আবর্জনা ফেলার কারনে পচা দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়েছে। বেড়েছে মশা—মাছির উপদ্রব। ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক কামরুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন এই ব্রিজের উপর দিয়ে হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। গত ১৪ই মে প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফাহিম ও জিসানের মৃত্যু হয়। এখন বাধ্য হয়ে জোড়া তালি দেওয়া বেইলি ব্রিজ দিয়ে হাজারো যানবাহন চলাচল করতে হচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব দুর্ঘটনা রোধকল্পে একটি পাকা সেতু নির্মাণ করা হোক।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) মুন্সিগঞ্জের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী ফাহিম রহমান খান জানান, ব্রিজটি নির্মাণের জন্য এখনো টেন্ডার হয়নি, স্টিমিট দেয়া হয়েছে। টেন্ডার দেয়ার আগে স্টিমিট দেয়া হয়। স্টিমিট পাশ হলে টেন্ডার দেয়া হবে। আশা করছি মাসখানেক এর মধ্যে টেন্ডার দেয়া হবে। ২০২০ সালে ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার পর পাশ দিয়ে চলাচলের জন্য একটি বেইলি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। ইতিপূর্বে ভেঙে পড়া বেইলি ব্রিজের সড়ক মুখে বেরিক্যাড ও সংকেত সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে।