মৃুুন্সিগঞ্জ, ২৫ মে, ২০২২, শিহাব আহমেদ (আমার বিক্রমপুর)
শেখ হাসিনার শাসনামলে পদ্মা সেতু যাতে না হয় এরকম নানা দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার একক সাহসিকতায় বাঙালির সক্ষমতার প্রতীক পদ্মা সেতু এখন যান চলাচলের জন্য পুরোপুরি উপযোগী। মূল সেতুর কাজের অগ্রগতি ছাড়িয়েছে ৯৮ শতাংশ। সার্বিক অগ্রগতি সাড়ে ৯৩ শতাংশের বেশি। সেতুতে চলছে শেষ পর্যায়ের কাজ। আর মাত্র ৩১ দিন পর এই সেতুর উদ্বোধন।
১৯৭১ সালে যেই আওযামী লীগের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছিলো সেই আওয়ামী লীগের হাত ধরেই দেশবাসীর দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে। গতকাল সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২৫ জুন সকাল ১০ টা’য় পদ্মা সেতু উদ্বোধন করার জন্য সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।
পদ্মা সেতু নির্মাণে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারকে দু’টো বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে।
প্রথম চ্যালেঞ্জ দেশের অভ্যন্তরীণ সম্পদ থেকে পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য অর্থ সংগ্রহ করা। এ লক্ষ্যে জাতীয় বাজেটে সম্পদ বৃদ্ধির জন্য করারোপ এবং অনেক নতুন খাতকে ভ্যাটের আওতাভুক্ত করা হয়। এক্ষেত্রে সরকারকে বিশেষভাবে বিবেচনা রাখতে হয়েছে যাতে শিল্পায়ন বাধাগ্রস্ত না হয়। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং সাধারণ মানুষের জীবনমান স্বাভাবিক রাখার বিষয়টিও শেখ হাসিনার সরকারকে বিবেচনায় রাখতে হয়েছে। সরকার সাফল্যের সঙ্গে সম্পদ আহরণের এ প্রচেষ্টায় সাফল্য অর্জন করে। সর্বস্তরের জনগণের সহায়তা না পেলে সরকারের একার পক্ষে হয়তো এ অর্থ সংগ্রহে বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হতো।
পদ্মা সেতু নির্মাণের দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ ছিল প্রমত্তা পদ্মার খেয়ালি চরিত্র। দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন নদীর পর পদ্মাই হলো সবচাইতে খরস্রোতা ও গভীরতম নদী। নদীতে স্রোতের গতিপথ বার বার পরিবর্তিত হওয়ায় সেতুর নির্মাণকাজ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং পরবর্তী সময়ে ডিজাইনে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে হয়। স্রোত এবং গভীরতার কারণে ২২টি পিলারে পাইলিংয়ের সংখ্যা বাড়ানো হয়। সবকিছু ছাপিয়ে পদ্মা মুল সেতুর কাজ এখন শেষের পথে।
পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পরে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলেই নয় সারাদেশেই আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা বাড়বে, এমনকি আগামী জাতীয় নির্বাচনে ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগ এগিয়ে থাকবে এমনটাই মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। গতকাল পদ্মা সেতু উদ্বোধনের তারিখ ঘোষণার পর মুন্সিগঞ্জের আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ নেতাদের সাথে কথা বলে এমন প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে।
মুন্সিগঞ্জ ২ আসনের সংসদ সদস্য সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার একক সাহসিকতা ও নেতৃত্বে স্বপ্নের পদ্মা সেতু আজ বাস্তবতা। দেশি-বিদেশি সকল ষড়যন্ত্র একমাত্র তিনি বলেই মোকাবেলা করতে পেরেছেন। আজ বাংলাদেশের মানুষ উচ্ছসিত-আনন্দিত। দিনক্ষণ গুনছেন তারা।
মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেন, দক্ষিণ বঙ্গের সাথে যোগাযোগের পাশাপাশি মংলা পোর্ট, চট্টগ্রাম পোর্ট বা জাতীয় অর্থনৈতিক অগ্রগতি, উন্নয়ন, প্রবৃদ্ধি, জাতীয় রাজস্ব আয় এক কথায় বলতে গেলে আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে নতুন প্রাণের সঞ্চার করবে এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাবে। যার সুফল আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পাবে।
