মুন্সিগঞ্জ, ২৭ নভেম্বর, ২০২০, বিশেষ প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
আজ পদ্মা সেতুতে বসেছে ৩৯ তম স্প্যান। এর মধ্য দিয়ে সেতুর ৫ হাজার ৮৫০ মিটার অংশ দৃশ্যমান হয়েছে। আর মাত্র দুটি স্প্যান বসলেই পদ্মা সেতু পুুরোপুরি দৃশ্যমান হয়ে যাবে।
সেতুর ৩৮তম স্প্যান বসানোর ৬দিনের মাথায় আজ সেতুতে বসানো হয় ৩৯তম স্প্যান “টু-ডি।
শুক্রবার বেলা ১২টা ২০মিনিটে সেতুর মুন্সিগঞ্জের মাওয়া অংশে ১০ ও ১১ পিয়ারে বসানো হয় স্প্যানটি।
চলতি নভেম্বর মাসে এনিয়ে সেতুতে মোট ৪টি স্প্যান বাসানোর কাজ সম্ভব হলো। ৬.১৫ কিলোমিটার মূল সেতুর মোট ৪১ টি স্প্যানের মধ্যে বাকি রইলো আর মাত্র ২টি স্প্যান বসানোর কাজ।
পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূলসেতু) দেওয়ান আব্দুল কাদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সকাল ৯ টা ১৫ মিনিটে কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ভাসমান ক্রেণ তিয়াইন-ই ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৩৭ তম স্প্যানটি নিয়ে নির্ধারিত পিয়ারের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে দেড় কিলোমিটার পথ পারি দিয়ে বেলা সাড়ে ১০টার দিকে নির্ধারিত পিয়ার দুটির কাছে পৌছে স্প্যানবাহী ক্রেণ। পরবর্তী প্রক্রিয়ায় নোঙর ও কারিগরি কাজ সম্পূর্ন করতে লাগে আরো ৩ ঘন্টা।
বেলা ১২টা ২০মিনিটে নির্ধারিত পিয়ার দুটির উপরে ভূমিকম্প সহনশীল বিয়ারিংয়ে স্প্যানটি বসানো হয়। ৩৯তম স্প্যানটি বসে যাওয়ার পরে সেতুতে বাকি থাকলো আর মাত্র ২টি স্প্যান।
ডিসেম্বর মাসে ১১ ও ১২ নং পিয়ারে ৪০তম স্প্যান ‘২-ই’ ও ১২ ও ১৩ নম্বর পিয়ারে ৪১তম স্প্যান স্প্যান ‘২-এফ’ বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে প্রকৌশলীদের।
এদিকে স্প্যান বসানো ছাড়াও অন্যান্য কাজও এগিয়ে চলছে। এর মধ্যে সেতুতে ১ হাজার ৮৪৮ টি রেলওয়ে ও ১ হাজার ২৩৮ টি রোডওয়ে স্ল্যাব বসানো হয়েছে।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হয় ৩৯টি স্প্যান। এতে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর ৫হাজার ৮৫০ মিটার অংশ। ৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে সব কটি পিয়ার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে।
মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর আগামী ২০২১ সালেই খুলে দেয়া হবে।