মুন্সিগঞ্জ, ৩ মে, ২০২১, বিশেষ প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া ঘাট থেকে বেশ কয়েকদিন ধরেই চলছিলো স্পিডবোট। সেই স্পিডবোটে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে পদ্মা পার হচ্ছিলেন যাত্রীরা। বিষয়টি একাধিকবার প্রশাসনের নজরে আনলেও অজানা কারনে প্রশাসনের কোন উদ্যোগ দেখা যায়নি।
এর মধ্যেই আজ সোমবার (৩ মে) সকালে ঘটে গেলো ভয়াবহ দূর্ঘটনা। প্রাণ গেলো অন্তত ২৬ জনের। জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে অন্তত ৫ জনকে। দূর্ঘটনার শীকার কোন যাত্রীরই ছিলো না লাইফ জ্যাকেট। লকডাউনে গনপরিবহন বন্ধ থাকার নির্দেশনায় শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে লঞ্চ ও স্পীডবোট চলাচল বন্ধ থাকার নির্দেশনা ছিলো।
মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসাদুজ্জামান জানান, মাদারীপুরের শিবচরে থেমে থাকা বালুবোঝাই বাল্কহেডে স্পিডবোটের ধাক্কায় এখন পর্যন্ত ২৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ২৪ জনের লাশ নদীর পাড়ে রয়েছে। দু’জন হাসপাতালে নেয়ার পর মারা যাওয়ায় সেখানেই তাদের লাশ রাখা হয়েছে।
এ ঘটনায় প্রত্যেক নিহতের স্বজনকে ২০ হাজার টাকা করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে মাদারীপুর জেলা প্রশাসন। এছাড়া এ ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। মাদারীপুরের জেলা প্রশাসন ড. রহিমা খাতুন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিরাজ হোসেন জানান, শিমুলিয়া থেকে সোমবার সকাল পৌনে ৭টায় স্পিডবোটটি ছেড়ে আসে। এ সময় কাঁঠালবাড়ীর পুরাতন ঘাটে থেমে থাকা বালুবোঝাই একটি বাল্কহেডে ধাক্কা দিয়ে ডুবে যায় স্পিডবোটটি। এ সময় সব যাত্রী পানিতে পড়ে যান। পরে নদী থেকে একে একে ২৪টি লাশ উদ্ধার করা হয়। ৬ জনকে জীবিত উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে আরও দুজনের মৃত্যু হয়।
ফায়ার সার্ভিসের বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চলের সহকারী পরিচালক নজরুল ইসলাম জানান, স্পিডবোটটির বেপরোয়া গতির কারণে ঘাটের কাছে এসে আর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেনি। এ সময় ঘাটে নোঙর করে রাখা একটি বাল্কহেডের ওপর আছড়ে পড়ে স্পিডবোটটি। মূলত দ্রুত গতির কারণেই এত বেশি হতাহত হয়েছে বলে জানান তিনি।
মাওয়া নৌ পুলিশের ইনচার্জ সিরাজুল কবির জানান, লকডাউনে গনপরিবহন বন্ধ থাকার নির্দেশনায় থাকলে সে নিয়ম উপেক্ষা করে অবৈধভাবে স্পীডবোটটি চলছিলো। কখন কোন স্থান হতে ছেড়ে গেছে সে বিষয়টি জানি না আমি।