মুন্সিগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, পদ্মা সেতু আজ আর স্বপ্ন নয়। বাস্তবতা। স্বপ্নের বাস্তবায়ন। দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের একুশটি জেলার জনগণের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ও দাবি ছিল পদ্মা সেতুর। বঙ্গবন্ধুরকন্যা শেখ হাসিনাও বঙ্গবন্ধুর মতো একজন ভিশনারি লিডার। তিনি পদ্মা নদীর ওপর সেতুর শুধু স্বপ্নই দেখেননি তার আজ বাস্তব রুপ দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ জনগণের দল। জনতা আওয়ামী লীগকে ভালোবাসে। তাই আমি মনে করি, আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভোট আরও বাড়বে।
সাবেক ছাত্রনেতা ও আওয়ামী লীগ নেতা এস এম মাহতাব উদ্দিন কল্লোল বলেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসিক ভাষণের অংশ ‘আর কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না’ এই অংশটুকুর যথার্থতা রেখেছেন। তিনি দেশি-বিদেশি সকল ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে সাধারণ মানুষের কল্যাণে এককভাবে সিদ্ধান্ত না নিলে আজকে পদ্মা সেতু হতো না৷ অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সরকারে ছিলো বলেই পদ্মা সেতু নির্মিত হয়েছে। বিএনপি বা অন্য কোন দলের সক্ষমতা নেই এভাবে সাহসিকতার সাথে পদ্মা সেতুর কাজ করার। কারন তারা কখনোই দেশের কল্যাণ কামনা করে না। তিনি বলেন, আমি দেশের এবং মুন্সিগঞ্জের সকল আপামর জনসাধারণ কে আহবান জানাবো আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রতি তাদের সমর্থন অব্যাহত রাখার।
মুন্সিগঞ্জ জেলা যুব মহিলা লীগের আহবায়ক মোরশেদা বেগম লিপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারনেই পদ্মা সেতু হয়েছে। তিনি পদ্মা সেতুর স্বপ্নদ্রষ্টা। তিনি মানুষকে উন্নয়নের স্বপ্ন দেখান এবং তা বাস্তবায়ন করেন। এ কারনেই সাধারণ মানুষ আওয়ামী লীগের পক্ষে, উন্নয়নের পক্ষে।
মুন্সিগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আল মাহমুদ বাবু বলেন, বিশ্বব্যাংক যখন আমাদের এই পদ্মা সেতুর বাস্তবায়নে অর্থলগ্নি থেকে সরে দাড়ায় তখন আওয়ামী লীগ সরকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন করে। বাঙালি বীরের জাতি। আগামী নির্বাচনে পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের এই সুফলের হাত ধরে আমরা নির্বাচনী বৈতরণি পার হবো।
মুন্সিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক সোহানা তাহমিনা বলেন, স্বপ্নের পদ্মা সেতু কিন্তু এভাবেই বলা হয় না, বাংলাদেশের কোটি মানুষের স্বপ্ন এই পদ্মা সেতুর সাথে জড়িত। এটা অনেক বড় একটা মাইলফলক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় মনোবল ও সাহসিকতার মাধ্যমে পদ্মা সেতুর কাজ আজ সফলভাবে শেষের পথে। অনেক বড় মহৎ উদ্দেশ্য ও সততা না থাকলে এটা বাস্তবায়ন করা অসম্ভব হয়ে যেত। এজন্য এটা আওয়ামী লীগের জন্য বিরাট সুফল বয়ে আনবে। সামনে যেহেতু নির্বাচন আমার মনে হয় মানুষ আওয়ামী লীগের বাইরে যাবে না। সাধারণ মানুষও উন্নয়নের জন্য শেখ হাসিনাকে নৌকায় ভোট দিবে।
মুন্সিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল মৃধা বলেন, পদ্মার বুকে মাথা উঁচু করে কেবল সেতুই দাঁড়ায়নি, বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। মহান সৃষ্টি কর্তা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য। বিশ্বব্যাংক ও ইউনুস গংদের শত ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতির বহু কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের পদ্মাসেতু আজ বাস্তব। জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন অগ্রগতির বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আগামী নির্বাচনেও আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনবে সাধারণ মানুষ।